আজ বৃহস্পতিবার | ৮ মে ২০২৫ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ | ৯ জিলকদ ১৪৪৬ | রাত ১২:২৪

শিমরাইলে হেফাজত-পুলিশ সংঘাতের খেসারত দিয়েছে বিএনপি

ডান্ডিবার্তা | ০৭ মে, ২০২৫ | ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
২০১৩ সালের ৬ মে নারায়ণগঞ্জের শিমরাইলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হেফাজতে ইসলাম, স্থানীয় লোকজন ও হেফাজত লেবাসে থাকা জামায়াত শিবিরের ক্যাডারদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে টানা সাড়ে ৫ ঘণ্টার ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত ১৪ জন নিহত হয় যাদের মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ২ জন সদস্য ও পুলিশের ২জন সদস্য ছিল। ওইসব ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁয়ে ১৭টি মামলা হয়েছিল। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের ওইসব ঘটনার পর যেসব হেফাজত নেতা মামলার আসামী হন তারা পরবর্তীতে নানাভাবে মিশে যান ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে। কেউ বা শামীম ওসমানের ছোট ভাই আবার কেউ বড় ভাই সেজে ফায়দা নেন। কিন্তু বিপরীতে বিএনপি নেতাদের ধুঁকতে হয়। জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৫মে ঢাকাতে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ ও রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিবর্ষণের পরদিন ৬ মে উত্তপ্ত ছিল রাজধানীতে প্রবেশপথ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ওইদিন ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় মাদানী নগর মাদ্রাসায় অভিযান চালাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মাদ্রাসার ছাত্র, হেফাজতের কর্মী ও এলাকাবাসী। সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কাঁচপুর থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত সংঘর্ষের সময়ে এ তিন কিলোমিটার এলাকায় শুধু শোনা গিয়েছিল গুলির মুহুর্মুহু শব্দ। বিরামহীনভাবে শব্দে এলাকায় দেখা দেয় তীব্র আতঙ্ক। সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলা বিরামহীন এ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় অনেকে। তাদের লাশ দীর্ঘক্ষণ পড়ে ছিল মহাসড়কের উপরেই। প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে দু’টি লেনের অন্তত ৩০টি গাড়িতে আগুন জলছিল। এর মধ্যে ছিল বিজিবি ও পুলিশের গাড়িও। বিভিন্ন যানবাহনের গাড়িও ছিল ভাংচুর অবস্থায়। সড়কের ৪০-৪৫টি স্থানে টায়ার জ্বলছিল আগুন। সড়কের অনেক স্থানে বাশ, ইটপাটকেল ও রড ফেলে রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে এক পর্যায়ে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটাতে থাকে লোকজন। এতে পুলিশ ও বিজিবির অন্তত ৫০ সদস্য গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে দ্রæত শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, ১০০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা নেয়ার পথে ৩জনের মৃত্যু ঘটে। নিহত বিজিবি সদস্য হলেন শাহ আলম (৪০), পুলিশের নায়েক ফিরোজ (৩৫) ও কনস্টেবল জাকারিয়া (২৮)। পরে মারা যান বিজিবির সিপাহী লাভলু। ওই তান্ডবের ঘটনায় ১৭টি মামলার মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে ১১টি ও সোনারগাঁও থানায় ৬টি মামলা হয়। সবগুলো মামলার চার্জশীট আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। ওই সকল মামলায় বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন হেফাজত ও বিএনপি নেতারা। ওই ১৭টি মামলাতে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত বর্তমানে তৃনমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির, সাবেক সভাপতি আহবায়ক সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, বিএনপি থেকে বহিস্কৃত এটিএম কামাল, মহানগর যুবদলের সাবেক আহবায়ক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল হাই রাজু, জেলা বিএনপির আহবায়ক মামুন মাহমুদ, সোনারগাঁ থানা বিএনপির খন্দকার আবু জাফর, সভাপতি আজাহারুল ইসলাম মান্নান, শহিদুর রহমান স্বপন, বিএনপি নেতা শাহজাহান মেম্বার, বজলুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব সালাউদ্দীন সালু, ছাত্রদল নেতা ওমর ফারুক টিটু, ওসমান গনি রিতু সহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া জেলা হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা আব্দুল কাদির, মুফতি মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা ইব্রাহীম, মাওলানা আবু সায়েম খান, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, মাওলানা মফিজুর রহমান, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানসহ হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকেও মামলায় আসামী করা হয়। তবে পরবর্তীতে বেশীরভাগ মামলার চার্জশীট থেকেই হেফাজতের শীর্ষ কয়েকজন নেতার নাম বাদ দেয়া হয়েছিল।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা