
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট সোনারগাঁ কাঁচপুর এলাকায় নিহত হয়েছিলেন আশিক মিয়া। ওই ঘটনায় গত ২২ আগস্ট সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা কুলসুম বেগম। মামলায় ২৪নং আসামী সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া। গত ২৫ নভেম্বর বাদী কুলসুম বেগম কোর্টে হলফনামাসহকারে দাঁড়িয়ে কোর্টকে জানান ‘‘সামসুল ইসলাম ভূঁইয়াকে বাদী চিনেন না ও ভুলবশত তাকে আসামী করা হয়েছে এবং পুলিশ যেনো আসামীকে গ্রেপ্তার করিয়া হয়রানি না করে ও চার্টশীট থেকে নাম বাদ দেয়’’। কোর্ট বাদীর এই হলফনামা নথিভুক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অবহিত করার আদেশও দেন। কিন্তু সেই মামলায় গত ৮ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হোন সামসুল ইসলাম ভূইয়া। তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমা-ের আবেদন করা হলে আদালত ১ দিনের রিমা- মঞ্জুর করেছেন। গত মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫নং আমলী আদালতের বিচারক বেলায়েত হোসেনের আদালতে আশিক হত্যা মামলায় সামসুল ইসলাম ভূইয়ার রিমা- শুনানি হয়। শুনানিতে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা বাদীর দেয়া হলফনামার বিষয়টি উত্থাপন করলেও আদালত বিষয়টি আমলে নেননি। আদালত আসামীকে ১ দিনের রিমা-ে পাঠিয়ে আসামীকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। ইতোপূর্বে এ মামলায় আরো অর্ধশত আসামীদের পক্ষে হলফনামা দাখিল করেছেন বাদী। সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল আহসান বলেন, মামলার বাদী কুলসুম বেগম হফলনামা কোর্টে দাখিল করেছিলেন যেখানে অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়াকে মামলা অব্যাহতি দেয়ার কথা বলেছিলেন। সেই সাথে তিনি একজন সিনিয়র আইনজীবী এবং সাংবাদিক। আমরা আদালতে সে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছি। সেই সাথে আমরা তার রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেছিলাম। শুনানী শেষে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। যদিও আইনজীবীরা বলছেন, ফৌজদারী কার্যবিধি মোতাবেক পুলিশের তদন্ত বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন কিংবা হস্তক্ষেপ করা যাবে না। জিআর সেকশনের মামলাগুলো মূলত রাষ্ট্রবাদী মামলা। এখানে এজাহারকারী কিংবা সংবাদদাতা হিসেবে রয়েছেন ভিকটিমের পক্ষে। সুতরাং হফলনামা কোর্টে দাখিল করে এজাহারকারী কিংবা সংবাদদাতা কোনো কিছু দাবি করলেই তদন্তকারী কর্মকর্তা সেটা মানতে বাধ্য নন। তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি মনে করেন কেউ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনবেন। সুতরাং যারা এসব হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় এজাহারকারীকে দিয়ে হলফনামা দাখিল করিয়েছেন সেইসব আসামীদের আইনী প্রক্রিয়া মোকাবেলা করতেই হবে। এজাহারকারী বা সংবাদদাতার হলফনামায় কোনো আসামী চার্জশিট থেকে বাদ যাওয়া কিংবা গ্রেপ্তার থেকে বেঁচে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। অন্যদিকে জানাগেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর গত জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। কোর্টের আদেশে সহ ইতোমধ্যে জেলার সাতটি থানায় এ সংক্রান্ত ৮৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে। এসব মামলাগুলোর বাদীগণ ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা হলেও কার্যত মামলাগুলোতে পছন্দমত আসামী বানিয়েছেন বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের লোকজন। মামলায় আসামি করা হচ্ছে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। ক্ষেত্রমতে বিএনপি নিজ দলের গ্রুপিং দ্বন্ধের জের ধরে নেতাকর্মীদেরও আসামী করা হয়। মামলাগুলো দায়েরে এজাহার তৈরির বিষয়ে কাজ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা, যারা বিএনপির শীর্ষ পদে রয়েছেন, একই সঙ্গে আইন পেশায় জড়িত। এর মূল লক্ষ্য ছিল মোটা অংকের টাকায় আসামিদের জামিন ব্যবস্থা, তাদের পক্ষে তদবির, মামলা থেকে অব্যাহতির অযুহাতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া। পরবর্তীতে ওইসব মামলাগুলো নিয়ে বাদীর হলফনামা বাণিজ্য শুরু হয় আজোবধি। বাদী আসামীদের পক্ষে আদালত হলফনামা দাখিল করে দাবি করছেন ভুলবশত আসামীদের মামলায় আসামী করা হয়েছে। তাদেরকে যেনো গ্রেপ্তার হয়রানি না করে মামলার চার্জশিট অব্যাহতি দেয়া হয়, সেজন্য বাদীর হলফনামা নথিভুক্ত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অবহিত করার আদেশ নেয়া হচ্ছে। আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারাও এমন হলফনামা বাদীকে দিয়ে কোর্টে দাখিল করিয়েছেন। এর বিনিময়ে মামলার বাদী ও বিএনপি পন্থী, বিএনপি নেতারা আসামীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা। আদালত সূত্র আরো বলছে, মামলা দায়েরের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো মামলার বাদী কোর্টে এসে উপস্থিত হয়ে আসামীদের পক্ষে হলফনামা দাখিল করছেন। হলফনামা নথিভুক্ত করা ও আইওকে অবহিত করার আদেশ পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে আসামীদের কোর্টে দাঁড়াতে হচ্ছে না। এই কর্মযজ্ঞের জন্য প্রতিদিনই আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতারা মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য মাস্ক পড়ে কোর্টে এসে বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেন দরবার করছেন। দেন দরবারে মিলমিশ হলে পরেরদিন বাদীকে কোর্টে দাঁড় করাচ্ছে বিএনপির পন্থী আইনজীবীরা। বাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে কেবল বিএনপির নেতাদের। তাই আসামীরা দৌড়াচ্ছেন বাদী ও বিএনপি নেতাদের পেছনে। কেউ কেউ বাদীদের ভিন্ন জেলা থেকে খুঁজে বের করে দেন দরবার করে কোর্টে হলফনামা দাখিল করাচ্ছেন। বাদী নিজে দাঁড়িয়ে কোর্টে ৩০০ টাকার হলফনামাসহ বাদীর আইনজীবীর মাধ্যমে দরখাস্ত দাখিল করে দাবি করেন বাদীর মামলায় আসামীদের ভুলবসত আসামী করা হয়েছে, তাদেরকে বাদ দিতে আর্জি জানায়। আদালত বাদীর দাবি নথিভুক্ত করে তা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অবহিত করার আদেশ দেন। এই হলফনামা দাখিলের নামে আসামীপ্রতি বাদীকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করা হয়। প্রতিটি মামলায় শত শত আসামী আছে। সেজন্য কোনো কোনো দিন বাদী ১০/১২ জন আসামীর পক্ষে পৃথক হলফনামা সহ দরখাস্তও দাখিল করে আদেশ নিয়েছেন।
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯