ব্যবসায়ী সোহাগের অপহরণের নেপথ্যে

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, চেম্বার অব কমার্সের নির্বাহী সদস্য আলহাজ¦ মো: সোহাগ অপহরণের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও অপহণকারী চক্রের সদস‍্যদের গ্রেফতারে দৃশ্যমান তেমন কোন অগ্রগতি দেখা না যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী মহলে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের নেতৃত্ব নিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলেছে। অবশ্য পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, অপহরণ মামলায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। সহসায়ী ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত জানানো হবে। গত পহেলা জুন ব্যবসায়ী সোহাগকে অপহরণ করা হয়। গত ২ জুন দুপুরে তাকে পটুয়াখলীর পায়রাগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পুলিশ গুরুত্বর আহত অবস্থায় ব্যবসায়ী সোহাগকে উদ্ধার করে। ঘটনার খবরপেয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে জেলা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যান। এরপর ব্যবসায়ী সোহাগের স্ত্রী ঘটনাস্থলে গিয়ে হেলিকপ্টার যোগে দ্রæত সেখান থেকে তার স্বামীকে একটি হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। এরপর দিন অপহৃত মো: সোহাগের স্ত্রী তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলাটি দায়েররপর নারায়ণগঞ্জের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র পরিচালক মোঃ সোহাগ এর অপহরণ বিষয়ে অপরাধীদের দ্রæত সময়ের মধ্যে সনাক্ত করে গ্রেফতার সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত ৬ জুন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বরাবর স্বারক লিপি দেয়া হয়। চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দ তাদের লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, নারায়ণগঞ্জের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালক মোঃ সোহাগ গত ১ জুন ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা সচিবলায় থেকে রাত ১১ টার দিকে তার ব্যাক্তিগত গাড়িতে করে নারায়ণগঞ্জে বাসার ফেরার পথে কলেজ রোড় এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। পরের দিন দুপুরে তাকে পটুয়াখলীর পায়রাগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পুলিশের মাধ্যমে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বিভিন্ন জনের প্রশ্ন, ব্যবসায়ী মো: সোহাগকে নারায়ণগঞ্জের কলেজ রোড় থেকে অপহরণকালে গাড়িতে থাকা চালক কোথায়? এ সম্পর্কে পুলিশ কিংবা তার পরিবারের পক্ষ থেকে ১৫ দিনেও কিছু জানানো হয়নি। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে পটুয়াখালী নেয়ার পথে বিভিন্ন সড়কে অনেক চেকপোষ্ট রয়েছে। একটি চেকপোষ্টেও ঘটনাটি ধরা পড়েনি। বিষয়টি ব্যবসায়ী মহলে আলোচিত হচ্ছে। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র দায়িত্বশীল পরিচালক ও একজন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের এ ধরনের অপহরণ শুধু ব্যক্তি হিসেবে নয় বরং ব্যবসায়ী সমাজ এবং সমগ্র নারায়ণগঞ্জের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি বড় ধরনের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে গাড়ি চালকের অর্ন্তধান এবং যে গাড়িতে ব্যবসায়ী সোহাগ ছিল সেই গাড়িটি ছাড়াও আরেকটি গাড়ি ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ জব্দ করে। সকলের সন্দেহের তীর এখন গাড়ি চালক কবিরের দিকে। কবিরকে পাওয়া গেলেই অপহরণের কারণ এবং কারা এ ঘটনায় জড়িত তা দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে উঠবে। অপহৃত ব্যবসায়ী মো: সোহাগ উদ্ধারের পর পরই গণমাধ্যমকে জানান, অপহরণের পর তাকে অপহরণকারীরা পিস্তল দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যতিক শক দেয়। তবে অপহরণকালে গাড়ি চালকের ভ’মিকা কি ছিল এ সম্পর্কে তিনি গণমাধ্যমকে কিছু জানাননি। এঘটনার ১৫দিন অতিবাহিত হলেও মূল অপরাধীদের আজও ধরতে পারেনি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। এতে করে ব‍্যবসায়ী মহলে আতঙ্কসহ ক্ষোভ বিরাজ করছে। আতঙ্কগ্রস্থ ব‍্যবসায়ী মহল তাদের জান মাল নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। অনেক ব‍্যবসায়ী মন্তব্য করেছেন, পুলিশের ব‍্যর্থতায় ভবিষ্যতে এরচেয়েও বড় ধরনের কিছু ঘটতে পারে যার দায়ভার বহন করতে হবে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশকে। এ ব্যপারে পুলিশ সুপার প্রত্যু কুমার মজুমদার গতকাল রোববার রাতে দৈনিক ডান্ডিবার্তাকে জানান, মামলার যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। ইতিমধ্যে অপহরণকারীদের অনেককেই চিহিৃত করা হয়েছে। সহসায়ী অপহরণের কারণ এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে গণমাধ্যমরে সামনে বিস্তারিক প্রকাশ করা হবে।