আজ শনিবার | ২১ জুন ২০২৫ | ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | ২৪ জিলহজ ১৪৪৬ | বিকাল ৩:২৩

জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে তাই সাবধান

ডান্ডিবার্তা | ২১ জুন, ২০২৫ | ১২:৩৭ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
জ্বরের সাথে প্রচÐ খিঁচুনি, শেষ পর্যন্ত জ্ঞান হারাচ্ছেন রোগীরা। এমন অসুস্থতা নিয়ে প্রচুর রোগী আসছেন চিকিৎসকের কাছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এটা খুব বেশি অস্বাভাবিক কিছু না, এমন হয়। মাঝে মধ্যে চিকিৎসকদের কাছে এমন লক্ষণ নিয়ে রোগীরা আসছেন। রোগীর অভিভাবকরা বলছেন, বিশেষ করে বয়স্ক রোগীরা অজ্ঞান হয়ে গেলে প্র¯্রাব নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। মেডিসিনের চিকিৎসকরা বলছেন, এমন রোগী পাচ্ছেন। শিশুদের বেশি পাচ্ছেন তবে মাঝে মধ্যে বয়স্করাও আসছেন। ভয়ঙ্কর জ্বর হলে শরীর ঝাঁকুনি দেয় কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা: এ কে এম সাজেদুর রহমান জানান, জ্বর হলেই অজ্ঞান হওয়ার প্রবণতা কম। তবে জ্বরের সাথে অন্যান্য রোগ (কোমরবিডিটিস) থাকলে বয়স্কদের ক্ষেত্রে অজ্ঞান হওয়ার প্রবণতা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর হলেও অজ্ঞান হয় তা ১০ শতাংশের বেশি না। তবে মেনিনজাইটিস (এক ধরনের ভাইরাস), এনসেপালাইটিস, রক্তে সংক্রমণ বা সেপসিস হলে এমন হতে পারে। আবার খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণ কমে গেলেও অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু পরীক্ষা করালে কারণটা বের করা যায়। বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুবিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা: মো: আতিয়ার রহমান বলেন, বয়স্কদের শরীর ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়, স্নায়ুতন্ত্র ও তাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে গেলে। এ ছাড়াও যখন শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলে মস্তিষ্ক ও শরীরকে ঠাÐা রাখতে চেষ্টা করে। এর ফলে পেশি সঙ্কুচিত হলে শরীর কাঁপে বা ঝাঁকুনি দেয়। নিউরোলজিক্যাল কোনো সমস্যায় ভুগলে তখনো শরীর ঝাঁকুনি দিতে পারে। তিনি বলেন, তীব্র জ্বরের সময় শরীরের ঝাঁকুনি বা কাঁপুনি একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। মস্তিষ্কে একটি থার্মোস্ট্যাট বা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র আছে, যেটাকে হাইপোথেলামাস বলে। ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে শরীরে পাইরোজেন নামক একটি রাসায়নিক তৈরি হয়। পাইরোজেন মস্তিষ্কের তাপমাত্রা সেট-পয়েন্ট বাড়িয়ে দেয়, অর্থাৎ মস্তিষ্ক মনে করে যে শরীরের তাপমাত্রা এখনো কম। সেই নতুন তাপমাত্রায় পৌঁছানোর জন্য পেশিগুলো সঙ্কুচিত করতে থাকে, যার ফলে ঝাঁকুনি বা কাঁপুনি দেখা যায়। তাছাড়া কাঁপুনির সময় শরীরের পেশিগুলো দ্রæত সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন করে শরীরকে গরম রাখে। এটি এক ধরনের জীববৈজ্ঞানিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যাতে শরীর জ্বরের নতুন ‘সেট পয়েন্ট’-এ পৌঁছাতে পারে। জ্বর হলে বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি ঝাঁকুনি হয়। বয়স্কদের স্নায়ু প্রতিক্রিয়া দুর্বল হয়, তাই তারা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যায় পড়ে। অনেক সময় তাদের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে, ফলে সংক্রমণের প্রতিক্রিয়া অতিরিক্ত তীব্র হতে পারে। এ ছাড়া ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় অথবা রক্তে সোডিয়াম বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলেও ঝাঁকুনি বাড়তে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রেও জ্বরজনিত খিঁচুনি (ফিবারাইল খিঁচুনি) হতে পারে। তবে নিউরোলজিক্যাল সমস্যায় আক্রান্ত বয়স্কদেরও এমন ঝাঁকুনি বা খিঁচুনি যায় দেখা যেতে পারে। ডা: মো: আতিয়ার রহমান আরো বলেন, শরীরের ঝাঁকুনি বা কাঁপুনির সাথে জ্বর থাকলে চিন্তার কারণ হয় যখন রোগীর খুব বেশি ঘাম হয়ে থাকে, শ্বাসকষ্ট হয়, জ্ঞান হারিয়ে যায়, হৃদস্পন্দন যদি দ্রæত হয়, বুকে ব্যথা হয় এবং তা অনেকক্ষণ চলতে থাকলে। এমন হলে মেডিসিনের ডাক্তার দেখাতে হবে। বিশেষজ্ঞ কাউকে না পেলে সাধারণ এমবিবিএস ডাক্তার দেখিয়ে তার পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। করণীয় হিসেবে ডা: আতিয়ার রহমান বলেন, শরীর ঠাÐা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভেজা তোয়ালে ব্যবহার করা যায়। পানি পান করে পানি শূন্যতা রোধ করতে হবে। প্যারাসিটামল সেবন করে অথবা ডাক্তারের পরামর্শে জ্বর কমিয়ে রাখতে হবে। দীর্ঘ সময় শরীরে উচ্চ তাপমাত্রা থাকলে শরীরে দেখা দিতে পারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। জ্বর কমিয়ে রাখতে না পারলে অর্থাৎ শরীরে উচ্চ তাপমাত্রা থাকলে কিডনিসহ নানা অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয়, বেশি জ্বর হলে ডাক্তারকে দেখানো। কারণ কখনো কখনো এটি সংক্রমণের বা বড় অসুখের লক্ষণও হতে পারে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা