আজ শুক্রবার | ১৬ মে ২০২৫ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ১৭ জিলকদ ১৪৪৬ | রাত ২:১২

হতাশায় মহানগর যুবদলের তৃনমূল

ডান্ডিবার্তা | ১৫ মে, ২০২৫ | ৯:১২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের বর্তমান নেতৃত্ব তাদের পূর্বসূরিদের পথেই হাঁটছেন। আগের তিনটি কমিটি তাদের অধীনস্ত ইউনিট কমিটি গুলো দেই দিচ্ছি করে সময় পার করে দিয়েছিলেন। বর্তমান সজল-সাহেদের নেতৃত্বাধীন মহানগর যুবদলের আওতাধীন ইউনিট কমিটি কবে আলোর মুখ দেখবে, সে প্রশ্নের উত্তর নেই নেতাকর্মীদের কাছে। আর এ নিয়ে তীব্র হতাশা বিরাজ করছে তৃণমূলের মনে। তৃণমূল সূত্র প্রকাশ, মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটির ঘোষণার পরে তোড়জোড় শুরু হয় ইউনিট কমিটির গঠনের। মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল এবং সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ ঢাক ঢোল পিটিয়ে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করেন। উদ্দেশ্য ছিলো খুব দ্রæত ইউনিট কমিটি গঠন করা কিন্তু সেই কর্মী সভা কয়েকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে তার কার্যক্রম থমকে গেছে। এখন আর কোন কর্মীসভা হচ্ছে না, হয়নি কোন ইউনিট কমিটি গঠন। একটি রাজনৈতিক পরিচয়ের আশায় থাকা নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে তাই বিরাজ করছে রাজ্যের হতাশা। সূত্র জানায়, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি পেয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন যাবত তিনজন আর পাঁচজনের কমিটিতে আটকে ছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল। এবার মহানগর যুবদলের একটি পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি হওয়ায় মহানগর যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিট কমিটির নেতাকর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন এবার বুঝি তাদের একটা রাজনৈতিক পরিচয় মিলবে’। গত স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন কোনো পদ পদবি ছাড়াই। রাজপথের সেই ত্যাগী নেতাকর্মীরা তাই দ্রæততম সময়ের মধ্যে মহানগর যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন থানা, উপজেলা এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দাবি যা নিয়ে আসছিলেন আহবায়ক এবং সদস্য সচিবের কাছে কিন্তু তাদের সেই আহবানে সাড়া মিলছে না। নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পরপর তিনটি কমিটির নেতারা তাদের আওতাধীন কোনো ইউনিট কমিটি গঠন করতে পারেননি। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দের এই ব্যর্থতার কারনে রাজনৈতিক পরিচয় পাননি যুবদলের শত শত নেতাকর্মী। খোরশেদ-মন্তু কমিটি তিন বছর দায়িত্বে থেকেও ব্যর্থ হয়েছেন ইউনিট কমিটি দিতে। এরপর মন্তু-সজল কমিটিও ২ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন তারা পূর্বসূরিদের মতো ইউনিট কমিটি গঠনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। সর্বশেষ বর্তমান সজল-সাহেদ কমিটিরও দুই বছর হতে চললো, কমিটির দেখা পাননি মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা। গত তিন কমিটির নেতৃত্বে থাকা নেতাদের উদাসিনতা ও কমিটি বানিজ্যের কারনে তৃণমূল পর্যন্ত নেতৃত্বের বিস্তার ঘটাতে পারেননি মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা। তাছাড়া কোনো রাজনৈতিক পরিচয় না থাকার পরেও জীবন বাজি রেখে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন তারা। তাই অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন ইউনিট কমিটিগুলো ঘোষনার দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতায় রয়েছে সদর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং বন্দর উপজেলা ইউনিট। রয়েছে পাঁচটি ইউনিয়ন এবং সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি। এতগুলো কমিটির মধ্যে মাত্র দুটি ইউনিয়ন কমিটি ঘোষনা করেছে বর্তমান মহানগর কমিটির নেতারা। বাকি ইউনিটগুলোতে দীর্ঘদিন কোনো কমিটি নেই। মহানগর যুবদলের কমিটিতে বারবার রদবদল হলেও এসব ইউনিট কমিটির পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মনের আশা আর পূরণ হয়না। অনেক নেতাকর্মী হতাশ হয়ে যুবদলের রাজনীতি ছেড়ে বিএনপির মূল দলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে গেছেন। বাকি যারা দীর্ঘদিন যাবত একটি রাজনৈতিক পরিচয়ের আশায় রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তাদের সকলের একটাই দাবি আর তাহলো যত দ্রæত সম্ভব ইউনিট কমিটিগুলো গঠন করে সংগঠনকে আরো গতিশীল করা এবং দীর্ঘদিনের কমিটি খড়া ঘুচিয়ে তৃণমূলের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে দেয়া। কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ জানান, আমরা ইউনিট কমিটি গঠনের জন্যে কাজ করছি। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি কর্মী সম্মেলন করেছি। আমাদের এই প্রকৃয়া চলমান আছে। সেন্ট্রালের সাথেও আমাদের এই বিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন ইউনিট কমিটিগুলো গঠন করতে পারবো। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি, মমতাজ উদ্দিন মন্তুকে সাধারণ সম্পাদক, মনোয়ার হোসেন শোখনকে সহসভাপতি, সাগর প্রধানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রশিদুর রহমান রশোকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় পাঁচ মাস পর ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রæয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদ। ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর ঘোষনা করা হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সুপার ফাইভ আহবায়ক কমিটি। মমতাজউদ্দিন মন্তুকে আহবায়ক আর মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করে ঘোষনার প্রায় দুই বছর এই পাঁচজনেই আটকে ছিলো মহানগর যুবদল। এই সময়ের মধ্যে মহানগর যুবদল নিজেদের কমিটি পূর্নাঙ্গ করতে পারেনি, পারেনি কোনো ইউনিট কমিটিও ঘোষনা করতে। তাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ব্যানারে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে আসা নেতাকর্মীদের কারো কোনো পদ পদবী বা রাজনৈতিক পরিচয় ছিলো না। ২০২৩ সালের ২৯ আগষ্ট মনিরুল ইসলাম সজলকে আহবায়ক, সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব করে ঘোষনা করা হয় মহানগর যুবদলের তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি। এই কমিটিও গত প্রায় দুই বছরে ইউনিট কমিটিগুলি গঠন করতে পারেনি। এর ফলে নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই জীবন বাজি রেখে লড়াই করে গেছেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা