আজ শুক্রবার | ৮ আগস্ট ২০২৫ | ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৩ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৯:৩৬

বর্ষার ছোঁয়ায় যৌবনে ফিরেছে শীতলক্ষ্যা

ডান্ডিবার্তা | ১৬ জুন, ২০২৫ | ১২:১১ অপরাহ্ণ

মেহেদী হাসান মুন্না
পঁচা পানির গন্ধ আর নানা কলকারখানার বর্জে দূষিত শীতলক্ষা। কলকারখানা বর্য ও পঁচা পানির কারণে শীতলক্ষ্যা তার গৌরব আর সৌন্দর্য নিঃশেষ হয়ে যায়। তবে বর্ষার মৌসুমে শীতলক্ষ্যায় পানি পরিবর্তন এবং ঈদ উল আযহা উপলক্ষে কলকারখানা বন্ধের কারণে যৌবনের দেখা পাচ্ছে শীতলক্ষ্যা। তাইতো তীব্র গরমের মধ্যে সকল বয়সীরা নদীর পানিতে স্বস্তি খুঁজে পেতে চেষ্টা করে। প্রয়োজনীয় পানির চাহিদাও মিটছে নদীর পারের বাসিন্দাদের। সুবিধা ভোগ করছে নদীর হারানো যৌবনের। তাইতো শেষ বয়সে এসেও রফিক মিয়া শীতলক্ষ্যায় স্বস্তির ডুপ দিচ্ছে। রফিক মিয়ার মতে, শীতলক্ষা আর আগের মতো নেই। এই নদীর পারে খেলাধুলা, গোসল, এবং ঝাপাঝাপি করে কেটেছে তার শৈশব। এই নদীতে মাছ শিকার করেছে। কিন্তু সারা বছর এই নদীর পানি এত পরিমাণে নোংরা থাকে তাই মাছ কেন পোকামাকড় জন্মায় না। শীতলক্ষ্যা নদী একসময় নারায়ণগঞ্জ এবং এর আশেপাশের এলাকার মানুষের জন্য প্রধান পানীয় জলের উৎস ছিল। যদিও বর্তমানে দূষণের কারণে এর পানি পানের অযোগ্য, তবুও একসময় এটি ছিল বিশুদ্ধ জলের আধার। নদীটি সেচ কাজে ব্যবহৃত হয়, যা কৃষি উৎপাদনে সহায়ক। শীতকালে যখন পানির স্তর কমে যায়, তখন সেচের জন্য নদীর পানি ব্যবহার করা হয়। শীতলক্ষ্যা একসময় মৎস্য আহরণের জন্য বিখ্যাত ছিল। এই নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত, যা স্থানীয় জনগণের খাদ্য ও জীবিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। বর্তমানে দূষণের কারণে মাছের পরিমাণ কমে গেলেও, কিছু পরিমাণে মাছ এখনও পাওয়া যায়। শীতলক্ষ্যা নদী একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ, যা পণ্য পরিবহন এবং যাত্রী পারাপারে ব্যবহৃত হয়। এই নদীর মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে সহজে এবং দ্রæত পণ্য পরিবহন করা যায়। শীতলক্ষ্যা নদী শিল্প কারখানার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জল সরবরাহকারী উৎস। নারায়ণগঞ্জ একটি শিল্প এলাকা, যেখানে বিভিন্ন ধরণের শিল্প কারখানা অবস্থিত এবং এই কারখানাগুলোতে পানির চাহিদা মেটাতে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি ব্যবহার করা হয়। শীতলক্ষ্যা নদীর পানি পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। এটি আশেপাশের এলাকার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। ইতিহাস বলে শীতলক্ষ্যা সুনাম ছিল বিলাত পর্যন্ত। বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁও শীতলক্ষ্যার তীরে অবস্থিত ছিল। এবং এই অঞ্চলের শাসক ঈশা খাঁ নদীর তীরে দুর্গ নির্মাণ করেছিল। কারণ প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ে শত্রæ পক্ষের হামলা করার জন্য সহজ যাত্রাপথ ছিল শীতলক্ষ্যা নদী। অর্থনৈতিক ভাবেও শীতলক্ষ্যা নদীর গুরুত্ব অতুলনীয়। প্রাচীন কাল থেকেই এই নদী মসলিন শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। আজও তার তীরে শৈল্পিক বয়ান কেন্দ্র রয়েছে। এর তীরে ছিল সাবেক আদমজী পাটকল, সিমেন্ট কারখানা, সিদ্ধিরগঞ্জের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ গার্মেন্টস শিল্প। শীতলক্ষ্যা নদীর পানি একটি বহুমুখী সম্পদ, যা মানুষের জীবনযাত্রা এবং পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই নদীর গুরুত্ব অপরিসীম এবং এর সঠিক ব্যবহার ও সংরক্ষণের মাধ্যমে এর সুফল দীর্ঘদিন ধরে রাখা সম্ভব। তাই নদীর দূষণ রোধে সকলকে এগিয়ে আসা জরুরী।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা