আজ সোমবার | ২ জুন ২০২৫ | ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ৫ জিলহজ ১৪৪৬ | রাত ১:১২

জাপানে পাঠানোর নাম করে আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও কাঁচপুরের রাজু

ডান্ডিবার্তা | ২৬ মে, ২০২৫ | ১২:২৭ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে জাপানে পাঠানোর নাম করে ২৬ জনের কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন রাজু আহাম্মদ ওরফে জাপানী রাজু (৩৯) নামে এক প্রতারক। রাজু নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের সোনাপুর এলাকার মোঃ জামানের ছেলে এবং সে যুবলীগের রাজনীতি করতো বলে জানা গেছে। যুবলীগের রাজনীতি করার সুবাদে প্রতারক জাপানী রাজু ইতিপূর্বেও বিদেশে পাঠানোর নাম করে অনেকের কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক অর্থ হাতিয়ে নিয়ে সরলমনা মানুষদেরকে সর্বশান্ত করে নিজে অঢেল অর্থের মালিক বনে গিয়ে কয়েকটি বাড়িসহ মালিক হয়েছেন বিপুল সহায় সম্পত্তির। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ও ভুক্তভোগী ২৬টি পরিবারের পক্ষ থেকে মোঃ হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে রাজু আহাম্মদ, তার স্ত্রী লুবনা খানম, তার সহযোগি সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্বপাড়ার বজলুর রহমান ও মনোয়ার হোসেন বিলটনকে বিবাদী করে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ঢাকায় ১টি মামলা দায়ের করেছেন। প্রতারক জাপানী রাজুর কাছ থেকে অর্থ ফেরত পেতে এবং তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে ভূক্তভোগী হাবিবুর রহমানের ছেলে আব্দুর রহমান বাদী হয়ে পুলিশের আইজি ও সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী হাবিবুর রহমান জানান, ‘কাঁচপুরের খাঁসপাড়ায় আমার একটি বাড়ী রয়েছে।সেখানে বসবাসরত অবস্থায় আমার সাথে কুতুবপুর এলাকার নুর হোসেন প্রধান নামে এক ব্যাক্তির সাথে পরিচয় হয়। উক্ত নুর হোসেন প্রধানের মাধ্যমে জাপান প্রসাবী রাজু আহমদ এর সাথে আমার পরিচয় হয়। সে গল্পের ফাঁকে আমাকে জানায় তার পরিবারের ১২ জন লোক স্থায়ীভাবে জাপান বসবাস করে। রাজু নিজেকে নুর হোসেনের ভাগিনা বলে পরিচয় দেয় এবং এর মধ্যে সোনাপুর এলাকায় তার নিজ দোকান মক্কা মদিনা ফার্নিচার মার্টে কয়েকবার বসি। একদিন কথা প্রসংগে আমি বললাম আমার ছেলেকে আমি স্টুডেন্ট ভিসায় জাপান পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। সে বলল আমি ওয়ার্ক পারমিটে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিবো। সবমিলিয়ে মোট ১২ লক্ষ টাকা দিতে হবে। যাওয়ার আগে দিতে হবে ৬ লক্ষ টাকা এবং জাপান পৌঁছার পর দিতে হবে অবশিষ্ট ৬ লক্ষ টাকা। টাকা জমা দেয়ার তিন মাস পরে আমার ছেলেকে ভিসা দিলো। তখন সে আমাকে বার বার জানায়, অন্য আরো কেউ জাপান যেতে চাইলে আমি যেন তাকে জানাই। এভাবে আমি আমার ছেলে ছাড়া আমার ভাতিজা এবং আমার অনেক আত্মীয়স্বজনসহ মোট ২৬ জনকে রাজি করাই, যাতে করে তাদের বেকারত্ব দূর হাবার পাশাপাশি দেশে রেমিটেন্স আসে এবং দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়। অধিকাংশ আত্মীয় স্বজন সুনামগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা, যাদের বেশির ভাগের স্বপ্ন ছিলো বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরার। জাপান যাওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল গত ২৭মার্চ রাত ১২ ঘটিকায় হংকং বিমানে। আমরা ২৬ জনের পরিবার সবাই ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্ত: বিমানবন্দরে যাই। যাওয়ার পর সকলের পাসপোর্ট, টিকেট ও ভিসা দেয়ার কথা বলে সবকিছু নিয়ে বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশনে ঢুকে যায় রাজু এবং সারারাত অপেক্ষা করার পরেও বিমানবন্দর থেকে সে বের না হওয়ায় আমরা টেনশনে পড়ে যাই। তাছাড়া অনেকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও সে কল রিসিভ করেনি এবং পরবর্তীতে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। এমতাবস্থায়, সারারাত তাকে না পেয়ে আমরা সকালে বাসায় চলে আসি এবং সকালে তার এলাকা সোনাপুর যাওয়ার পর জানতে পারলাম সে সেখানে নকল ভিসা বানিয়ে ইতোমধ্যে অনেক মানুষকে প্রতারিত করেছে। এলাকায় সামাজিক এবং রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদেরকে বিষয়টি অবহিত করার পর সবাই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরামর্শ প্রদান করেন এবং মামলার কপি নিয়ে তাদের কাছে গেলে তারা সামাজিকভাবে তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনে তার সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। বেশিরভাগ এলাকাবাসী এ কথাও বলেন যে, এ ধরণের প্রতারণা তার দীর্ঘদিনের অভ্যাস, এ কথা শোনার পর আমি তাৎক্ষনিকভাবে সোনারগাঁ থানায় ও আইজিপি বরাবর অভিযোগ করেছি। বিভিন্নভাবে মোট ২৬ জনের কাজ থেকে এ পর্যন্ত রাজু ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছে, যার বেশিরভাগ লেনদেন আমার মাধ্যমে চেক এবং নগদে হয়েছে। জাপান এম্বাসিতে কাজ করে বজলুর রহমান ও মনোয়ার হোসেন বিলটন তারা ডাচ বাংলা ব্যাংকের দুইটি চেক আমাকে দিয়েছে, যার পরিমাণ ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে সে নগদে, চেকে ও বিকাশের মাধ্যমে উপরোক্ত টাকা জাপান এম্বাসির ২ কর্মকর্তা বজলুর রহমান ও মনোয়ার হোসেনকে দিয়েছে বলে আমাকে জানায়। পরে আমরা জানতে পারি তার ফার্নিচারের দোকানে বসে এই ভূয়া ভিসার কাগজগুলো বানানো হয়েছে। বর্তমানে তার ফোনে কল দিলে সে ফোন রিসিভ করেনা। আমাদের সরলতার সুযোগে রাজু এমন একটি কাজ করেছে, যার দরুণ ২৬টি পরিবার আজ পথে বসে গেছে। প্রতারক রাজুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি আমাদের আড়াই কোটি টাকা তার কাছ থেকে ফেরত পেতে প্রশাসন আমাদেরকে সর্বাত্মক সহায়তা করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা