আজ শুক্রবার | ৮ আগস্ট ২০২৫ | ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৩ সফর ১৪৪৭ | দুপুর ১২:০৫

বলয় রাজনীতিতে পিছিয়ে যাচ্ছে বিএনপি

ডান্ডিবার্তা | ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ | ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপি চাঙ্গা থাকলেও বলয় ভিত্তিক রাজনীতি করায় তারা এগিয়ে যেতে পারছে না। দিনি দিন বিএনপি পিছিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে নেই কোন হামলা, মামলা বা গ্রেপ্তারের ভয়। প্রতিপক্ষবিহীন অনুক‚ল পরিবেশ পেয়ে এখন নির্ভয়ে রাজনীতির মাঠে রয়েছেন জেলা ও মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় বা জেলা ও মহানগর কেন্দ্রিক বিভিন্ন সময় ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে যার যার মতো করে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে পছন্দের নেতার নেতৃত্বে বিশাল শোডাউন দিয়ে বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে যা বিগত দিনে স্বপ্নের মতো ছিলো। এদিকে বিএনপিসহ দেশের বিরোধী দলগুলোর দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার তোপের মুখে দেশ ছাড়েন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। যাকে ঘিরে তাদের পান্ডারা ও কেউ জেলা ছেড়ে আত্মগোপনে আবার কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় আওয়ামী শূন্য থাকায় বর্তমানে বিএনপি দ্ব›েদ্ব জড়াচ্ছে বিএনপিরই সাথে। সেইসঙ্গে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল (গ্রæপিং)। তাছাড়া বিগত দিনে ও গ্রæপিংয়ের কবলে পরে রাজনীতিকে হ-য-ব-র-ল অবস্থায় পরিণত করেছিলেন বিএনপি। যাকে ঘিরে গত কয়েক ট্রাম্পে বিশাল বিশাল আন্দোলন হলেও তার কোন প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি রাজনীতিতে। কিন্তু পটপরিবর্তনের পর ফের বিএনপির গ্রæপিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার প্রভাব শুধু জেলা, মহানগর বা থানা কেন্দ্রিক সমীবদ্ধ নয় এটা ছড়িয়ে পরেছে ওয়ার্ড-ইউনিয়ন জুড়ে। বর্তমানে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩/৪টি করে গ্রæপ রয়েছে যারা বিএনপির অমুক-তমুক ভাইয়ের লোক হিসেবে পরিচিত। এদিকে বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁত করে যারা রাজনীতি টিকিয়ে রেখেছিলেন ও যারা আন্দোলন সংগ্রামে জীবনের মায়া ত্যাগ করে মাঠে ছিলেন এদের মধ্যে সেই হাইব্রিড যারা আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁত করে মোটা তাজা হয়েছেন এরাই বর্তমানে বনে যাচ্ছেন বড় নেতা। তাছাড়া বিএনপির কিছু কথিত নেতারা হাইকামান্ডের কথা অমান্য করে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীদের পাশে দাড়াচ্ছে আবার অনেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভিন্ন্ পদে পদায়ন করছেন, অনেকে সুবিধা দিচ্ছেন, সুবিধা নিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির মাঠে এখন বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে বিএনপিই। জেলা ও মহানগর বিএনপির বিভিন্ন উপজেলায় একাধিকভাবে বিভক্ত হয়ে কর্মসূচি পালন করছেন বিভিন্ন নেতার অনুসারীরা। ফলে দিন যতই গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে বিভাজন। এদিকে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার সাথে কয়েক দফায় আলোচনা করলে ও প্রথমমতো সম্ভাব্য তারিখ দেওয়া হয়েছিলো চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস। বিএনপির মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ জানতে চাইলে তিনি ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে বললে তার কথায় সন্তুষ্ট হয়নি বিএনপির হাইকামান্ড। যাকে ঘিরে দ্রæত নির্বাচনের দাবিতে নতুন কর্মসূচি বা ফের আন্দোলন নামতে পারে বিএনপি সেই আলোচনা করলে ও বর্তমানে দলের মধ্যে যে গ্রæপিং বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে যা বিএনপির জনপ্রিয়তাকে ধ্বংস করবে। এমতা অবস্থায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আসছে না বলে দাবি অনেকের। এদিকে সাধারণ ব্যবসায়ী ও জনগণের অভিযোগ বিগত আওয়ামী লীগ আমলে নারায়ণগঞ্জে এক নেতার কথায় চললে ও বর্তমানে এক বিষয়ে ১০ নেতার দরবারে যেতে হয়। আবার ১০ জনের ১০ ধরনের বিচার ১০ ধরনের চাহিদা থাকে। কেউ কাউর কথা মানছে না সে বলে অমুক ভাই পাঠাইছে সে বলে তমুক ভাই পাঠাইছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে নানা কর্মকান্ডে বিএনপিতে নাখোশ হয়ে উঠছে বিএনপির তৃনমূলের কর্মী ও সাধারণ জনগণ। এদিকে জানা গেছে, গত ১৭ ধরে ক্ষমতার বাইরে রয়েছে বিএনপি। এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা মামলা-হামলায় নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েন। অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এরই জেরে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার জনরোষে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নিপীড়িত নেতাকর্মীরা ‘আলহাদুলিল্লাহ’ নিজ বাসায় থাকতে ও নিজের থাকা ব্যবসা বানিজ্যেতে মন দিতে শুরু করেন। এমতা অবস্থায় বিএনপির কিছু কথিত মহল মিথ্যা ও বানোয়াটভাবে বিএনপির না বিক্রি করে ১৭ বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে এবং এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে বিভিন্ন এলাকায় মহড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পকারখানায় নিজেদের অবস্থান জানান দিতে থাকেন। সেই ক্ষেত্রে অনেকে অনেক কিছু দখল ও করে ফেলে যে যার মতো খেয়ে যাচ্ছেন। এভাবে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলে ও ধীরে ধীরে ফের গ্রæপিংয়ের রাজনীতি শুরু হয় বিএনপিতে। এদিকে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের পর থেকেই দুই ব্যানারে দুই গ্রæপ রয়েছে। অন্যদিকে খন্দকার পরিবার একটি গ্রæপ হয়ে মহানগরের ব্যানার ব্যাবহার করে থাকেন। আর বর্তমানে কারামুক্ত জাকির খান তিনি ও মহানগর বিএনপির ব্যানারে আগামীতে রাজনীতি করতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তা ছাড়া বর্তমানে জাকির খানের ছায়াতলে যুবদল, শ্রমিক দল, ছাত্রদল, বিএনপির একাংশ, মৎস্যজীবি দল, জাসাস, প্রজন্মদলসহ জেলা ও মহানগরের আওতাধীন বিভিন্ন থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বর্তমানে জাকির খানকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে তার সাথে একত্মতা করছেন। অন্য দিকে জেলা বিএনপির বর্তমানে ৩/৪ গ্রæপে চলছে। এর বাহিরে ও জেলা বিএনপির নামে বেনামে একাধিক গ্রæপ রয়েছে। তা ছাড়া ফতুল্লা থানা বিএনপির ৪ গ্রæপ, সোনারগাঁ থানা বিএনপির ২ গ্রæপ, আড়াইহাজারে ৪ গ্রæপ, রূপগঞ্জে ৩ গ্রæপ, বন্দর উপজেলায় ২ গ্রæপ, বন্দর থানা ২ গ্রæপ, সিদ্ধিরগঞ্জে ৩ গ্রæপ, সদরে দুই গ্রæপ। একইভাবে এমন গ্রæপের রাজনীতি ওয়ার্ড-ইউনিয়নে ছড়িয়ে পরেছে। এদিকে শুধু তাই নয় বর্তমানে প্রতিটি থানায় বিএনপির পাশাপাশি যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক, ছাত্রদল, শ্রমিক দলও গ্রæপ বেধেছে। যাদের মধ্যে অনেকেই মূল দল বিএনপির নেতাকর্মীদেরও পাত্তা দেয় না। এদিকে বর্তমানে বিএনপি যেহেতু নির্বাচনমুখী অবস্থায় রয়েছে সেই ক্ষেত্রে বিএনপিকে বিগত দিনের গ্রæপিংয়ের রাজনীতি ভূলে আগে সহনশীল রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ হতে হবে। তা না হলে সাধারণ জনগণের আস্থার এই দল অনাস্থায় পরিণত হচ্ছে। যাকে ঘিরে গ্রপিংয়ে নড়বড়ে হয়ে পরেছে বিএনপি। বর্তমানে আরেক গ্রæপিংয়ে যেতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা