আজ শনিবার | ৯ আগস্ট ২০২৫ | ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৪ সফর ১৪৪৭ | ভোর ৫:৫৯

না’গঞ্জের সকল খেয়াঘাটে পল্টুন স্থাপনের দাবি

ডান্ডিবার্তা | ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের খেয়াঘাটগুলোতে জনসাধারনের চলাচলের সুবিধার্থে নীচু পল্টুন স্থাপন ও জেটি (নৌকা-ট্রলার পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা) সংস্কারে বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে ধর্ণা দিয়েও সুফল পাচ্ছে না নারায়নগঞ্জাবসী। খেয়াঘাট গুলো ইজারা নিয়ে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করলেও জেটি-পল্টুন সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই ইজারাদার ও সংশ্লিস্ট সরকারী দপ্তরগুলোর এমন অভিযোগ জনসাধারণের। ফলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়ে প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে নদী পাড়াপাড়ে ঘাট ব্যবহারকারীরা। জানা গেছে, ১নং খেয়াঘাট, ৫নং খেয়াঘাট, টানবাজার খেয়াঘাটসহ জেলার প্রায় সকল খেয়াঘাটগুলোতে অপেক্ষাকৃত উচু প্রকৃতির পল্টুন রয়েছে। ঘাট থেকে নৌকা বা ট্রলারে উঠার জন্য ব্যবহত জেটিগুলোও সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জেটি দিয়ে চলাচলের সময় প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ে চলাচলকারীরা। বিশেষ করে বয়:বৃদ্ধ, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের চলাচলের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন খেয়াঘাটের পল্টুন ও জেটি পরিদর্শন করে দেখা যায়, অধিকাংশ জেটিই খুব নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে নির্মিত এই জেটি ব্যবহারের ব্যাপক ঝুকির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, পল্টুনগুলো অপেক্ষাকৃত উচু হওয়ায় নৌকা বা ট্রলারে উঠানামা করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় নদী পাড়াপাড় হওয়া ব্যক্তিদের। এসব বিষয়ে দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের সত্তোর্ধ বৃদ্ধ শহীদুল্লাহ ২০১৯ সাল থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়, জেলা প্রশাসন, ঘাট ইজারাদার এমনকি বিআইডব্লিউটি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানের দ্বারস্থও হয়েছেন। জেটি সংস্কার ও নীচু পল্টুন সংযোজনের দাবিতে এসব দপ্তরে গিয়ে বারবার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পরপর তিনটি পল্টুন নারায়ণগঞ্জ ১নং খেয়াঘাট স্থাপনের জন্য পাঠালেও পল্টুন তিনটি অন্যান্য ঘাটে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিআইডব্লিউটিএ এর নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম পরিচালকের অবহেলাকে দায়ী করেছেন জনস্বার্থে লড়াই করা শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে বিআইডব্লিউটিএ এর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীণ মেয়র আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের তৎকালীণ এমপি সেলিম ওসমান, তৎকালীণ জেলা প্রশাসক, রাজধানী ঢাকার মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ এর প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েছি। চেয়ারম্যান মহোদয় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে নীচু পল্টুন সংযোজনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেন এবং পল্টুন সংযোজনের সুপারিশ করেন। এই সুপারিশের প্রেক্ষিতে প্রথমে ২টি এবং পরে ১টি পল্টুন ১নং খেয়াঘাটের উদ্দেশ্যে পাঠালেও সেগুলো সেখানে সংযোজনে অবহেলা করেন বিআইডব্লিউটিএ এর নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম পরিচালক। তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বার্থকে উপেক্ষা করে ঘাট ইজারাদার, মাঝিসহ অবৈধ সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে আর্থিকসহ নানা সুবিধা নিয়ে জেটি সংস্কার ও পল্টুন সংযোজনে বারবার অবহেলা করেছে বিআইডব্লিউটিএ এর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। এমনকি খোদ বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যানের নির্দেশকেও উপেক্ষা করেছে তারা। তাই দোষী কর্মকর্তা ও ব্যক্তিদের বিচার দাবির পাশাপাশি অনতিবিলম্বে জেলা ও দেশের সকল খেয়াঘাটের জেটি সংস্কার ও উপযোগী পল্টুন সংযোজনের দাবি জানান প্রবীণ ও সচেতন এই নাগরিক। বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরিত আবেদনে শহীদুল্লাহ উল্লেখ করেন, নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের প্রধান নদী বন্দর এবং দেশের অন্যান্য জেলাগুলির সাথে ব্যবসায়িক সম্পৃত্বতা দরুণ নদী পথের গুরুত্ব অপরিসীম। শিল্প সমৃদ্ধ ব্যবসার প্রাণ কেন্দ্র এবং গার্মেন্স শিল্পের জন্য সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী অর্থনৈতিক স্বয়ং সম্পণ ও ঘনবসতিপূন জেলাগুলির অন্যতম। অতি প্রাচীন কাল থেকে এখনো পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ ও শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পারের বন্দর, সোনরাগা, ও আড়াইহাজার উপ-জেলার প্রায় দশ থেকে পনেরো লক্ষ্য শ্রমিক এবং স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন পেশার লোক জন নৌকার বিভিন্ন ঘাট দিয়ে মেঘ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দুর্যোগপূন পরিবেশে নদী পার হইতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে মানুষ মারা যায়। প্রায়ই জেলার স্থানীয় পত্রিকা গুলিতে মৃত্যু সংবাদ শিরোনাম হয়ে আসে। ঘন-বসতিপূন এই জনগোষ্ঠীর নদী পারাপারে বিকল্প কোন ব্যবস্থাপনা না থাকায় দুর্ঘটনায় বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ নিরসনে বি.আই.ডব্লিউ.টি.এ. এর দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভূমিকা পালনে গুরুত্ব অপরিসীম। বন্দর কর্তৃপক্ষ বৃহত্তম জনগণের সুবিধা অসুবিধা ও স্বার্থের সামান্য সহানুভূতি ও সুবিবেচনা প্রদর্শন না করে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত অবৈধ সুবিধা লাভের বিনিময় নৌকার খেয়া ঘাটের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করছে না। ঘাট থেকে নৌকায় উঠা নামার সময় প্রায়ই মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হয়। পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙ্গে জামা কাপড় ছিড়ে যায় এবং শরীরে আঘাত প্রাপ্ত হয়। মাঝিদের স্বেচ্ছাচারিত ও দৌরাত্বপনায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই কারণে নৌকা ডুবিতে মানুষ মারা যায়। ছোট একটি নদী পার হতে দুই টাকার টোল থেকে অতিরিক্ত জোড়পূর্বক দশ টাকা করে আদায় করে বেশী টাকা না দিলে নৌকা ছাড়ে না। কয়েক জন মাঝি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বন্দর উপজেলার মানুষকে জিম্মি করে নদী পারাপারে যে অনাচার অত্যাচার জলুমের রাজত্ব কায়েম করেছে। এই ব্যপারে স্থানীয় বি.আই.ডব্লিউ.টি.এ. এর কতৃপক্ষ মাঝিদের পক্ষ নিয়ে প্রশাসনের বরাদ্দকৃত পল্টুনগুলো ইজারাদারের নিকট থেকে ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে অন্য ঘাটে স্থাপন করে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা