আজ সোমবার | ৫ মে ২০২৫ | ২২ বৈশাখ ১৪৩২ | ৬ জিলকদ ১৪৪৬ | রাত ১০:৪৮

বন্দরে মধ্যযুগের স্থাপনার অনন্য নিদর্শন শাহী মসজিদ

ডান্ডিবার্তা | ০৫ মে, ২০২৫ | ৯:১২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
শীতলক্ষ্যা নদীর প‚র্ব তীরে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে অবস্থিত বন্দর শাহি মসজিদ। মধ্যযুগের স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন এই মসজিদ। কালো ব্যাসেল্ট পাথরের মসজিদের গায়ে লাগানো শিলালিপিতে মসজিদের নির্মাতা ও নির্মাণকাল সম্পর্কে জানা যায়, ১৪৮১-৮৮ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান জালাল উদ্দিন ফতেহ শাহের রাজত্বকালে মালিক আল মুয়াজ্জেম বাবা সালেহ মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। ১৯২০ সালের ২৬ নভেম্বর প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তর মসজিদটি সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত প্রাচীন এই মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেছেন। মসজিদটিতে স্থানসংকুলান না হওয়ায় প‚র্ব দিকে স্থানীয় উদ্যোগে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য বারান্দা নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ঝুঁকির কারণে ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ পাশে নতুন তিনতলা মসজিদ নির্মাণ করা হলে প্রাচীন মসজিদটিতে নামাজ পড়া বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৫৫০ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি দেখতে দ‚রদ‚রান্ত থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ বহু মানুষ আসেন। চুন-সুরকি দিয়ে ইটের তৈরি বর্গাকার এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ এটি। মসজিদের চার কোণে চারটি অষ্টভুজাকৃতি বুরুজ এবং তার ওপর ছত্রী আছে। চার কাতারে প্রাচীন মসজিদটিতে একসঙ্গে ৬০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। বর্তমানে নতুন মসজিদে একসঙ্গে ৫০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। ৩৪ বছর ধরে বন্দর শাহি মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. মনিরুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনায়। তিনি বলেন, নিখুঁত হাতে বন্দর শাহি মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মুসল্লিরা প্রাচীন এই মসজিদে নামাজ আদায় করতেন। মসজিদে শীতের সময় গরম এবং গরমের সময় ঠান্ডা অনুভব হতো। ছোটবেলায় বন্দর শাহি মসজিদে নামাজ আদায় করতেন ৬৮ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, এই মসজিদ ছাড়া আশপাশে আর কোনো মসজিদ ছিল না। তিনি ও তাঁর বাপ-দাদারা এই মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন। ‘নারায়ণগঞ্জে মধ্যযুগের মুসলিম স্থাপত্য’ নিয়ে গবেষণাধর্মী বই লিখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কামরুন নেছা খন্দকার। তিনি তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেন, মসজিদে স্থাপত্যের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো গম্বুজ। বন্দর শাহি মসজিদের একক গম্বুজ সুলতানি রীতির ব্যাপক প্রচলিত স্বকীয়তাকেই তুলে ধরেছে। চার বছর ধরে মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন মুফতি সালমান রফিকি। তিনি বলেন, প্রাচীন এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে না পারায় মুসল্লিদের মনে অনেক কষ্ট। প্রতিদিন না হোক, প্রতি শুক্রবার অন্তত জুমার নামাজটা আদায় করার সুযোগ দেওয়ার দাবি তাঁর। সুলতানি ও মোগল আমলে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বন্দর। তখন এ মসজিদটি নির্মিত হয়। বর্গাকারে নির্মিত এই মসজিদের প‚র্ব দিকে দেয়ালে তিনটি এবং উত্তর-দক্ষিণ দিকের দেয়ালে একটি করে প্রবেশপথ। মসজিদটি খন্দকার মসজিদ নামেও পরিচিত। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান বলেন, পানামসহ নারায়ণগঞ্জের অনেকগুলো প্রতœতাত্তি¡ক স্থাপনার সংস্কারকাজ করা হয়েছে, এখনো করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে অর্থের সংকুলান হলে বন্দর শাহি মসজিদটি সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা