আজ শুক্রবার | ৮ আগস্ট ২০২৫ | ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৩ সফর ১৪৪৭ | রাত ১১:০৩

জেলা বিএনপিতে যোগ্যরা স্থান পাচ্ছে

ডান্ডিবার্তা | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১২:১০ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির দায়িত্ব থেকে মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও গোলাম ফারুক খোকনকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকেই পরবর্তীতে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে কারা আসবেন এ নিয়ে চলছে নানা কানাঘুষা। নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, যোগ্যতা ও যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে আগামীতে আরও শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে। তাহলে দলের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা শুরু হবে, সেই সঙ্গে দলের প্রতি দায়বদ্ধতা বাড়বে নেতাকর্মীদের। এদিকে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে শক্তিশালী কমিটি গঠনের কোনো বিকল্প নেই। এই মুহূর্তে দুর্বল কমিটি গঠন করা হলে বিএনপিকেই এর খেসারত দিতে হবে। এদিকে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসা নিয়ে বেশ কয়েকজন আলোচনায় রয়েছেন। এর মধ্যে সভাপতি মধ্যে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদের নাম শোনা যাচ্ছে। সভাপতি পদে একাধিক ব্যক্তির নাম শোনা গেলেও সাধারণ সম্পাদক পদে একজনেরই নাম বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। সে হচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব। তবে চুড়ান্ত কমিটিতে কে আসবেন তা সময় সাপেক্ষ ও যাচাই বাছাইয়ের বিষয়। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে অতি শিগগিরই জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হবে বলে জানা গেছে। এর আগে জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হবে এমন শঙ্কা থেকে দীর্ঘদিন ধরেই গুডবুকে নাম উঠানোর চেষ্টা করে আসেন বিএনপির একাধিক নেতা। তৃণমূলের প্রত্যাশা, কোনো স্বজনপ্রীতি করে নয় যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য নেতাদের এই কমিটিতে জায়গা দেওয়া হবে। তাহলে জেলা বিএনপির কমিটি আগের তুলনায় আরও সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি এই কমিটি আগামী কর্মসূচি গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন রাখতে পারবে। তার আগে, গত মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। অতিসত্ত¡র জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হবে। এর আগে, ১৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি আটকে ছিল। ২০২৩ সালের ১৭ জুন জেলা বিএনপির সম্মেলনের পর থেকে দুজনের দ্বারাই জেলা বিএনপি পরিচালিত হয়ে আসছিল। তবে গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে গেলে জেলা বিএনপির কমিটিতে পরিবর্তন আসতে পারে গুঞ্জন শোনা যায়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে তাদের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। দুজনই দলকে সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী করতে কাজ করে যান। যা দলটির হাইকমান্ড অবগত রয়েছেন। এর ফলে পুরষ্কার স্বরূপ তাদের দুজনের উপরই ভরসা করছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। পাশাপাশি তারা দুজনই জেলা বিএনপিকে পরিচালনা করতে সফল। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলে জেলা বিএনপিতে নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা তৈরি হতো এবং দলের মধ্যে আরও শৃঙ্খলা আসতো। এছাড়া নেতাকর্মীরা আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতো। গত ৫ আগস্টের পর সারাদেশের মতোন জেলাজুড়ে বিএনপির একক আধিপত্য বিস্তার করে। বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতাররা জামিনে বেরিয়ে আসায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে শক্তির সঞ্চার ঘটে। সেই সঙ্গে গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে থাকা নেতাকর্মীরাও নিজ নিজ এলাকায় এসে রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা দোর্দÐ প্রতাপের সঙ্গে নিজ এলাকায় শক্তির জানান দিচ্ছেন। ১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রথম সভাপতি হিসেবে আব্দুল মতিন চৌধুরীকে নির্বাচিত করা হয়। একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম। এরপর ১৯৯২ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন রোকন উদ্দিন মোল্লা। রূপগঞ্জের মুড়াপাড়ায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই কমিটিরও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম। তারপর ২০০৪ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় চাষাঢ়স্থ শহীদ জিয়া হলে। এই সম্মেলনে জেলা বিএনপি’র সভাপতি নির্বাচিত হন অধ্যাপক রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক হন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। ওয়ান ইলেভেনের সময় সংস্কারবাদী হিসেবে অধ্যাপক রেজাউল করিমের নাম আলোচনায় থাকায় ২০০৯ সালের ২৫শে নভেম্বর শহরের আলী আহমেদ চুনকা পৌর মিলনায়তনে জেলা বিএনপি’র সর্বশেষ সম্মেলনে তাকে বাদ দেয়া হয়। সর্বশেষ সম্মেলনে তৈমূর আলম খন্দকারকে সভাপতি ও কাজী মনিরুজ্জামানকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাধরণ সম্পাদক করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছরেও তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে না পারায় ২০১৭ সালের ১৩ই ফেব্রæয়ারি জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামানকে সভাপতি ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি আলোর মুখ না দেখায় সাড়ে ৩ বছর পর জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে ২০২০ সালের ৩১শে ডিসেম্বর কেন্দ্র থেকে পুনরায় অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে আহবায়ক ও অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। নির্দেশনা ছিল ৩ মাসের মধ্যে থানা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও এই আহবায়ক কমিটি সবগুলো ইউনিট কমিটি গঠনের কাজ শেষ করতে পারেনি। এর মধ্যে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে মেয়র নির্বাচন করায় তৈমূর আলমকে আহবায়কের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক করা হয় মনিরুল ইসলাম রবিকে। দুই বছরের মাথায় একই বছরের ১৫ই নভেম্বর মনিরুল ইসলাম রবি ও মামুন মাহমুদের আহবায়ক কমিটি ভেঙে দিয়ে কেন্দ্র থেকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে আহবায়ক ও জেলা যুবদলের আহবায়ক গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে ১৭ জুন জেলা বিএনপির সভাপতি হন মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক হন গোলাম ফারুক খোকন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা