আজ মঙ্গলবার | ১৩ মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ | ১৪ জিলকদ ১৪৪৬ | বিকাল ৫:২৩

ফতুল্লা পুলিশের সাফল্য একমাসে ১ কেজি গাজাঁ

ডান্ডিবার্তা | ১৩ মে, ২০২৫ | ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ফতুল্লা মডেল থানায় গত এপ্রিল মাসে মোট ৫৪টি মামলা হয়েছে যার মধ্যে মাদকের মামলা ১১টি। এর মধ্যে জিআর মামলায় ৬জন সাজাপ্রাপ্তকে গ্রেফতার এবং সিআর মামলার সাজাপ্রাপ্ত ১৩জনকে আটক করা হয়েছে। এপ্রিল মাসে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর পৃথক অভিযানে ১ কেজি ৬০ গ্রাম গাজাঁ, ৩২৮০পিস ইয়াবা, ১০ গ্রাম হেরোইন এবং ১০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। ফতুল্লা মডেল থানার মাসিক তথ্যে এগুলো জানা যায়। তবে মাদক অধ্যুষিত ফতুল্লা মডেল থানাধীন এলাকা হতে  একমাসে যৎসামান্য মাদক উদ্ধার যেন রীতিমত হাস্যকর বিষয়। ফতুল্লা মডেল থানার অধীনে ৫টি ইউনিয়ন এবং নাসিকের কিছু অংশ রয়েছে। তবে ফতুল্লা মডেল থানা এলাকায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি কতটা স্বাভাবিক তা স্থানীয় গনমাধ্যম খুললেই দেখা যায়। থানা এলাকাগুলো সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রির প্রবনতা। থানা পুলিশের নিরবতায় থানাধীন প্রতিটি পাড়া-মহল্লাগুলো প্রকাশ্যেই চলছে মাদক ব্যবসা। যার ফলে চুরি-ছিনতাই-কিশোরগ্যাংয়ের প্রবনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকটাই দুঃশ্চিন্তার মাঝেই বসবাস করছেন থানাধীন প্রতিটি পাড়া-মহল্লার সাধারন মানুষ। নিজেকে এবং পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে নিয়ে প্রায়শ দুঃশ্চিন্তায় কাটে অভিভাবকের। বিভিন্ন এলাকাতে বসবাসকারীতে মতে,পুলিশের নিরবতার কারনে মাদক যেন সমাজের কাছে একটি ক্যানসারে রুপ ধারন করেছে। যে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে ১২ বছর থেকে ৭০ বছরের বয়সীরা। তবে এ ক্যানসারে পিছিয়ে নেই বিভিন্ন বয়সী মেয়েরাও। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় প্রতিটি প্রকাশ্যে যে পরিমানে ইয়াবা-ফেন্সিডিল-গাজাঁ ও হেরোইন বিক্রি হচ্ছে আর ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর কর্তৃক এপ্রিল মাসে যে পরিমানে মাদক উদ্ধার করেছে তা যেন সাধারন মানুষের সাথে তামাশা করা ছাড়া কিছুইনা। তবে অনেকের মতে,ইতিপুর্বে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশের কাছে এর চেয়ে বেশী পরিমান মাদক থাকতো জব্দ হিসেবে। একমাসে এক কেজি ৬০ গ্রাম গাজাঁ উদ্ধার,৩২৮০ পিস ইয়াবা,১০ গ্রাম হোরোইন এবং ১০ লিটার দেশী মদ উদ্ধার এ যেন পুলিশের প্রতি সাধারন মানুষের হাসির বস্তু হিসেবে গন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফতুল্লা রেলষ্টেশন, দাপা ইদ্রাকপুর, জোড়পুল এলাকার অনেকে বলেন, এখানে প্রতিদিন কি পরিমানে গাজাঁ, ইয়াবা ও হোরোইন বিক্রি হচ্ছে তা বলা বাহুল্য। রেললাইন ও আশপাশ এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা মাদক বিক্রি হচ্ছে। ইসদাইর বাজার, রেললাইন, সস্তাপুর, মাসদাইর বাজার, গুদারাঘাট, ঘোষেরবাগ, বাড়ৈভোগ, দেওভোগ নুর মসজিদ ও আশপাশ এলাকাতেও প্রতিদিন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা মাদক, কাশিপুর, নরসিংপুর, ধর্মগঞ্জসহ আশপাশ এলাকায় প্রতিদিন প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাদক বিক্রি হচ্ছে যা সর্ম্পকে থানার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত কর্তারা অবগত রয়েছে। মাসদাইর লিচুবাগ এলাকায় মামুন ওরফে গোটা মামুনই প্রতিদিন প্রায় ৫শত বোতল ফেন্সিডিল বিক্রি করছে। প্রতিটি ফেন্সিডিলের মুল্য গড়ে ২৫০০ টাকা হলে তার বিক্রি ফেন্সিডিল থেকে কি পরিমান লভ্যাংশ করছে তা অজানার নয়। কাশিপুরের নরসিংপুওে প্রকাশ্যে ফেন্সিডিল বিক্রির সময় জনতার কাছে হাতে-নাতে ধরা খেলে পুলিশের চোখে যেন কোন মাদক বিক্রেতা নেই প্রতিটি পাড়া-মহল্লাগুলোতে। এক অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, থানাধীন প্রতিটি মাদক স্পট থেকে থানা পুলিশের নামে মোটা অংকের মাসোহারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। পুলিশের সোর্স, রাজনৈতিক দলের নেতা এবং বিশেষ পেশার নিয়ন্ত্রনে চলা বেশীরভাগ মাদক স্পটগুলো যেন একেবারেই নিরাপদ। কারন পাড়া-মহল্লাগুলোতে এখন পুলিশী তৎপরতা নেই। এসুযোগে মাদক বিক্রেতারা অলিগলিতে চেয়ার নিয়ে বসেই প্রকাশ্যে বিভিন্ন প্রকারের মাদক বিক্রি করছে। চোখে দেখলেও মুখে কিছু বলতে সাহস পায়না স্থানীয়র। কারন মাদক বিক্রেতাদের টাকার কাছে বিক্রিত রয়েছে অনেক সমাজপতি, পুলিশের কিছু অর্থলোভী সদস্য আর বিশেষ পেশার কর্তারা। বেশীরভাগ এলাকাবাসীর মতে, বর্তমানে প্রতিটি পাড়া-মহল্লাগুলোতে ছোট-বড় যে সকল অপরাধগুলো সংঘটিত হচ্ছে তার মুলে রয়েছে মাদক। মাদক বিক্রেতারা তাদের বিক্রিত মাদকের লভ্যাংশ দিয়ে দামী দামী অস্ত্র ক্রয়ের পাশাপাশি দেশীয় অস্ত্রের গোডাউন তৈরী করছেন। পুলিশের অভিযানে নাম শোনামাত্রই তারা ঝাপিয়ে পড়ে পুলিশসহ সাধারন মানুষের উপর। রমজান মাসে মাসদাইর রোকেয়া স্কুলের পাশে কসাই নাসিরের ছেলে সেলিমের মাদক স্পটে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অভিযান চালালেও সেখান থেকে আটক ৪ জনকে পুলিশের হ্যান্ডকাপসহ ছিনিয়ে নিয়ে যায় মাদক ব্যবসায়ী কসাই সেলিমের সদস্যরা। এ সেলিমের কাছে অত্যাধুনিক ৬.৪ বোরের দুটি পিস্তল রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। আর সেই দিনের ঘটনায় থানায় মামলা হলেও এখনও পর্যন্ত কোন ছিনিয়ে নেয়া আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে হ্যান্ডকাপগুলো নাকি একজন বিশেষ পেশার ব্যক্তির মাধ্যমে (সাথে কিছু উৎকোচ) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে এমনও গুঞ্জন রয়েছে পুরো মাসদাইর জুড়ে। যার ফলে হ্যান্ডকাপ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া একজন আসামীকেও গ্রেফতার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা থানা পুলিশ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কর্তাবাবুরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মাদক উদ্ধারে পুলিশের আন্তরিকতার অভাবের কারনে দিনের পর দিন পাড়া-মহল্লাগুলো যেন মাদকের আখড়ায় পরিনত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপর। প্রায় মহল্লাতে প্রাইমারী কিংবা হাই স্কুলের সামনেই প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে। অভিভাবক কিংবা স্কুলের শিক্ষকরা কিছু বলতে সাহস পায়না সন্তান কিংবা শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে। যার ফলে বিভিন্ন স্কুল কিংবা কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও জড়িয়ে পড়ছে মাদকের প্রতি। এর সকল দায়ভার পুলিশের উপর ছুড়ে দিচ্ছেন তারা। কারন পুলিশের অনুপস্থিতির কারনে মাদক নামক ক্যানসার প্রতিটি পাড়া-মহল্লাতে আক্রান্ত করে তুলেছে। ফতুল্লা মডেল থানাধীন প্রতিটি পাড়া-মহল্লাতে পুলিশী টহল ব্যবস্থার জোরদার এবং মাদক বিক্রি বন্ধ এবং মাদক বিক্রেতাদেরকে আইনের আওতায় নেয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক, র‌্যাব-১১ এবং ফতুল্লা মডেল থানা অফিসার ইনচার্জের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন সর্বস্তরের সাধারন মানুষ।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা