ইপিজেডে আ’লীগ নেতার পক্ষে যুবদল নেতা মাঠে

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
গত ৫ আগস্টে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি সমর্থিত নেতারা নিজেদের আদর্শের বিচ্যুতি ঘটিয়ে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার কারণে জাতীয়বাদী দলের আদর্শকে দূরে ঠেলে গোপনে আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে আঁতাত করে তাদের হয়ে বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণের লালসায় আয়নাবাজিতে মেতেছে। সেই একই চিত্রের কার্যদি লক্ষ্য করা গিয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য শহীদুল ইসলামের মধ্যে ৫ আগস্টের পর সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডে আওয়ামীলীগ নেতা ফরহাদের ইপিজেডের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আয়নাবাজিতে মেতে উঠেন শহীদুল ইসলাম। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামী আওয়ামীলীগ নেতা ফরহাদের নিয়ন্ত্রিত আদমজী ইপিজেডের নাটুরাব এ্যাপারেলস নামের একটি ফ্যাক্টরীতে এখনো আওয়ামীলীগ নেতা ফরহাদের প্রতিষ্ঠান ষ্টারলিং বিডি লাইসেন্স এবং চুক্তিপত্রে ফ্যাক্টরীর ওয়েস্টেজ মালামাল খালাস করছেন যুবদল নেতা শহীদুল। কিন্তু তিনি এই ফ্যাক্টরীর চুক্তির জন্য আবেদন করেছেন এই অযুহাতে এছাড়া আওয়ামীলীগ নেতা ফরহাদের নিয়ন্ত্রিত ফ্যাক্ট্রী নাটুরাব এ্যাপারেলসের সাথে ব্যবসায়ীক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকার অযুহাতে তার লাইসেন্স এবং চুক্তি ব্যবহার করছেন। অথচ,ইপিজেডের লাইসেন্স একের অধিক ব্যক্তির ব্যবহার করা নিয়ম বহির্ভূত। কিন্তু শহীদুলের আয়নাবাজির ছাঁয়াতলে আওয়ামীলীগ নেতা ফরহাদ আত্মগোপনে থেকে পুনর্বাসিত হচ্ছে। ঘটনার অনুসন্ধান বলছে, আওয়ামীলীগের শাসন আমলে এক ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ছিলেন ফরহাদ নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানের নির্দেশেনায় তার শেল্টারে এবং শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমানের ছত্রছায়ায় আদমজী ইপিজেডের ফ্যাক্টরীগুলোর অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিলেন। কিন্তু তিনি ইপিজেডে ওয়েস্টেজ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ওয়েস্টজ/গারভেজ গ্রæপের একটি লাইসসেন্স করেন বেপজা থেকে তার প্রতিষ্ঠানে নাম নামকরণ হয় ষ্টারলিং বিডি। এই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের ভিত্তিতেই বিগত সময়ে সে ইপিজেডে ওয়েস্টেজ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু ৫ই আগস্টে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটলে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় আসামী হয়ে ফরহাদ তার লাইসেন্সে নিয়ন্ত্রিত ফ্যাক্টরীগুলোর মধ্যে নাটুরাব এ্যাপারেলস নামে শ্রীলংকান ফ্যাক্টরীর নিয়ন্ত্রণ হেন্ডওভার করেন ফরহাদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য শহিদুল ইসলামের নিকট। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই নাটুরাব এ্যাপারেলস চুক্তি করেছিলেন ফরহাদ চট্রগ্রাম থেকে সেই অনুপাতে শহিদুলও চট্রগ্রামে চুক্তির জন্য আবেদন করেছেন তথা এক বছরের পূর্বে নতুন চুক্তি হয় না এমন অযুহাতে ৫ আগস্টের পর থেকে এই নাটুরাব এ্যাপারেলস ওয়েস্টজ/গারভেজ মালামাল আওয়ামীলীগ নেতা ফরহাদের লাইসেন্স এবং চুক্তি ব্যবহার করছেন যুবদল নেতা শহীদুল। কিন্তু তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্যের ছোট ভাইয়ের লাইসেন্সে ব্যবহার করে ব্যবসা করছেন। তাছাড়া তার ভাষ্য হচ্ছে ফ্যাক্টরীর সাথে তার ব্যবসায়ীক কার্যক্রম চলমান থাকায় এবং চুক্তির আবেদন থাকায় যে কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্যের ছোট ভাইয়ের লাইসেন্সে ব্যবহার করে ব্যবসা করছেন। এখানে আওয়ামীলীগের নেতার লাইসসেন্স এবং চুক্তি থাকার বিষয়টি এড়িয়ে যান। এখানে সর্বত্ত আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ইপিজেডের লাইসেন্স একের অধিক ব্যক্তির ব্যবহার নিয়ম বহির্ভূত। এ বিষয়ে আদমজী ইপিজেডের ইডি কে এম মাহাবুব ই সোবহানীকে একের অধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বেপজার লাইসেন্স ব্যবহার করে ব্যবসা করছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির মাধ্যমে যে লাইসেন্স হয় সেই লাইসেন্সটি অপরজন ব্যবহার করবে অবশ্যই নিয়ম বহির্ভূত। গত বছরের আগস্ট থেকে নতুন আবেদন প্রক্রিয়া না হওয়াতে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স অপর একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করছেন বা ব্যবসায়ীক কারণে করতে বাধ্য হচ্ছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা বছরে দুই বার লাইসেন্স নবায়ন এবং নতুন লাইসেন্সের কার্যক্রম করে থাকি। আগে বছরে একবার হত এখন জানুয়ারি-জুলাইতেও হয়। যারা লাইসেন্স নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে এই প্রশ্নের প্রক্কালে মোবাইল ফোনের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তীতে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাত করে ব্যবসা করছি। আমাকে এমন কেউ দেখাতে পারে আমি তাঁকে ১কোটি টাকা পুরষ্কিত করব। আমি নাটুরাব এ্যাপারেলসের সাথে ব্যবসা করার জন্য চুক্তির জন্য আবেদন করেছি এটা চিটাগাং থেকে চুক্তির অনুমোদন দেয়া হয়েছিল পূর্বে যেহেতু একটি নিয়ম রয়েছে এক বছরে একই প্রতিষ্ঠান একের অধিক চুক্তি করে না সেহেতু আমি ইতিমধ্যেই উক্ত ফ্যাক্টরীর সাথে বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকায় ওয়েস্টেজ খালাস হলে সেটা আমি পাচ্ছি। তবে এখানে আগে যার নামে চুক্তি এবং লাইসেন্স ছিল তার প্রতিষ্ঠানের নাম খালাসের বিবরণীতে উল্লেখ হচ্ছে এখানে ষ্টারলিং বিডি কোন আওয়ামীলীগ নেতার সেটা জানি না এটা একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে জানি। এছাড়া আমি ইপিজেডে আমাদের কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্যের ভাইয়ের লাইসেন্সে ব্যবসা করছি। আমি জানি ৫ আগস্টের পর অটোমেটিক ইপিজেড থেকে আওয়ামীলীগ তাদের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তাই ৫ আগস্টের পর আওয়ামীলীগের সাথে ব্যবসার করার প্রশ্নেই আসে না আমরা সকল নিয়ম মেনে ইপিজেডের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যবসা করছি। এ বিষয়ে ্আওয়ামীলীগ নেতা ও ষ্টারলিং বিডির কর্ণধার ফরহাদ হোসেইননের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে তার লাইসেন্স ব্যবহার করে আদমজী ইপিজেডের নাটুরাব এ্যাপারেলস নামের ফ্যাক্টরী থেকে ওয়েস্টেজ মালামাল খালাস করা হচ্ছে তিনি প্রশ্নটি শুনেই বলেন আমাকে ১ঘন্টা পরে কল করতে হবে আমি একটি মিটিংয়ে বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। তবে অনুসন্ধানের সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, গত ১৩জুন প্রায় ৩০০০ কেজি টিন নাটুরাব এ্যাপারেলস থেকে খালাস হয় ষ্টারলিং বিডির নামে কিন্তু এই ষ্টারলিং বিডির কর্ণধার হচ্ছেন আওয়ামীলীগ নেতা ফরহাদ হোসেন তার নামেই ওয়েস্টজ/গারভেজ গ্রæপে বেপজা থেকে লাইসেন্সটি করা। এদিকে যুবদল নেতা শহীদুল ইসলামও স্বাকীরোক্তি দিয়েছেন যে তিনি ২-৩ হাজার কেজির মত ওয়েস্টেজ টিন খালাস করেছেন। সেই সাথে তিনি বর্ণনা করেছেন ফ্যাক্টরীটি এখনো চালু হয়নি নির্মাণ কাজ চলমান। কিন্তু ফ্যাক্টরীর সাথে ব্যবসায়ীক সম্পর্ক থাকায় অনেক সময় লেবার সাপ্লাই এবং তারা পরিবহনের জন্য দুটি কনটেইনার গাড়ি ক্রয় করে দিয়েছি এবং ফ্যাক্টরীতে প্রায় ১৮-২০লক্ষ টাকার মত ব্যবসায়িক লেনদেনের ইনভেস্ট রয়েছে।
ই-