আজ শুক্রবার | ৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ | ১০ জিলকদ ১৪৪৬ | সকাল ৯:০৮

জুলাই আন্দোলনে অনেকের ভাগ্য বদল

ডান্ডিবার্তা | ০৮ মে, ২০২৫ | ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাসে পুরোদমে ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীদের। ইতিমধ্যে খালি মাঠে থাকা নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতাকর্মীদের কেউ কেউ আঙ্গুল ফুলে হয়ে গেছেন কলাগাছ। আলাদিনের চেরাগের মতোই কয়েক মাসের ব্যবধানের কেউ কেউ হয়েছেন গাড়ি ও বাড়ির মালিক। এদিকে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবকিছুই এখন বিএনপির দখলে। নগরীর হাট-বাজার, ঘাট, বাস টার্মিনাল শুধু নয়, বিভিন্ন মালিক সমিতির কমিটি, চেম্বার অব কমার্স, ইয়ার্ন মাচেন্ট এসোসিয়েশন, ট্রাক স্ট্যান্ড, এমনকি বিসিক শিল্পনগরী, বালুমহাল, ড্রেজিংয়ের ব্যবসা ও থ্রি হুইলার স্ট্যান্ড, টেন্ডারবাজি, সরকারি দপ্তর নিয়ন্ত্রণ, থানা নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ স্ট্যান্ড, ফুটপাত, পানি সরবারহ, সরকারি জায়গায় দোকান, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন উপজেলার সকল টেন্ডার। এছাড়া চারপাশের জানা অজানা সবই বর্তমানে এককভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে গত ৯ মাসে শীর্ষ পর্যায়ের মূলদল বিএনপি সহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পদে থাকা নেতাদের অনেকেই গাড়ি ও বাড়ি, ব্যবসা-বানিজ্যেসহ বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। নেতারা উচ্চ বিলাসী জীবন যাপন শুরু করছেন। নেতারা দামি গাড়ি হাঁকিয়ে চলেন। ঞড়ুড়ঃধ ঘড়ধয ঝও ডঢই ঐুনৎরফ নষধপশ সাদা-কালো। আবার আরো বহু ব্রান্ডের গাড়ি। এছাড়া ও বিএনপির থানার সভাপতিরা ও পটরিবর্তনের পরপরই কিনেছেন কোটি টাকার গাড়ি। কিনছেন বড় বড় কয়েকটি ফ্লাট, টোল প্লাজার টেন্ডার, এমনভাবে বৈধ-অবৈধ প্রন্থায় অর্থ সম্পদের মালিক হলেও তারা আপাতত নিরব ভূমিকায় রয়েছেন। বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক হলেও সেটা আপাতত প্রকাশ করছেন না। নিজেদের পদ-পদবী টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সময় সুযোগ অনুযায়ী গাড়ি বাড়ির মালিক হবেন। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন যাদের নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে বড় বড় শিল্প কারখানাগুলো এক এক জনের নিয়ন্ত্রণে ১০ থেকে ১২ টি করে গার্মেন্টস। সেখানে নেতারা মালামালসহ ওয়স্টিজ মালামাল, নাস্তা বাণিজ্যেসহ বহু কর্মকাÐ চালিয়ে বনে যাচ্ছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। এদিকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে জানা যায়, বিএনপির বহু নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের দোসরদের পূর্নবাসন ও এলাকায় থাকা, ব্যবসা বানিজ্যে দেখা শোনা এর বিনিময়ে ওই সকল নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করছেন। এ দিকে বিগত দিনে বিএনপির এমনও অনেক নেতা রয়েছেন যারা আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকাকালিন সময়ে বিভিন্ন ভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। বিভিন্নভাবে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে পরিশোধ করতে না পারায় দেউলিয়া হয়ে পড়েছিলেন। বর্তমানে তারা সেই দেউলিয়া কাটিয়ে উঠে বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্তের মালিক হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে শহরের এলিট শ্রেণির ক্লাবের সদস্য হওয়ার জন্য তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছেন আবার অনেকে যাচ্ছেন ব্যবসা বড় বড় সংগঠনে মিশে। সূত্র বলছে, টানা তিন মেয়াদ ধরে ক্ষমতা শেষ চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছিলো আওয়ামী লীগ। যদিও চতুর্থ মেয়াদে এক বছরের বেশি ক্ষমতা স্থায়ী হয়নি। তবে এই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরেই তাদের দখলদারিত্ব বিরাজ ছিলো। এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোনো প্রভাব ছিলো না। এরই মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর এই পতনের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে গেলেও ক্ষমতায় থাকাকালিন সময়ে তাদের বিভিন্ন অপকর্ম জনসাধারণের সামনে উঠে আসছে। সেই সাথে অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের এসকল অপকর্ম পুরোপুরি প্রকাশ হওয়ার আগেই তাদের অপকর্ম যেন ঢেকে যাচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্বারা। তাদের শাস্তি নিশ্চিত হওয়া আগেই বিএনপির নেতাকর্মীরা নুতন করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৯ মাসে বিএনপির নেতাকর্মীরা যেসকল অপকর্ম করেছেন তাতেই যেন আড়াল হয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অপকর্ম। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিএনপির নেতাকর্মীদের অপকর্ম নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন যাকে ঘিরে বিগত দিনে আওয়ামী লীগের অপকর্মের আমলনামা ধীরে ধীরে ঢেকে যাচ্ছে। এর আগে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক নির্যাতন নীপিড়নের শিকার হয়েছেন। দিনের পর দিন মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে পরিবার পরিজন ছেড়ে দিন যাপন করতে হচ্ছে। সেই সাথে তারা আন্দোলন সংগ্রামেও অংশ নিতে পারতেন না। ব্যবসা বাণিজ্যেও নানাভাবেই বাধার শিকার হয়েছেন। সব মিলিয়ে তাদের যেন স্বাভাবিক জীবন যাপন ছিলো না। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন পুরো রূপে ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে বিএনপির। বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থাকা কয়েকজন নেতাকর্মীদের সাথে সা¤প্রতিক বিষয় নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে তারা বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর মাঠে থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি শুধু দলকে ভালোবাসি বলেই। কিন্তু আজকে পটপরিবর্তনের পর বিএনপির সকল নেতাদের হাতেই আলাদিনের তেরাগ কিন্তু আমরা এখনো বাসায় যেতে গাড়ি ভাড়া পাই না, এটা কেমন বিচার। বর্তমানে যারা পদ-পদবী নিয়ে বসে আছে সকলেই আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে সুপরিচিত বিগত আন্দোলন সংগ্রামে আওয়ামী লীগের এজেন্ট হিসেবেই এরাই কাজ করেছিলেন কিন্তু আজকে এরাই ভেনিফিশিয়ালী আছেন। অনেকে এমন টাকা কামিয়েছে যে আওয়ামী লীগের নেতাদের ও দেশের বাহিরে মোটা অংকের ভাগ পাঠাচ্ছেন বা দিয়ে আসছেন। কিন্তু নিজ দলের লোকেরা যে ক্ষুধার্ত সেটা দেখার সময় নেই। তা ছাড়া বর্তমানে হাট-ঘাটসহ বহু কিছুই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন বিএনপির বিগত দিনের নামধারী নেতারা। যারা বর্তমানে বড় নেতা হিসেবে নিজেদের জাহির করছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের জাতির নয় উপহার হলো বিএনপির কথিত নেতা ও সন্ত্রাসীদের।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা