আজ শুক্রবার | ২৫ জুলাই ২০২৫ | ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২৯ মহর্‌রম ১৪৪৭ | রাত ৮:২৬

ছাদহীন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান

ডান্ডিবার্তা | ২৪ জুলাই, ২০২৫ | ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সচরাচর স্কুল যেমন হয়ে থাকে, এটি তেমন নয়। স্কুলের বাইরে নেই কোনো খেলার মাঠ, নেই নিজস্ব কোনো ভবন। আছে মাথার ওপর আকাশ। সঙ্গে রয়েছে কতগুলো বেঞ্চ। এভাবেই গড়ে উঠেছে একটি স্কুল। যেখানে প্রতিদিন বিকেলে চলে পাঠদান। নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া রেলস্টেশনে খোলা আকাশের নিচে পথশিশুদের নিয়ে গড়ে উঠেছে এমনই একটি স্কুল। যে স্কুলের নাম দেওয়া হয়েছে লাল সবুজের পতাকা শ্রী শুভ চন্দ্র প্রাথমিক শিশু বিদ্যালয়। যার প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শুভ চন্দ্র দাস। তিনি নিজেই শিক্ষক এবং একাই ক্লাস নেন। ২০১৬ সাল থেকে পথশিশুদের বিনা খরচে এখানে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। শুভ চন্দ্র দাস তার নিজেই পথশিশুদের বই খাতা দিয়ে থাকেন। তবে এই প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। বর্তমানে স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০ জন। শিশুদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য স্কুল থেকে নাস্তা সরবরাহ করা হয়ে থাকে। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়েই স্কুলটি পরিচালিত হয়ে আসছে। সেই সঙ্গে স্কুলটিতে শুধু পুথিগত বিদ্যা নয়, বরং জাতীয় সংগীত, শপথ পাঠ করানো হয়, যা শিশুদের দেশপ্রেম, সততা ও সাধারণ জ্ঞান তৈরিতে সাহায্য করে। আবুল কালাম নামে এক পথচারী বলেন, এখানে প্রতিদিনই বিকেলে পথশিশুদের শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে। স্কুলটি যিনি চালান তিনি বিনাস্বার্থেই চালান। কোনো রকমের খরচ নেন না। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। সবার বিনাস্বার্থে লেখাপড়া করানোর মানসিকতা থাকে না। একইভাবে গোলাম রাব্বী নামে একজন বলেন, অনেকদিন ধরেই শিশুদের বিনা পারিশ্রমিকে পড়াশোনা করানো হচ্ছে এখানে। পথশিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে থাকে এ স্কুল। যিনি স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন তার তেমন কোনো আয় নেই। তিনি নিজেই তেমন চলতে পারেন না। কিন্তু স্কুলের শিশুদের বেলায় কোনো ঘাটতি রাখেন না। পার্শ্ববর্তী মসজিদের ইমাম নজরুল ইসলাম বলেন, শুভ চন্দ্র বিনামূল্যে পথশিশুদের পড়াশোনা করান। প্রতিদিন বিকেলে দেখতে আসি। আমরা তাকে উৎসাহ দেই। এটা আমাদের কাছে খুব ভালো লাগে। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শুভ চন্দ্র বলেন, আমি টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারিনি। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করবো এবং স্কুল শিক্ষক হবো। আমি নিজে যেহেতু পড়াশোনা করতে পারিনি তাই আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি যারা টাকার অভাবে পড়তে পারে না তাদের পড়াশোনা করানোর জন্য। আমার স্বপ্ন পথশিশুদের জন্য একটি স্কুল গড়ে তোলা। তিনি আরও বলেন, এখানে বেশিরভাগ শিশুদের মা-বাবা রিকশাচালক অথবা গার্মেন্টস শ্রমিক। আমি নিজেও একজন নির্মাণ শ্রমিক। মা-বাবার কাজের সময় ওদের দেখাশোনা করারও তেমন কোনো লোক নেই। আমি এসব শিশুদের বেশিরভাগ সময় ময়লা আবর্জনা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখে ওদের অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেই। তাই বস্তির পাশের প্লাটফর্মকেই বেছে নিয়েছি উপযুক্ত জায়গা। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এই বিষয়টি আমার জানা নেই। যিনি স্কুলটি পরিচালনা করেন তিনি যদি আমাদের কাছে আসেন তাহলে দেখবো কিছু করা যায় কিনা। তবে এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো উচিত। তিনি শিশুদের শিক্ষার আলো দেখাচ্ছেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা