আজ বুধবার | ৭ মে ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ৮ জিলকদ ১৪৪৬ | ভোর ৫:০০

এই বয়সেও বাইর হইতে হয়

ডান্ডিবার্তা | ১৯ আগস্ট, ২০২২ | ১২:৩৬ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট তপ্ত গরমে নারায়ণগঞ্জ শহরে লু-হাওয়া বইছে। সূর্য ঠিক মাথার উপরে। এমন সময় সবাই চায় একটু স্বস্তি আর আরাম। তবে যাদের কপালে লিখনিতে কষ্ট, দূর্ভোগ আর যন্ত্রণা, তাদের আবার কিসের স্বস্তি, কিসের আরাম? নিয়তি তাদের মেনে নিতেই হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দুই নং রেলগেট এলাকায় সত্তরোর্ধ্ব মহিউদ্দিন মিয়ার সাথে কথা বলে এমনটাই জানা যায়। মহিউদ্দিন মিয়া পেশায় একজন পান বিক্রেতা। তিনি শহরের ফুটপাতে ফেরি করে পান বিক্রি করেন। মহিউদ্দিন মিয়ার সাথে এই প্রতিবেদকের যখন দেখা হয় তখনও তিনি কাঁধে ঝোলানো স্টিলের একটি চৌবা”চার মধ্যে পান সাঁজিয়ে, বিক্রির জন্য হেঁটে চলছিলেন। এ সময় তার সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চাইলে তিনি স্টিলের পান ভর্তি থলেটা মাটিতে নামিয়ে রাখেন এবং কথা বলতে রাজি হন। সরল স্বভাবের মহিউদ্দিন মিয়া এক প্রশ্নের জবাবে, কাঁধের গামছা দিয়ে মুখ ও গলার ঘাম মুছতে মুছতে বলেন, ‘বাবা এই বয়স কামের না, তাও বাধ্য হইয়া কামে আসি। আমি অসু¯’ মানুষ। ওষুধের ট্যাকা জোগাড় করনের লাইগা হইলেও কাজে আসতে হয়। তারপরে চাউল, ডাউল, তেলের যেই দাম; কাম না করলে চলমু ক্যামনে, কন? আমার একমাত্র ছেলে হোসিয়ারীতে অল্প বেতনে চাকরি করে। এতে তো হয়না। বাসা ভাড়া, ওষুধ খরচ সব নিয়া অনেক ট্যাকা লাগে মাস শেষে। তাই এই অসুস্থ শইল নিয়াই পান বিক্রি করতে আসি, প্রতিদিন। আরাম আর সেবা আমগো গরীবের কপালে নাই বাবা।’ মহিউদ্দিন মিয়ার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। সেখানে তিনি কৃষি কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। সেই কাজে আলো দেখতে না পেয়ে, ১০ বছর আগে স্ত্রী, তিন মেয়ে ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে চলে আসেন শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জে। এরপর দীর্ঘ ৯ বছর বসবাস করেছেন নগরীর চাঁনমারী এলাকায়। সেখানেই সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করে সংসার চালিয়েছেন। তিন মেয়েকে বিয়েও দিয়েছেন। সব মিলিয়ে ভালোই চলছিলো তার জীবন। তবে রাত জেগে ও চেয়ারে বসে বসে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতে গিয়ে অজনা এক রোগে আক্রান্ত হন তিনি। এতে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরিটা চলে গেলে, অসু¯’ শরীর নিয়েই পান বিক্রি করতে রাস্তায় নামেন তিনি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘একটা সিরাপ (ওষুধ) কিনতাম ২০ ট্যাকা দিয়া। গতকাইল কিনতে গিয়া দেখি, সেই সিরাপ ৩৫ ট্যাকা। কও বাবা, কই যামু? সারাদিনে পান বিক্রি করে ২০০ থেকে ২৫০ ট্যাকা কাম হয়। এই টেকা এক কেজি চাউল আর তেল কিনতেই শেষ। এরপর বাদবাকি খরচ জোগাড় করতেই জীবন শেষ।’




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা