
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
এলিট শ্রেনীর ক্লাব হিসাবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নির্বাচনকে ঘিরে কাঁদা ছুড়াছুড়ি শুরু হয়েছে। প্রার্থীদের সমর্থকরা একের বিরুদ্ধে অপরজন মনগড়া বক্তব্য দিয়ে চলছে। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি এক সময় সন্ত্রাসীদের আনাগোনার কারনে ১৩১ বছরের পুরাতন এই ক্লাবটি ধ্বংস স্তপে পরিনত হয়। ভাংচুর, লুটপাট আর অগ্নিসংযোগের কারণে ধ্বংস প্রাপ্ত ক্লাবটিকে বিভিন্ন সদস্য বসার উপযোগী করে তুলতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। ক্লাব সদস্যদের অনুদানে ও সকলের সহায়তায় নারায়নগঞ্জ ক্লাব আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার পতনের পর ক্লাবটিকে ব্যবহার যোগ্য করার জন্য এম সোলাইমানের নেতৃত্বে বিশেষ সাধারণ সভার মাধ্যমে একটি অন্তর্বতিকালীন কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিকে ক্লাব ব্যবহার উপযোগী, ক্লাবের শত কোটি টাকা লুটপাটের ন্যাপথ্যে তারনভীর আহমেদ টিটুসহ তার সগযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং ক্লাবের লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। অন্তর্বতিকালীন কমিটি লুটপাট ও অগ্নিসংযোগকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কিনা কোন সদস্যই তা জানে না। এমনকি ক্লাবের লুটপাটের সাথে জড়িত এমন অনেক কর্মচারী ক্লাবে বহাল তবিয়তে চাকুরী করে চলেছে। ক্লাবের দুর্নীতি নিয়ে কোন শে^তপত্র কিংবা তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি। শুধু মাত্র নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা ছাড়া আনইগত কোন পদক্ষেপ না দেয়ার পিছনে ভিন্ন কারণ খুঁজছে সাধারণ সদস্যরা। অনেকের ধারণা টিটু বিদেশ পারিয়ে গেলেও তার অন্যতম সহযোগি রামু সাহা ও এস এম রানা দুর থেকে ক্লাবের অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। এছাড়া শামীম ওসমানের অনেক দোসরই নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ব্যবহার শুরু করেছে। যা সাধারণ সদস্যদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করে চলেছে। শামীম ওসমানের অনুসারি তানভির আহমেদ টিটুসহ একাধিক দোসরের নেতৃত্বে গত ১২ বছরে ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে হয়েছে শত কোটি টাকা হরিলুট। ওসমান পরিবারের একচ্ছত্র প্রভাব খাটিয়ে নামে মাত্র নির্বাচন দেখিয়ে পরপর ৫বার সভাপতি হয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে বানিয়েছে ওসমান পরিবারের পৈত্তিক সম্পত্তি। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে ওসমানদের পৈত্তিক সম্পত্তি বানানোর সুবাদে গত ১২ বছর ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটিকে দুর্নীতি আর অপকর্মের আখড়ায় পরিনত করেছে টিটু। ৫ আগষ্টের পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হলে নারায়ণগঞ্জে ওসমান সা¤্রাজ্যেরও পতন হয়। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে তার সাথে সাথে তার দোসর শামীম ওসমান ও তার শ্যালক টিটুও পালিয়ে যায়। দায়িত্ব শূন্য হয় নারায়ণগঞ্জ ক্লাব। গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি থেকে সন্ত্রাসীদের গডফাদার শামীম ওসমানের নেতৃত্বে তার পুত্র অয়ন ওসমান ও শ্যালক তৎকালীন ক্লাবটির সভাপতি তানভীর আহাম্মেদ টিটুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা বের হয়ে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর গুলিবর্ষণ করেছিল। যে কারণে গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালালে ওইদিনই বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডে ভাঙচুর ও ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়। ক্লাবের নির্মাণাধীন ভবনের যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে চেয়ার টেবিল, এসি, ফ্রিজ কম্পিউটারসহ সকল আসবাবপত্র লুট করা হয়েছিল। এমনকি ক্লাব সদস্যদের খাবারও লুট করা হয় এসময়। পরে রাতে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে আবারো আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্দরা। প্রায় ১ মাসের মাথায় ক্লাবটিকে ব্যবহার উপযোগি করতে অন্তবর্তীকালীন পরিচালনা পরিষদ গঠনের পর দায়িত্ব নিলে বেরিয়ে আসতে শুরু করে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নিয়ে সাবেক সভাপতি টিটুর দুর্নীতি আর হরিলুটের চাঞ্চল্যকর তথ্য। যার ফলে ক্লাব সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। জানা যায়, সভাপতি থাকাকালীন সময়ে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু ক্লাবের নতুন ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন খাত দেকিয়ে শত কোটি টাকা লুটপাট করেছে। যার প্রমান ইতিমধ্যে অন্তবর্তীকালীন পরিষদ পেয়েছেন। আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে ক্লাবের এসোসিয়েট মেম্বার ও ১৫০জন স্থায়ী মেম্বার ক্লাব ফান্ডে ১২৮ কোটি টাকা জমা হয়। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবটি আধুনিকায়ন বিল্ডিং নির্মানেও সাবেক সভাপতি টিটু শত কোটি টাকা হরিলুট করেছে বলে প্রমান মিলেছে। ১৫ তলা বিল্ডিং এ মাত্র ৪তলার কাজ শেষ হলে তার জন্য ৭১ কোটি খরচ হয়ে বলে দেখানো হয়। বাকী ৫৭ কোটি টাকা ক্লাব ফান্ডে না রেখে সাবেক সভাপতি টিটুর কাছে রাখা হলে এই ৫৭ কোটি টাকার হিসাব ক্লাবের কাছে নেই বলে জানা যায়। আরো জানা গেছে, ১৩১ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে। তবে শামীম ওসমানের শ্যালক টিটু সভাপতি হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব চলতে থাকে স্বৈরাচারি পদ্ধতিতে সন্ত্রাসী কায়দায়। এই ক্লাবের সদস্যদের সকলেই এলিট শ্রেণির হলেও ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভায় তাদের কথা বলার কোন সুযোগ থাকত না। কোন সদস্য যদি কোন অনিয়মের প্রতিবাদ করতে চাইতো তাহলে তার উপর নেমে আসতো অমানুষিক নির্যাতন। ধীরে ধীরে ক্লাবটি পরিণত হয় অপরাধীদের আখড়ায়। বর্তমানে ক্লাবটি ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে। সদস্যরা চাইছে ঐহিত্যবাহী ক্লাবটি তার হারিয়ে যাওয়া সুনাম ফিরে পাক। সদস্যরা মনে করেন, আগেরমত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে আর রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হবে না। এ অবস্থা সৃষ্টি হলে ক্লাবে একটি শক্তিশালী পরিচালনা পরিষদ নির্বাচিত হবে। তবে নির্বাচনে কাঁদা ছুড়াছুড়ি করে টিটুর সগযোগীদের ছককে বাস্তবে যারা রূপ দিবে সাধারণ সদস্যদের কাছে তারা চিহিৃত হয়ে থাকবেন। কারণ এবারের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলা চলছে। অন্তর্বতিকালীন পরিচালনা পরিষদ সকালে এক সিদ্ধান্ত বিকালে আরেক সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন বির্তকের সৃষ্টি করেছে। যা কোন সদস্যই পছন্দ করছে না।
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯