বসন্তের কোকিলরা নমিনেশন চায়!

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, ‘খেয়াল করছি, অনেক বিএনপি দাঁড়ায় গেছে। তাদের কোনো পদ নাই। যাদেরকে কখনো পাশে দেখি নাই, দল করে নাই। যারা বিএনপি থেকে যোজন যোজন দূরে থেকেছে, সামনে আসে নাই। আজ তারা বিএনপির কথা বলে, নমিনেশন চায়। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে অনুষ্ঠান করতে চায়, অনুষ্ঠান করেন। কিন্তু নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ৫ আগস্ট পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। ওই পর্যন্ত যারা পরীক্ষা দিয়েছে তারাই দলের কান্ডারি হবে, তারাই মেয়র, এমপি নির্বাচন করবে। তারাই বিএনপিকে নেতৃত্ব দিবে।’ তারা বিএনপিকে বিভক্ত করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উদ্দেশ্য ভালো না। আপনারা সুসময়ে এসেছেন, মধু খাওয়ার জন্য। বিএনপির আপনাদের ভক্ত হবে না। আমাদের নেতা যাকে নমিনেশন দিবে আমরা তার পক্ষে ঝাপিয়ে পরবো।’ গতকাল রবিবার দুপুরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সদর থানা বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির নাম করে বিভিন্ন লোকজন বিএনপির দূর্নাম করার চেষ্টা করছেন। বিএনপির নির্দিষ্ট নেতৃবৃন্দ আছে। বিএনপির নামে কেউ অন্যায়, অপরাধ করলে তার দায় দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। যারা অন্যায় করছে দল ইতিমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রয়োজনে পুলিশে দিচ্ছে। যারা বিএনপি করবেন, তাদের ন্যায় নিষ্ঠার সাথে করতে হবে। ন্যায়ের পক্ষে, জনগণের পক্ষে থাকতে হবে। চেইন অব কমান্ড মানতে হবে। এইটা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ। যারা নির্দেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিবে। আমরা জনগণের বন্ধু হয়ে পাশে থাকতে চাই, জনগণকে নিয়ে উৎপাদনের রাজনীতি করতে চাই। জনগণের বিরুদ্ধে যারা যাবে তারা বিএনপি স্থান পাবে না। বিএনপি করতে পারবে।’ নারায়ণগঞ্জকে একটি সুন্দর নগর হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘সাত খুন, গুম, নির্যাতন ছিল তা নারায়ণগঞ্জ থেকে উৎখাত করতে চাই। কোনো ব্যবযায়ীর কাছে বিএনপির নাম করে চাঁদা চাইতে যায় তাদের বেঁধে রাখেন। আমরা পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। কোনো অন্যায়কারী, চাঁদাবাজের জন্য বিএনপির বদনাম হোক তা হতে দিবো না।’ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এমন একজন ব্যক্তিত্ব যাকে ৪৪ বছর আগে হত্যা করা হলেও আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের মনকোঠায় স্বর্ণাক্ষরে তার নাম লেখা রয়েছে। বাংলাদেশ যে সময় বিপদে পরেছে ওই সময়ই ক্রাণকর্তা হিসেবে জিয়াউর রহমানের আবির্ভাব ঘটেছে। ১৯৭১ সালে যখন পশ্চিম পাকিস্তানিরা নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছিল ওই সময় শেখ মুজিব পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর হাতে ধরা দিয়ে কারাবন্দি হয়েছিল। এবং আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতে পলায়ন করে মোজমস্তি করছিল। যখন জাতিকে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন সময় পাড় করছিল তখন জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর একজন মেজর, বাহিনীর উচ্চ পদেও ছিলেন না। কিন্তু তার ছিল অসীম সাহস। জীবন, পরিবারের মায়া না করে উনি চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। গত ১৫ বছর তাকে মানুষের মন থেকে মুছে দেয়ার জন্য শেখ হাসিনা বহু চেষ্টা করেছে। রাষ্ট্রে কোটি কোটি টাকা খরচ করেও মানুষের মন থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছতে পারেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এমন একজন দেশ প্রেমিক ছিলেন, সততা ন্যায় নিষ্ঠা ও ভালোবাসার মাধ্যমে এইদেশের মানুষের মন জয় করেছিল। উনি দেশের ৬৮টি গ্রাম একপাশ থেকে ওপাশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। জনগণকে কৃষি বিপ্লবে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এই দেশকে একটি সুখি সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়ে তোলার জন্য যতদিন বেঁচে ছিলেন বাংলার প্রতিটি প্রান্তে ছুটেছেন, খাল খনন করেছেন। খাদ্য উৎপাদন তিনগুন করেছিলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সততা, দেশ প্রেম ও জনগণের প্রতি ভালোবাসা সেই ভালোবাসাকে বুকে ধারন করে এগিয়ে যেতে চাই। বিএনপিকে বাংলাদেশের মানুষের মনের মধ্যে রাখতে চাই।’ এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন খান, ফতেহ রেজা রিপন, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান প্রমুখ।