সাবেক এমপি গিয়াস যেভাবে পশুর হাটের ইজারা নেন!

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জে বিভিন্ন হাট বিএনপি নেতাকর্মীদের বঞ্চিতকরে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের বেতনভুক্ত কর্মচারী ও অনুগত লোকদের দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বলে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১,৩,৪,৫ ও ৭নং ওয়ার্ডের যেসব ইজারাদার রয়েছেন সকলেই এমপি গিয়াস উদ্দিনের অনুগত ব্যক্তি। বিএনপির অনেক নেতা কর্মীরা যারা কুরবানী পশুর হাটে ইজারায় সিডিউল জমা দিয়েছে তাদেরকে বঞ্চিত করে গিয়াস উদ্দিনের নির্দেশে বেশি টাকা দিয়ে তারই অনুগত লোকেরা গরুর হাট ইজারা বাগিয়ে নিয়েছেন। ৪নং ওয়ার্ড এর গরুর হাট কাসসাফ শপিং সেন্টারের ক্যাশিয়ার গোলাম মোস্তফা ও ৫নং ওয়ার্ডের গরুর হাট কুতুব উদ্দিন ইজারা নিয়েছে। তারা গিয়াস উদ্দিনের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। তারা বিএনপির কোন নেতা কর্মী নয়। ৩নং ওয়ার্ডের গরুর হাট গিয়াস উদ্দিনের খাস লোক জামান সেলিম নিয়ে যায়। পরে ৩নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হলে জামান সেলিম সেই হাটের দায়িত্ব পায় থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন ও তার লোকজন। সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের অনুগত কাচপুরের কামাল হোসেন ১নং ওয়ার্ডের গরুর হাটের ইজারা পেয়ে যান। এ দুটি হাটের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে আবিভূর্ত হয়েছেন হিরাঝিল এলাকার লন্ডন প্রবাসী ইউসুফ খান। ওসমান পরিবারের সাথে সক্ষতা গড়ে হোটেল ব‍্যবসা চালু করা ইউসুফ বর্তমানে হয় গেছেন গিয়াস উদ্দিনের খাস লোক। ১নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক সদস্য শহীদুল্লাহ উক্ত ১ নং ওয়ার্ডের গরুর হাটের সিডিউল জমা দেন। কিন্তু অদৃশ‍্য শক্তির ইশারায় ১, ৩ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাটের ইজারা পেয়ে যান গিয়াস উদ্দিনের খাস লোক জামান, সেলিম ও ইউসুফ খান। সকল হাটে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের নির্দেশমতো পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে, শেয়ার ও বিনিয়োগকারী, হাসলি ঘরের দায়িত্ব সবকিছুই তার অনুগত লোকেদের তত্ত¡াবধানে রয়েছে। এ ধরনের বৈষম্য মূলক আচরণে বিএনপি নেতাকর্মীরা অসন্তুষ্ট হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিএনপি নেতারা বলেন দীর্ঘ ১৫ বছর রাজপথে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, বিভিন্ন মামলায় পুলিশ নির্যাতন ও জেল জুলুম খেটেছে তাদেরকে কোন মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তিনি স্বজনপ্রীতি করে বিভিন্ন দায়িত্বে তার নিজের লোক বসাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মামলায় নিঃস্ব একজন কর্মী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন ১৬ বছরে আন্দোলনের সুফল ত্যাগী নেতা কর্মীরা ভোগ করতে পারছে না। বরং যারা আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করে সুবিধা নিয়ে কোটিপতি হয়েছেন তাদেরকে আরো বেশি সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি’র ত্যাগী ও রাজপথের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের কোন সুযোগ সুবিধা না দিয়ে তার চার পুত্র ফয়সাল, সাদরিল, রিফাত ও সানভীর কে ব্যবসা-বাণিজ্যে আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া বিভিন্ন আয়ের উৎস তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আসছে পবিত্র কুরবানির ঈদ উপলক্ষে বিএনপি’র ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে কোন ঈদের আমেজ নেই। নেতা কর্মীরা পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দের পরিবর্তে চোখে মুখে সর্ষেফুল দেখছে। ্অনেক নেতাকর্মীরা পরিবার থেকে নিগৃহীত হচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে বঞ্চিত রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের রাজনৈতিক কর্মকাÐ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। যেসব লোক ইজারদার হয়েছেন তারা প্রকাশে কারো সাথে দেখা করেন না। মিডিয়া কর্মীরা তাদেরকে ফোন দিলে তারা ফোন রিসিভ করেন না বন্ধ করে রাখেন। তাদের এই আচরণ রহস্যজনক ও অপরাধজনক। কেননা হাটের নিয়ম নীতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়া তাদের দায়িত্ব। এ বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন এর একান্ত সচিবের সাথে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।