আজ সোমবার | ৩০ জুন ২০২৫ | ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ | ৪ মহর্‌রম ১৪৪৭ | সন্ধ্যা ৬:১৮
শিরোনাম:
চাঁদা না পেয়ে বন্দরে বিএনপি নেতা মুকুলের উপর হামলা ও লাঞ্ছিত    ♦     আওয়ামী দোসরদের ঘুম হারাম!    ♦     উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগ থেকে ম্যাগাজিন উদ্ধার    ♦     মুকুলের উপর হামলার প্রতিবাদে মদনপুরসহ ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ    ♦     এশিয়ার বৃহত্তম আদমজী জুট মিল বন্ধের ২৩ বছর অতিবাহিত    ♦     ইপিজেডে আ’লীগ নেতার পক্ষে যুবদল নেতা মাঠে    ♦     মর্গ্যান গার্লস স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ    ♦     শহরে ছাত্রদলের ওরালস্যালাইনসহ পরীক্ষার্থীদের মাঝে পানি বিতরণ    ♦     তারেক রহমানের হস্তক্ষেপে শয্যাশায়ী ইব্রাহিমের চিকিৎসা শুরু    ♦     সোনারগাঁ একটি মডেল উপজেলায় রূপ নিচ্ছে: ডিসি    ♦    

যুবলীগ ক্যাডার মোটা কবির অধরা

ডান্ডিবার্তা | ৩০ জুন, ২০২৫ | ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত যুবলীগ নেতা ডজন মামলার আসামি কবির হোসেন ওরফে মোটা কবির ওরফে লোহা চোর কবির সিদ্ধিরগঞ্জে প্রকাশ্য হলেও গ্রেফতার করছে না সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। জানা যায়, মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের মাসোহারা দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ও আদমজী ইপিজেডে ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন মোটা কবির। এদিকে প্রকাশ্যে হলেও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ডজন খানেক হত্যা মামলার আসামি মোটা কবির কে এখনও গ্রেফতার করতে না পারায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা কে দায়ী করেছেন সচেতন মহল।স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের শাসনামলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলো যুবলীগ ক্যাডার মোটা কবির। দীর্ঘ ৫ বছর তার বাড়িতে ভাড়া ছিল সে। এমনকি নানা অপকর্ম করেও বারবার সে পার পেয়ে যায় মজিবুর রহমানের কারণে। মজিবুর রহমানকে ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে মোটা কবির। কেপিআই এলাকা হওয়ার পরও আদমজী ইপিজেডের ভেতরে তার আস্তায় সে মাদকের আসর বসাতো। কেউ প্রতিবাদ করলে ইপিজেডের বাইরে গেলে ক্ষতি করার হুমকি দিতো কবির। ইপিজেডের ভেতর মদের বার ছিল। সেই বার থেকে মাদক এনে বাইরে চড়া দামে বিক্রি করতো সে। তার গাড়িতে সব সময় বিদেশী মদের দুই-চারটা বোতল থাকতো। ইপিজেডের কাস্টম গেট বা নিরাপত্তা গেইটে তার গাড়ি চেক করতে চাইলে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিতো। মোটকথা গত ১৬-১৭ বছর ইপিজেডের ভেতর রামরাজত্ব কায়েম করে মোটা কবির ও তার বাহিনী। হত্যাসহ একডজন মামলার আসামি কবির হোসেন ওরফে মোটা কবির ওরফে লোহা চোর কবির তার অবৈধ অর্থ-বিত্ত ও ব্যবসা বাঁচাতে এবার বিএনপিতে ঢুকার মিশনে নেমেছে।এই জন্য সে তার আদমজী ইপিজেডের ব্যবসা কথিত বিএনপি নেতা লোহা চোর আকরামকে দিয়েছে। কিছু নিজের কাছে রেখেছে। স্থানীয়দের তথ্যমতে, ৫ আগস্টের পর মোটা কবির আত্মগোপনে চলে যায়। এবং আকরামকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে সে তার ইপিজেডের ব্যবসা ঠিক রেখেছে। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। তারা বলেন, আওয়ামীলীগের আমলে সিদ্ধিরগঞ্জের শীর্ষ আওয়ামীলীগ নেতাদের ব্যবহার করে আদমজী ইপিজেডে বেশ কিছু ব্যবসা হাতিয়ে নিয়েছিল মোটা কবির। বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যায় সে।যুবলীগ নেতা কবির আওয়ামীলীগের মধ্যে তার অবস্থান ঠিক রাখতে আওয়ামীলীগের দলীয় কর্মসুচিগুলোতে প্রচুর টাকা খরচ করে মিছিল নিয়ে যোগদান করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবি অনেক আছে। স্থানীয়দের তথ্যমতে, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামীলীগের প্রত্যেকটা কর্মসূচিতে মোটা কবিরকে মিছিলের সামনের সারিতে দেখা গেছে। আওয়ামীলীগের ১৬ বছরে ইপিজেডে ব্যবসা ছাড়াও নানা অবৈধ উপায়ে প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছে কবির। সেই টাকায় সিদ্ধিরগঞ্জের ১নং ওয়ার্ডে ৫ম তলা বাড়ি, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় শ্বশুর বাড়িতে জমি, মার্কেট এবং গ্রামের বাড়ি বরিশালে জমি কিনেছে সে। লোহা চোর কবির আদমজী ইপিজেডে ব্যবসার আড়ালে অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়েছে বছরের পর বছর। স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে লোহা চোর কবির। মাদক ব্যবসা ও অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা শুরু হলে মোটা কবির কৌশলে তার বাহিনীর সদস্যদের ইপিজেডের ভেতর নিয়ে যায় এবং তার আস্তানায় নিরাপদে রাখে। ঝামেলা এড়াতে সে এই সকল অপরাধীদের তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ‘এ কে এন্টারপ্রাইজ’ এর লোক হিসেবে পরিচয় দেয়। ফলে বেপজার নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের প্রবেশে বাধা দিত না। কিন্তু মোটা কবির অপরাধীদের ইপিজেডের ভেতর অবাধে বিচরণ করার সুযোগ করে দিয়ে ইপিজেডের ভেতর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। সিরাজ হত্যা মামলা ছাড়াও মোটা কবিরের বিরুদ্ধে হাফ ডজন মামলা রয়েছে বিভিন্ন অপরাধে। এছাড়া ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র হতাহতের ঘটনায় মোটা কবিরের বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যা চেষ্টার কয়েকটি মামলা হয়েছে। মামলা ঠেকাতে প্রথমদিকে সে আকরামকে মোটা অংকের টাকা দিয়েছে বলে জানিয়েছে তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আকরাম তাকে মামলা থেকে রক্ষা করতে পারেনি। তবে এক চোরের ব্যবসা আরেক চোর পাহারা দিচ্ছে। লোহা চোর আকরামের মাধ্যমে মোটা কবির একণ বিএনপির শিবিরে ঢুকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর তথ্যমতে, আদমজী ইপিজেডের ভেতর এক সময়ের লোহা চোর আকরামের হাত ধরে উত্থাণ ঘটে মোটা কবিরের। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর আকরাম এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। আর কবির আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে ব্যবসা হাতিয়ে নেয়। এবং নিয়মিত আকরামের সাথে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। কোন দিন রাস্ট্রীয় ক্ষমতায় বিএনপি আসলে মোটা কবিরের যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য সে আকরামের মাধ্যমে বিএনপির সাথে যোগাযোগ রাখে। লোহা চোর কবির দুদকের চোখ ফাঁকি দিতে বিপুল পরিমান অর্থ-বিত্তের পাহাড় গড়ে তুলেছে শ্বশুর বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায়। তার স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নামে-বেনামে রয়েছে জমি ও বিপুল পরিমান অর্থ। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে কবিরের সহযোগিরা। তারা বলেন, নানা ধরনের প্রতারণা, ছলছাতুরী, মিথ্যাচারের মাধ্যমে ইপিজেডের ব্যবসায়িদের ম্যানেজ করে ব্যবসা বাগিয়ে নিয়েছে লোহা চোর কবির। ইপিজেডের বেশ কয়েকজন ইপিজেডের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ি জানান, মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীকে নিয়ে ইপিজেডে ভেতর বিভিন্ন ফ্যাক্টরীতে মহড়া দিতো মোটা কবির। বিভিন্ন ফ্যাক্টরীতে গিয়ে আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতার নাম বিক্রি করে সুবিধা আদায় করে মোটা কবির ওরফে লোহা চোর কবির।তাছাড়া লোহা চোর কবির এমন ভাবে মিথ্যে কথা বলে যে কেউ বিশ্বাস করে। সকাল বিকাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের নাম বিক্রি করতো কবির। গভীর রাত পর্যন্ত ইপিজেডের ভেতর তার আস্তানায় আড্ডাবাজি করতো। যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় নিরাপত্তাকর্মীরা কবিরকে তেমন কিছু বলতো না।কবিরের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, ২০০২ সালে আদমজী জুট মিল বন্ধ হওয়ার পর বন্ধ টেন্ডারের নামে আদমজীর কোট কোটি টাকার স্ক্রাব (লোহা) লোপাটকারী চক্রের সক্রীয় সদস্য ছিল মোটা কবির। এতে করে লোহা চোর কবির হিসেবে পরিচিত পায় সে। ওই সময় আদমজী জুট মিলের পরিত্যক্ত অনেক মূল্যবান মালামাল রাতের আধারে পাচার করে লোহা চোর কবির চক্র। ফলে রাতারাতি প্রচুর টাকার মালিক বনে যায় সে। এরপর ইপিজেডের ভেতর শুরু হয় তার নতুন অপকর্ম। নতুন নতুন ফ্যাক্টরী মালিকদের নানাভাবে জিম্মি করে ফায়দা লুটে কবির। এই কাজে সে ব্যবহার করে বিভিন্ন আওয়ামীলীগ নেতা ও স্থানীয় মাস্তানদের। তার অপকর্মের নানা তথ্য এখন আদমজী ইপিজেডের ভেতর, মিজমিজি, সিআইখোলা, সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকার মানুষের মুখে মুখে। কবিরের মালিকানাধীন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ‘এ কে এন্টারপ্রাইজ’ এর বিষয়ে খোঁজ খবর নিলে ও তার ম্যানেজার মিলনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার আয়ের তথ্য বেরিয়ে আসবে। তবে সে তার অবৈধ অর্থ-সম্পদ রক্ষায় নানাভাবে দৌঁড়ঝাপ করছে। আর সুযোগ খুঁজতেছে ৫ আগস্টের পর হত্যা মামলাগুলোর জামিন করাতে। মোটা কবিরকে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন কোটা আন্দোলনের হতাহতের পরিবার, স্থানীয় সচেতন মহল, বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও তথা তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনুর আলম জানান, আসামি কে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা