আজ শনিবার | ৯ আগস্ট ২০২৫ | ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৪ সফর ১৪৪৭ | ভোর ৫:৫৯

আজমীরে হাত দিলে গৃহযুদ্ধ বাধতে পারে!’

ডান্ডিবার্তা | ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১১:০১ পূর্বাহ্ণ

শিউলী হক
বাংলাদেশ থেকে পলায়ন করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন ফ্যাসিবাদী শাসক হাসিনা। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থানে কোনোমতে পালিয়ে বেঁচেছেন গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ হাসিনা, আশ্রিত অবস্থায় কি করে তিনি একের পর এক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন? কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন? অপরদিকে আজমীরে অবস্থিত দরগায় নতুন করে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসী উগ্র একটি দল মন্দিরের উপর নির্মিত হয়েছে বলে দাবি করেছে, এই দাবির বিপরীতে দেশে দাবানলের আগুন ছড়িয়ে পরতে পারে। গৃহযুদ্ধ বাঁধাবার একটি মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আগাচ্ছে মোদি সরকার? মন্তব্য করেছেন ভারতের বিশিষ্ট সাংবাদিক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দীনেশ কে বহরা। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি বিশ্লেষণ ধর্মী ভিডিওতে উপরোক্ত দাবি করেন দীনেশ কে বহরা। শেখ হাসিনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, এই স্বৈরশাসক গত প্রায় ১৭ বছর ভারতের একনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে সার্ভিস দিয়েছে এবং এর পরিবর্তে ভারত তাকে অবাধ দুর্নীতি ভোট চুরি অন্যায় অবিচারের ফ্রি পাস দিয়ে রেখেছিল! যেকোনো রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান যখন দুর্নীতি বা অন্য কোন অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তৃতীয় কোন দেশে আশ্রয় গ্রহণ করে ইন্টারন্যাশনাল ল অফ নর্মস অনুযায়ী, উক্ত ক্ষমতাচ্যুত শাসক কে অবশ্যই চুপ থাকতে হবে। অথচ এর সম্পূর্ণ ব্যত্যয় হয়ে দেখা গেছে হাসিনার ক্ষেত্রে। ভারত তার নিজস্ব এজেন্ডা সর্বোপরি বিজেপি তাদের এজেন্ডা পুশ করানোর মুখপাত্র হিসেবে তাকে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশে সম্পূর্ণ ইন্টেলিজেন্স ব্যর্থতার কারণে ভারতের শক্ত খুঁটি ভেঙ্গে গিয়েছে, ঠিক যেমন ইন্টেলিজেন্স ফেলিওর এর কারণে আফগানিস্তান থেকেও পালিয়ে আসতে হয়েছিল ভারতীয়দের। এই অসহনীয় ব্যর্থতা ঢাকতে উঠে পড়ে লেগেছে মোদি সরকার। আর তাদের বিশ্বস্ত হাসিনাকে ব্যবহার করছে মাউথ পিস হিসেবে। অত্যন্ত ভয়ংকর এই খেলা ব্যাক ফায়ার করবে এবং এর পরিণতি কখনোই ভালো হবে না। সেভেন সিস্টার্স অত্যন্ত স্পর্শ কাতর রাজ্য এবং এখানে চিকেন নেক ছাড়া যাওয়া ভারতের জন্য অসম্ভব। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের সাথে একটি হোস্টাইল রিলেশন করে ভারতের কোনভাবেই উপকার হবে না। যেখানে বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছে এবং তিনি অল্পের জন্য জীবন রক্ষা করে ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সেখানে তাকে দিয়ে নতুন করে খেলাধুলা করানোর যে কূট কৌশল বিজেপি তথাপি মোদি সরকার অবলম্বনের চেষ্টা করছে, তা ভারতের জন্য আত্মঘাতী হবে। বিজেপি সরকার চালাতে ব্যাপক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে মোদির এমতো অবস্থায় পুরো বিশ্বের বিভিন্ন ইনডেক্সে ভারত রয়েছে তলানিতে। নির্বাচনের আগে মোদী ভারতকে সুপার পাওয়ার বানানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তার সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটেছে। পররাষ্ট্রনীতি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে মোদি সরকারের। দেশের জনগণের মন জয় করবার আর কোন পথ খুঁজে না পেয়ে এখন ধর্মভিত্তিক উগ্রতাকে উস্কে দিচ্ছে বিজেপি। ভোটের হিসাবে পিছিয়ে থাকা বিজেপি ঘৃণ্য কৌশল অবলম্বন করে দেশের জনগণকে বোকা বানিয়ে যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা টিকে থাকতে চাচ্ছে, অথচ দেশ হিসেবে ভারত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে এই নীতির কারণে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হিন্দু নির্যাতনের যে উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে তা বাংলাদেশী মিডিয়ায় দৃষ্টি রাখলেই ক্লিয়ার হয়ে যায়। শিশু নির্যাতনের প্রমাণিত অভিযোগে বহিষ্কৃত একজন যোগী সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণকে নিয়ে যে নাটক বিজেপি সরকার সাজিয়েছে সে আগুনে হাওয়া দিচ্ছে পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে দিয়ে। মারাত্মক এই খেলা থেকে এখনই সরে না আসলে ভারতের জনগণ বিজেপিকে কখনোই মাফ করবে না। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুফি সাধক খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (র.) এর দরগা নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক সম্পর্কে এই বিশিষ্ট লেখক বলেন, ‘খাজা জি’ ‘সুলতান উল হিন্দ’ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ভারতের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি। যে পরিমাণ মুসলিম ধর্মাবলম্বী আজমীর শরীফ জিয়ারত করতে যান, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা সেখানে যান। ৮০০ বছরের পুরনো এই দরগা ভারতের অন্যতম ব্যস্ততম পপুলার ডেস্টিনেশন। ধর্মীয়ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই স্থান মুসলমানদের জন্য যতটা শ্রদ্ধার অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য কোন অংশে কম নয়। খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (র.) আপামর জনগণের জন্য তার জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন, আজও পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষ এই দরগায় তিন বেলা খায়। কোটি কোটি জনগণ এই দরগা জিয়ারতে আসেন। ভারত ও ভারতের বাইরে গোটা বিশ্বে এমন একটি ভালোবাসায় সিক্ত দরগা পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর, অথচ উগ্র হিন্দুত্ববাদী একটি ভুঁইফোড় সংগঠন ১০০ বছরের পুরাতন একটি বইয়ের রেফারেন্স এনে উটকো মামলা করে দিল কোর্টে আর অমনি উনারাও বলে দিলেন তদন্তের জন্য। কোন ধরনের কোন চিন্তা-ভাবনা করা হলো না যে জনগণের ভেতরে এর কি ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে, আমি আপনাকে ১০০ ভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি এই দরগার গায়ে কোন ধরনের আঁচর দিলে ভারতে অভিসম্ভাবী গৃহযুদ্ধ বেধে যাবে। জনগণের আস্থা ভালবাসা ও অবারিত সম্মানের স্থান আজমীর শরীফ দরগা কোন নির্দিষ্ট ধর্মের বর্ণের লোকের সম্পদ নয়। ‘সুলতানুল হিন্দ’ পুরা ভারতের মাথার তাজ। শিব মন্দির আছে বলে যে মিথ্যা দাবি তোলা হয়েছে তা সর্ব বই প্রহসনমূলক রাজনৈতিক কূটকৌশল। বিজেপি সরাসরি মাঠে না নামলেও তাদের সমর্থিত উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনকে নামিয়েছে এই মারাত্মক খেলায়, যার অভিসম্ভাবী পরিণতি হবে ভারতকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া। দেশকে সম্পূর্ণ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়ে ‘পলিটিক্যাল অ্যাডভান্টেজ’ নিতে চায় মোদি। অর্থনীতিতে শোচনীয় পরিস্থিতিতে পতিত হয়ে আমজনতার দৃষ্টি উদ্ভট মিথ্যা বানোয়াট হঠকারী উদ্দেশ্যমূলক এই ইস্যুর দিকে চোখ সন্নিবেশ করতে বাধ্য করতে চায় বিজেপি সরকার। দেশে যদি কোন ধরনের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তার একক দায়িত্ব বিজেপি অমিত সাহা নরেন্দ্র দামোদর মোদি ও তাদের দল বিজেপিকে নিতে হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা