আজ শুক্রবার | ৮ আগস্ট ২০২৫ | ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৩ সফর ১৪৪৭ | দুপুর ১২:১২

আল্লাহ’র সন্তুষ্টি ও ক্ষমা লাভের দিন কাল

ডান্ডিবার্তা | ০৪ জুন, ২০২৫ | ১:০৯ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আগামীকাল বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৮৭ হাজার ১০০ মুসল্লি হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ৭৪ হাজার ৩১৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছে গেছেন। বাকি হজযাত্রীরা দু-এক দিনের মধ্য পৌঁছে যাবেন। পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে আগামী মঙ্গলবার ৩ জুন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সৌদি আরবের মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মিনায় কেউ যাবেন গাড়িতে, কেউবা হেঁটে। হজের আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে হাজিরা ৭ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় অবস্থান করবেন। গতকাল মঙ্গলবার এশার নামাজের পর হাজিরা মিনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। ছয় দিন পর তারা মক্কায় নিজেদের সাময়িক বাসস্থানে ফিরবেন। মিনায় অবস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।
সঙ্গে যা রাখবেন
পুরুষ হাজিদের মক্কায় অজু-গোসল সেরে সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড়ে ইহরামের নিয়ত করতে হবে। ইহরামের জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ কাপড় বা রিদা এবং তিন গজ কাপড় বা ইজার এক সেট পরতে হবে। অতিরিক্ত এক সেট ইহরামের কাপড়, এক সেট সাধারণ পোশাক, যেমন– শার্ট-প্যান্ট বা পাঞ্জাবি-পাজামা; পেস্ট, ব্রাশ, সাবান, মোবাইল ফোন ও চার্জার, নুসুক কার্ড, কোরবানির কুপন এবং মুজদালিফায় রাতে ঘুমানোর জন্য হালকা বিছানা একটি ছোট ব্যাগে নেবেন। কোরবানির কুপন ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ৭২০ রিয়ালে কিনতে হবে।
হাজিদের নিজের ব্যাগ নিজেকে বহন করতে হয়। তবে খাবারের ব্যবস্থা মোয়াল্লেমরা করবেন। প্রত্যেক হাজিকে নুসুক কার্ড, মিনার তাঁবু নম্বরসংবলিত কার্ড দেওয়া হয়েছে, যা সব সময় গলায় ঝুলিয়ে রাখবেন।
আবহাওয়া বার্তা অনুসরণ করুন
মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে কখন কীভাবে যাত্রা করতে হবে, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়। মক্কার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, হজের সময় তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে, বাতাসে আর্দ্রতা থাকবে ৮৫ শতাংশ এবং আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। প্রতিবছর হজের সময় আবহাওয়া বার্তা প্রচার করা হয়। প্রতিদিনের স্থানীয় আবহাওয়া বার্তা দেখে নিতে পারেন।
মিনায় অমূল্য রাত
মিনায় চারদিকে তাঁবু লাগানো থাকবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই চৌচালা তাঁবুগুলোতে পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক থাকার ব্যবস্থা আছে। প্রত্যেক হাজির জন্য ফোম, বালিশ ও কম্বল বরাদ্দ রয়েছে। ফোমের নিচে
বালু হওয়ায় সঙ্গে আনা চাদর
বিছিয়ে ব্যাগ রাখতে পারেন। তাঁবুতেই নামাজ আদায় করা যায়। জামাত হলে হজযাত্রীরা নিজ নিজ ফোমে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজে দাঁড়ান। যারা ফোমে দাঁড়াতে অক্ষম, তারা চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করবেন। খাবার বাইরে থেকে রান্না করে আনা হয়, তবে কাছাকাছি খাবারের দোকানও রয়েছে।
মিনায় রাতযাপন হাজিদের জন্য একটি অমূল্য আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা। কারণ তখন তারা তাঁবুতে থেকে নামাজ, জিকির ও দোয়ার মাধ্যমে ইবাদতে মগ্ন থাকেন।
মিনায় হারাবেন না, তাঁবু ও রাস্তার নম্বর মনে রাখুন
মিনায় হাজিদের জন্য সাতটি জোনে তাঁবু বরাদ্দ আছে। যেমন– আফ্রিকান, স্থানীয় সৌদি, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় হাজিদের জন্য আলাদা জোন ভাগ করা আছে। অতিরিক্ত অর্থ দিলে মোয়াল্লেমরা জামারাত বা রেলস্টেশনের কাছে তাঁবু দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। যারা বাড়তি অর্থ দেন না, তাদের তাঁবু দূরবর্তী এলাকায় হয়; যা বৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে দুর্বল হাজিদের জন্য অসুবিধার কারণ।
মনে রাখবেন, তাঁবুগুলো দেখতে একই রকম হওয়ায় এবং নম্বরগুলো আরবিতে লেখা থাকায় অনেকে নিজের তাঁবু চিনতে সমস্যায় পড়েন। কেউ কেউ দীর্ঘ পথ হাঁটতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। ধরা যাক, মিনার তাঁবু নম্বর ১২/৫৬। এর অর্থ ওপরের সংখ্যা তাঁবু নম্বর ১২, নিচের সংখ্যা ৫৬ হলো রাস্তার নম্বর।
মোয়াল্লেম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড এবং নুসুক কার্ড দেওয়া হয়। তা যতেœ রাখবেন। বাইরে বের হওয়ার সময়ও নুসুক কার্ডটি সঙ্গে রাখুন। সমস্যা এড়ানোর জন্য যে তাঁবুতে অবস্থান করবেন, সেই তাঁবু চিহ্নিত করে নিতে পারেন।
মানচিত্র সঙ্গে রাখুন
মিনায় চলাচল সহজ করতে মানচিত্র সঙ্গে রাখা উচিত। মিনার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো চিনে নিলে পথ হারানোর ঝুঁকি কমে। উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে জামারা (শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপের স্থান)।
মসজিদে খায়েফ, তিনটি ব্রিজ (বাদশাহ খালেদ ব্রিজ-১৫, বাদশাহ আবদুল্লাহ ব্রিজ-২৫, বাদশাহ ফয়সাল ব্রিজ-৩৫)। হাঁটার পথ (টিনশেড), রেলস্টেশন (মিনা ও মুজদালিফায় তিনটি করে), সুড়ঙ্গপথ। এর বাইরে আছে হাসপাতাল, পোস্ট অফিস, বাদশাহ বাড়ি, রাজকীয় অতিথি ভবন এবং মোয়াচ্ছাসা কার্যালয়।
মিনার বড় রাস্তাগুলোর নাম ও নম্বর জানা থাকলে চলাচল সহজ হয়। যেমন বাদশাহ ফয়সাল ৫০ নম্বর রাস্তা, আল-জাওহারাত ৫৬ নম্বর রাস্তা, সুক্কল আরব ৬২ নম্বর রাস্তা এবং বাদশাহ ফাহাদ ৬৮ নম্বর রাস্তা।
মূল হজ: বুধবার মিনায়, বৃহস্পতিবার আরাফাত
৮ জিলহজ হাজিরা মিনায় সারাদিন অবস্থান করবেন। ৯ জিলহজ ফজরের নামাজের পর তারা ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে যাবেন এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে থাকবেন। এরপর আরাফাত থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় রাতযাপন করবেন এবং জামারাতে পাথর নিক্ষেপের জন্য ৭০টি কঙ্কর সংগ্রহ করবেন।
১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পর মুজদালিফা থেকে মিনায় ফিরে বড় জামারাকে কঙ্কর নিক্ষেপ, কোরবানি ও মাথা মুÐন বা চুল ছেঁটে স্বাভাবিক পোশাকে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন।
তাওয়াফ ও সাঈ শেষে হাজিরা মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ তিনটি জামারায় প্রতিদিন ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। দুর্ঘটনা এড়াতে সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ (মোয়াচ্ছাসা) হাজিদের দলবদ্ধভাবে জামারাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে। এর মাধ্যমে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
বাংলাদেশিরা কোথায় থাকবেন
মোয়াল্লেম দপ্তর সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হাজিরা থাকবেন ১ থেকে ১০, ২৯, ১০১, ১৫০ থেকে ১৫৪, ২৩৫-২৩৭, ৩৪৬ থেকে ৩৪৮ এবং ৩৬২ নম্বর মোয়াল্লেমের অধীনে। মিনায় হাজিদের সহায়তার জন্য ১২/৫৬, ৩/৫০৮ নম্বর তাঁবুতে পাঁচ দিন বাংলাদেশ হজ কার্যালয়ের কার্যক্রম চলবে।
কোন কোন দোয়া মুখস্থ করবেন
কাবা শরিফের চারদিকে ঘোরাকে বলা হয় তাওয়াফ। এই তাওয়াফ সম্পন্ন করতে হয় কাবাঘর ঘিরে সাতটি চক্করের মাধ্যমে। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে ছোটাছুটি করাকে বলা হয় সাঈ।
আপনাকে যেটি মুখস্থ করতে হবে, তার একটি হলো তালবিয়া। এটি শুধু মুখস্থ করলে চলবে না, এগুলোর অর্থ জানা থাকলে আপনার জন্য ভালো হবে। আপনি ইবাদতের অর্থ বুঝে নিজেকে একাত্ম করতে পারবেন।
তালবিয়া
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’ মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।
অর্থ: আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির; এই যে আমি। আর তোমার কোনো শরিক নেই। আমি হাজির। সব প্রশংসা ও কর্তৃত্ব শুধু তোমারই। আর তোমার কোনো শরিক নেই।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা