আজ সোমবার | ৯ জুন ২০২৫ | ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ১২ জিলহজ ১৪৪৬ | ভোর ৫:৫৭

কেউ মনে রাখেনি মোনেম মুন্নাকে

ডান্ডিবার্তা | ১৬ জানুয়ারি, ২০২৪ | ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

জাহাঙ্গীর ডালিম

সর্বকালের সেরা সেন্টারব্যাক কে সে প্রশ্নে ভিন্ন জনের ভিন্ন মত থাকতে পারে। কারো কাছে বেকেনবাউয়ার তো কারো কারো কাছে মালদিনি, বারেসি কিংবা রামোস। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করা হয় দক্ষিণ এশিয়ার সেরা সেন্টারব্যাক কে? সেই প্রশ্নে হয়তো আটকে যাবেন অনেকেই। তা হলে চলুন আলোচনা করা যাক দক্ষিণ এশিয়ার সর্বকালের সেরা সেন্টারব্যাক’কে নিয়ে। তার পুরো নাম “মোহাম্মদ মোনেম মুন্না”। ১৯৬৬ সালের ৯ জুন নারায়ণগঞ্জে জন্ম গ্রহন করেন তিনি। ১৯৮০ সালে ১৪ বছর বয়সে “পোস্ট অফিস” ক্লাবের ইয়ুথে টিমে ফুটবলের হাতেখড়ি হয় তার। সেখানে দুবছর কাটিয়ে যোগদেন পাইওনিয়ার ক্লাব “শান্তি নগরে”। তিনি তার প্রতিবার জোরে অল্পদিনেই অনেক সুনাম অর্জন করেন। সেই সুবাদে ১৯৮৩ সালে ডাক পান “মুক্তিযোদ্ধা সংসদ” থেকে। সে বছর মুক্েিত্যাদ্ধা ছিলো দ্বিতীয় বিভাগে। সে বছরই মুন্নার নৈপুণ্যে প্রথম বিভাগে প্রমোশন পায় “মুক্েিত্যাদ্ধা সংসদ”। ১৯৮৪ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে ” ঢাকা লীগে” অভিষেক হয় তার। শুরু থেকেই নিজের প্রতিভা দ্বারা সবাইকে অবাক করে দিচ্ছিলেন কিশোর মুন্না। ১৯৮৬ সালে মুন্না যোগ দেন “ব্রাদার্স ইউনিয়নে”। ব্রাদার্সে ভায়ানক রূপ নেন মুন্না। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন লীগের অন্যতম সেরা সেন্টারব্যাক হিসাবে। ১৯৮৭ সালে মুন্না ডাক পান ঐতিহ্যবাহী ক্লাব “ঢাকা আবাহনী” থেকে। আবাহনীতে নিজের ল্যাগেসি ক্রিয়েট করতে থাকেন মুন্না। মুন্নাকে ট্যাকেল করতে দেখা যেত খুবই কম। কারণ ট্যাকেল করার মত পরিস্থিতি তৈরি হতে দিতেন না তিনি। বল নিয়ে তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার মত ফরোয়ার্ড খুবই কম ছিলেন। তাইতো তাকে নিয়ে সাবেক জার্মান কোচ “অটো ফিস্টার” বলেছিলেন “ঐব ধিং সরংঃধশবহষু নড়ৎহ রহ ইধহমষধফবংয”। ফ্যানরাও আদর করে নাম দিয়েছিলেন “কিং ব্যাক”। মুন্নার খেলা সবাইকে এতোটাই মুগ্ধ করেছিলো যে বাংলাদেশে তার একটা আলাদা ফ্যানবেইজ তৈরি হয়েছিলো। একজন ডিফেন্ডার হয়ে আলাদা ফ্যানবেইজের মালিক হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। যা করতে পারেননি অনেক গ্রেট ডিফেন্ডাররা। তার খেলায় মুগ্ধ হয়ে ১৯৯১ সালে তাকে দলে বেড়ায় ভারতের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্লাব ” ইস্টবেঙ্গল”। সেখানে লম্বা সময় না খেললেও লক্ষ-কোটি লাল-হলুদ সমর্থকদের মনে জায়গা করেছেন মুন্না।জায়গা করেছেন ইস্টবেঙ্গল জাদুঘরেও। ১৯৯৩ সালে প্রানের ক্লাব আবাহনীতে ফিরে আসেন মুন্না। সেই বছর বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার রেকর্ড পরিমান পারিশ্রমিক (২০ লক্ষ টাকা) পান মুনেম মুন্না। অবসরের আগ পর্যন্ত আবাহনীতেই খেলে গেছেন তিনি। ক্লাব ক্যারিয়ারের মত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারও সমৃদ্ধ ছিলো তার। ১৯৮৬ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক করেন তিনি। তার নেতৃত্বে ১৯৯৫ সালে নিজেদের প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি জিতে বাংলাদেশ। ১৯৯৫ সালের সাফে রানার্সআপ হওয়া বাংলাদেশ দলেরও দলনেতা ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে কিডনি জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ফুটবলকে বিদায় জানান “কিংব্যাক” মোনেম মুন্না। ২০০৫ সালের ১২ ফেব্রæয়ারী মাত্র ৩৮ বছর বয়সে অই কিডনি জনিত রোগে মারা যান মোহাম্মদ মোনেম মুন্না। তিনি তার ক্লাব ক্যারিয়ারে মোট ৫ বার ঢাকা লীগ এবং ৩ বার ফেডারেশন কাপ জিতেছেন। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৯৯৫ সালে “টাইগার ট্রফি” জয় করেন। পাড়ার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজন ছাড়া কেউ মনে রাখে নি মুন্নাকে। ২০০৮ সালে “ঢাকা সিটি কর্পোরেশন” তার স্বরণে ধানমন্ডির ৮ নাম্বার সেতুর নাম “মোনেম মুন্না সেতু” রাখলেও, এই বিষয়ে জানেন না কেউই। বাফুফে কিংবা তার প্রানের ক্লাব আবাহনীও ভুলে গেছে মুন্নাকে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা