আজ শনিবার | ৯ আগস্ট ২০২৫ | ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৪ সফর ১৪৪৭ | রাত ২:১৫

সাখাওয়াত পন্থিদের বিরুদ্ধে আওয়ামী সখ্যতার অভিযোগ

ডান্ডিবার্তা | ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ ও সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের শেল্টার দেওয়ার অভিযোগ প্রকোপ হতে শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহম্মেদ, ছাত্রলীগ নেতা অহিদুজ্জামান, ধামগড় ইউনিয়নের মেম্বার আইয়ুব আলী, ধামগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শরীফ হোসেন সহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাদের নিজ এলাকায় পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠতে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের নিজ দলের নেতাকর্মীরাই এমন অভিযোগ তুলে দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি তুলে আসছেন। তাদের এসব কর্মকাÐে প্রতিবাদে জানিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বয়কট করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা বিএনপির বড় একটি অংশ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহম্মেদ এর মধ্যকার সম্পর্ক বেশ পুরোনো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় মাসুম আহম্মেদ এর সাথে হিরণের সখ্যতার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। যে ভিডিও মাজহারুল ইসলাম হিরণ হাসি মুখে ফুলের তোড়া দিয়ে মাসুম আহম্মেদকে বরণ করে নিতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি পুরোনো হলেও নতুন করে ভিডিওটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বন্দর উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে দেখা যাচ্ছে। এদিকে হিরণ ও লিটনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তাওলাদ হোসেন। ২২ নভেম্বর সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে উপজেলা বিএনপির ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন সহ বিতর্কিত নেতাদের বয়কট করে তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন নেতারা। এমনকি দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষায় উপজেলা সভাপতি হিরণ ও সাধারণ সম্পাদক লিটনকে বয়কটের ডাক দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা বিএনপির একাংশ। ওই বিক্ষোভ সমাবেশে তাওলাদ হোসেন বলেছেন বন্দরের উত্তরাঞ্চলে একজন নতুন দরবেশের আবির্ভাব হয়েছে। তিনি হাদিয়া নিয়ে মাথায় হাত রাখলে আওয়ামী লীগের লোক বিএনপি হয়ে যায়। আমাদের সভাপতি হিরণ সাহেব, সেক্রেটারি লিটন সাহেব এবং জাহিদ খন্দকার এমন কোন ফ্যাক্টরি নাই যা দখল করে নাই। এমনকি মানুষের জায়গা পর্যন্ত দখল করে নিছে। হিরণ সাহেব হাদিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাদের মাথায় হাত দিলেই সে বিএনপি হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা আন্দোলন সংগ্রামে সব জায়গায় ছিলাম। এখন যে অবস্থা কয়েকজন লোকের জন্য আমাদের বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তা আমরা হতে দিতে পারিনা। আওয়ামী লীগের উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম চেয়ারম্যান সে আন্দোলনের সময় জাঙ্গাল থেকে দা নিয়ে মিছিল নিয়ে এসে ছাত্রদের উপর হামলা করেছে। এখন ১৩ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে। দ্বিতীয় হচ্ছে অহিদ, যে অহিদ নির্বাচনের সময় আমাদের নামে মামলা দিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদের উপর হামলা করেছে। শুধু হামলাই নয় অনেকের বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর করেছে। সেই অহিদ এখনো অন্যের ব্রিক ফিল্ড দখলে নিয়ে দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আইয়ুব মেম্বার সহ অনেকে আছেন তারা এখন দিব্যি আরামে চলছে। আমাদের সভাপতি হিরণ সাহেব, লিটন সাহেব, জাহিদ খন্দকাররা টোটাল ফ্যাশন, ইউনাইটেড, জারিন ফ্যাশন সহ এমন কোন কারখানা নেই যেখানে লুটপাট করে নাই। চুনের কারখানার মালিক সাদেক সাহেবকে পারটেক্সের ৩২ শতাংশ জমি দখল করে দিয়েছেন। এখন তিনি হাদিয়ার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের মাথায় হাত দিলেই তিনি বিএনপি হয়ে যাচ্ছে। এ সমস্ত লোকের দ্বারা দলের ক্ষতি হচ্ছে, ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এসব আমরা হতে দিতে পারিনা। আমাদের অভিভাবক নজরুল ইসলাম আজাদ ভাইয়ের প্রতি আহবান রইলো আপনি এসব বিষয় তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবেন। জানা গেছে, অ্যাডভোকেট রহিম নামের একজনের মাধ্যমে ছাত্রলীগ নেতা অহিদুজ্জামানের সাথে হিরণের সমঝোতা হওয়ার পর পলাতক থাকা অহিদুজ্জামান এলাকায় ফিরে এসেছে। এই সমাঝোতার বিষয়টিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির নেতাকর্মীরাই প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও আরো একটি গোপন ভিডিওতে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে তাওলাদ হোসেনকে আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে। সেখানে তিনি হিরণ এবং লিটনের বিভিন্ন মিল কারখানা থেকে চাঁদাবাজি ও জমি দখলের ব্যাপারে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন। ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিনের কাছে এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধামগড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ এর হিরণ সাহেবের সম্পর্ক রয়েছে। সেই সম্পর্কের কারণেই মাসুম এখন এলাকায় রয়েছে। শুনেছি তাকে হত্যা মামলা থেকে বাদ দিতে হিরণ, লিটন এবং জাহিদ খন্দকারের সাথে একটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এছাড়াও টোটাল ফ্যাশনের হাসিব সাহেবের কাছ থেকেও ৮ লাখ টাকা নিয়েছি বলে আমরা শুনতে পেরেছি। পাশাপাশি টোটাল ফ্যাশনের মালামাল এখন হিরণ, লিটন, জাহিদ খন্দকাররাই জোর করে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এসব ব্যাপারে আমরা মহানগরের নেতৃবৃন্দের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত ভাবে জানানো হয়নি। তবে আমরা অচীরেই এসব ব্যাপারে লিখিত আকারে অভিযোগ জানাবো। এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাওলাদ হোসেনের দেওয়া ওই বক্তব্যের ব্যাপারে কিছু বলবো না। তাহলে কি তাওলাদের অভিযোগই সত্য কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সত্য কিনা সেটা আপনারাই খোঁজ নিয়ে দেখেন। এসব বিষয়ে মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে দলীয় নেতাকর্মীদের কেউ আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযোগ জমা দেয়নি। যদি কেউ সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ আমাদের কাছে অভিযোগ জমা দেন। তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমাদেরকে সেন্ট্রাল থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া আছে। যদি কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া তাহলে কমিটি বিলুপ্তি করে দেওয়ার মত আমাদেরকে পাওয়ার দেওয়া আছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা