আজ শুক্রবার | ২০ জুন ২০২৫ | ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | ২৩ জিলহজ ১৪৪৬ | সকাল ৯:১০

মাসদাইরে যাদের নিয়ন্ত্রণে মাদক ব্যবসা !

ডান্ডিবার্তা | ১৮ জুন, ২০২৫ | ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
মাদক অধ্যুষিত ফতুল্লা মডেল থানাধীন পশ্চিম মাসদাইর এলাকার অন্যতম অঘোষিত স¤্রাট হলেন হাজী আবুল কালামের ছেলে সাব্বির হোসেন দিপু। শুধু মাসদাইর নয় দিপুর মাদক ব্যবসার বিস্তার এখন এনায়েতনগর ইউপি এবং কাশিপুর ইউপির প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় বিদ্যমান রয়েছে। মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে কয়েকটি হত্যা মামলারও আসামী এ দিপু। গত ১৪ জুন নরসিংপুর এলাকায় স্বপন হত্যা মামলারও ১নং এজাহার নামীয় আসামী দিপু। আর দিপুর মাদক সা¤্রাজ্যের অপর দুই সঙ্গী হলেন জাহিদ ও সাবু। স্থানীয়দের দেয়া তথ্য ও অনুসন্ধানে জানা যায় যে, মাসদাইর বাজার, গুদারাঘাট, ঘোষেরবাগ, দেওভোগ বাশমুলি,আদর্শনগর এবং মুসলিম নগরের প্রত্যন্ত এলাকাতেই চলছে দিপু বাহিনীর প্রকাশ্যে রমরমা মাদক ব্যবসা। প্রায় আড়াই শতাধিক কিশোরগ্যাং বাহিনীর মাধ্যমে গড়ে উঠা দিপুর এ মাদক সা¤্রাজ্যে সহজেই প্রবেশ করাটা অনেকটা মুশকিল। মাসদাইর ছোটকবরস্থান এলাকার পাশে পাপ্পু মিয়ার মাঠে প্রতিদিনই যেন মাদকের হাট বসায় এ দিপু ও তার বাহিনীর সদস্যরা। স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না দিপু এবং তার বাহিনীর কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কারনে। এ মাদক ও এর টাকা নিয়ে ঝগড়ায় ইতিমধ্যে দিপু ও তার বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে প্রায় ৪ জন। কে এই দিপু: দক্ষিন মাসদাইর এলাকার হাজী আবুল কালামের ছেলে দিপু ছোট থেকেই বখাটে প্রকৃতির ছিলো। অল্পবয়সে বখে যাওয়ার ফলে তার পরিবার তাকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ার মাসুল গুনতে হচ্ছে এলাকার সবাইকে। মাসদাইরের অন্যতম মাদকের হোতা মনিরুজ্জামান শাহীন ওরফে বন্দুক শাহীন ডিবি পুলিশের হাতে ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর পুলিশের সোর্স নাসির ওরফে কসাই নাসিরের ছেলে কসাই সেলিমের সাথে যুটিবদ্ধ হয়ে নিজেরাই মাদক স¤্রাট বনে যান। মাসদাইর ছাড়াও এনায়েতনগর ও কাশিপুরের প্রত্যন্ত এলাকাতে মাদক সাপ্লাইয়ের কাজ শুরু করে এ দিপু। আর তাকে এ কাজে সহযোগিতার জন্য রয়েছে ঘোষেরবাগ এলাকার জাহিদ এবং গলাচিপা রুপারবাগি এলাকার সাবু। স্থানীয়দের মতে,ঘোষেরাবগে বাড়ি বসেই দিপুর অন্যতম সহযোদ্ধা জাহিদ প্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সাপ্লাইয়ের কাজ করেন। এ সময়টুকুতে জাহিদের বাড়ির সামনে প্রায় ১০/১৫টি হোন্ডার বহরও দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান,জাহিদের কাছে আসা মাদক ব্যবসায়ীরা হোন্ডার মাধ্যমেই মাদকগুলো নিয়ে যায়। অপর সহযোদ্ধা সাবুর নেতৃত্বে মাসদাইর রোকেয়া খন্দকার স্কুলের সামনে থাকা কসাই সেলিশের মাদক স্পট পাহাড়া দেয়া ছাড়াও তালাফ্যাক্টরী এলাকার কাশেমনগর যা (পতেঙ্গা মাঠ হিসেবে পরিচিত) সেখানে মাদক বিক্রির পাশাপাশি ছিনতাই এবং চাদাঁবাজিতে ব্যস্ত থাকে। দিপু বাহিনীর প্রতিটি সদস্য’র কাছে বিদেশী অস্ত্রসহ সুইচ গিয়ারও থাকে বলে জানান তারা। সাবুকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন সদও থানা বিএনপির এক শীর্ষ নেতার ভাগিনা যুবদল নেতা শহিদ। গত রমজান মাসে রোকেয়া স্কুলের পাশে কসাই সেলিমের মাদক স্পটে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্তন অধিদপ্তরের অভিযানের সময় দিপুর সহযোগি জাহিদসহ ৪ জনকে আটক করলেও সাবুর নেতৃত্বে কিশোরগ্যাং সদস্যরা উক্ত ৪ জনকে হ্যান্ডকাপসহ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে রাতে নাকি একজন বিশেষ পেশার ব্যক্তির সহায়তায় ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে উক্ত হ্যান্ডকাপগুলো ফেরত দেয়া হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন কার্যালয়ে। সেই ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা হলেও সেই আসামীগুলোকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি অজ্ঞাত কারনে। তবে স্থানীয়দেন মাঝে গুঞ্জন রয়েছে যে,দিপুর মাদক স্পটের টাকা নাকি প্রতিটি দপ্তরে চলে যায় সময় মতো। যার ফলে প্রকাশ্যে থাকলেও পুলিশের চোখে অধরাই থেকে যায় কুখ্যাত এ মাদক স¤্রাট দিপু। স্থানীয়দের মতে, দিপু-জাহিদ-সাবুগংদের মাদকের কড়ালগ্রাসে যেন প্রতিটি পাড়া-মহল্লার সকল বয়সী মানুষকে মৃত্যুর মুখে ধাবিত করছে এবং একটি পরিবারকে ধ্বংসের মুলে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক নির্মুলে পুলিশের নিরবতা আর কতকাল চলবে তা বলতে পারেনা তারা। যদি পুলিশ প্রশাসন এখনই মাদক নির্মুল এবং মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থা না নেয় তাহলে প্রতিদিনই এ সকল দিপু-জাহিদ-সাবু বাহিনীর দ্বারা হত্যাকান্ডের ঘটনা প্রতিটি পাড়া-মহল্লাতেই বেড়ে যাবে। এদিকে মাদক স¤্রাট দিপুকে কেন পুলিশ গ্রেফতার করছে তা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। মাসদাইর ছোটকবরস্থান এলাকায় একটি হত্যাকান্ড ঘটালেও গ্রেফতার করা হয়নি দিপু। তাছাড়া মাদক মামলা তো রয়েছেই। সর্বশেষ নরসিংপুর এলাকায় স্বপন হত্যাকান্ড এবং তার ভাই বাবুকে গুরুতর জখমের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামী সাব্বির হোসেন দিপু এখনও রয়েছে প্রকাশ্যে। হত্যাকারী ও মাদক স¤্রাট দিপুর এ রকম সাহসিকতার কোন সদুত্তর প্রশাসনের কাছে পাচ্ছে স্থানীয়রা। তাদের সকলের প্রশ্ন,তাহলে কি মাদক বিক্রি করে শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া দিপুর কাছে সবাই ধরাশায়ী? তার অন্যতম সহযোদ্ধা জাহিদ নিজ বাড়ি হতেই মাদক সাপ্লাই দিচ্ছে দিনের আলোতে এবং অপর সহযোদ্ধা সাবু প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছেন পতেঙ্গামাঠ এলাকাতে। তাহলে এ মানে কি? দিপুর সহযোদ্ধা মাদক ব্যবসায়ী,ছিনতাইকারী ও চাদাঁবাজ সাবুর শেল্টারদাতা না হয় যুবদল নেতা শহিদ তাহলে দিপু এবং জাহিদের শেল্টারদাতা কে ? কোন রাজনৈতিক নেতা নাকি প্রশাসনের ক্ষমতাধর কোন ব্যক্তি এমনটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মাঝে। মাদক স¤্রাট ও স্বপন হত্যাসহ একাধিক হত্যা মামলা আসামী সাব্বির হোসেন দিপুগংদের দ্রæত গ্রেফতারের জন্য সেনা অভিযানের দাবী জানান স্থানীয়রা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা