জেলা বিএনপির বিরোধ তুঙ্গে

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের চিত্র তুলে ধরেছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী। রিয়াদ চৌধুরী তার বক্তব্যে কারো নাম উল্লেখ না করলেও স¤প্রতি কমিটি বিলুপ্ত সহ নানা বিষয়ে তিনি কাদের উদ্দেশ্যে ও ইঙ্গিত করে বক্তব্য রেখেছেন সেটা তিনি পরিস্কার করেছেন। গত শুক্রবার বিকেলে ফতুল্লার শীষমহল এলাকার ইউনাইটেড ক্লাবে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা দোয়া মাহফিল এবং কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বেশকিছু মন্তব্য করেছেন রিয়াদ চৌধুরী। রিয়াদ চৌধুরী তার বক্তব্যে গিয়াসকে ইঙ্গিত করে বলেন, যারা গত ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনে সমগ্র পরিবার মিলে মানুষের সম্পদ লুটপাট দখলদারিত্ব করে, এমনকি কবরস্থানের জায়গাটাও দখল করে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে লেবাশ লাগিয়ে সকল অপকর্ম করেছেন, আর বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে, সেই সকল লোকের কি অবস্থা হয়েছে, আপনারা কিছুদিন পূর্বে দেখেছেন। বাবা যেই পথে গিয়েছে, ছেলেও কিন্তু সেই পথেই গিয়েছে, দল উপলুব্ধ করতে পেরেছে এবং দল তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছিলাম, প্রথম যখন জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো, তখন তাদের অনুগতরা ফেসবুকে বা পত্রপত্রিকায় লিখেছিলেন, পিকচার আভি বাকি হে,। আমরা ভাবলাম আরো যেহেতু কিছু বাকি আছে, নিশ্চয়ই কিছু চমক আসবে। তার কিছুদিন পরে দেখলাম আসলেই একটা চমক, তারা জানতো যে অপকর্ম করছে, পরবর্তীতে দেখলাম জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতা ছিলেন, উনার ছেলে একটি কমিটির দায়িত্বে ছিলেন, উনার কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করে দিছে। কিছু যে বাকি ছিল সেটা পরে দেখলাম। এখন আবার আরেকটা চমকের কথা বলতাছে, সেটা হচ্ছে আগামীতে এমপি হবেন, নমিনেশন নাকি তাদের দল দিয়া দিছে, সে রকম নাকি ইঙ্গিত দিয়া দিছে দল! তবে এখানে নেতাকর্মী ও সাংবাদিক ভাইয়েরা আছেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় আপনাদের একটা কথা বলি, আমরা ঐতিহাসিক ডিআইটি মাঠে একটি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম, সাবেক জেলা বিএনপির কারো সৎ সাহস হয় নাই সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার। আজকেও আমি এখানে বলে যাচ্ছি, আপনারা নিশ্চিত থাকেন, যে সকল লোক জাহাজ কেটে লুটপাট করে, যে সকল লোক দলের দায়িত্বে থেকে কবরস্থান মাদ্রাসার জায়গা দখল করে স্কুলের সাইনবোর্ড লাগায়, যারা ফুটপাট দখল করে, ট্রাক স্টান্ড দখল করে, যারা ঝুটের ট্রাক ছিনতাই করে নিয়ে যায়, তাদেরকে দল এমপি তো দূরের কথা, মেম্বার নির্বাচনেও নমিনেশন দিবে না। কেউ কেউ রাজনৈতিক স্টান্ডবাজি করার জন্য দলের নমিনেশন পেয়ে গেছে বলে প্রচার চালায়। তিনি গিয়াসকে ইঙ্গিত করে আরো বলেন, আমরা মানুষ আমাদেরও ভুলত্রæটি হতে পারে, কিন্তু যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দোহাই দিয়া, কোরআন হাদিসের দোহাই দিয়া, বাটপারি চিটারি মিথ্যা কথা বা অপকর্ম করি নাই। আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে চাই, সে এমপি তো দূরের কথা মেম্বার পদেও নমিনেশন দিবে না বিএনপি। নিশ্চিত থাকেন। এখানে উল্লেখ্যযে, গত ২৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণার কারণ হিসেবে জানানো হয়, জেলা বিএনপির বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। ওই কমিটিতে জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন গোলাম ফারুক খোকন। গত ১ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন গিয়াসপুত্র কাউসার রিফাত। রিফাতের অনুমোদিত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের কমিটিও গত ২৯ জানুয়ারী বিলুপ্ত ঘোষণা করে দেয় কেন্দ্রীয় কৃষকদল। এদিকে অনুষ্ঠানে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চলনায় এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম লিটনের তত্ত¡াবধানে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন শাহাদুল্লাহ’র সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু। প্রধান অতিথি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, সবাই সতর্ক থাকবেন, হাইব্রিড কোন নেতাকে মাঠে থাকতে দিবেন না। এ সকল হাইব্রিডরা ফ্যসিস্ট সরকারের দোসর, এরা গডফাদার শামীম ওসমানের লোক। বিএনপির কোন লোকজন দিয়ে যেনো সাধারন কোন মানুষের ক্ষতি না হয়। ফ্যসিস্ট সরকারে ভোটে সাধারন জনগন ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে বিএনপিকে নীরবে সমর্থন করে গেছেন। তাই এরাই হলো মূল শক্তি। আর আগামীতে আবারো আন্দোলন করতে হবে। বর্তমান সরকারকে আমরা সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি। নির্বাচনের জন্য যতোটুক সংস্কার করা প্রয়োজন ঠিক ততোটুক সংস্কার করে নির্বাচন দিন। আর তা না হলে জনগন আবারো মাঠে নামবে। অনুষ্ঠানে ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান, ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাকির হোসেন রবিন, ফতুল্লা থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আব্দুল খালেক টিপু, ফতুল্লা থানা বিএনপির নারায়নগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি জুয়েল আরমান, ফতুল্লা থানা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মামুনুর রশীদ, ফতুল্লা থানা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকী প্রমুখ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ, প্রচার সম্পাদক বাবুল সরদার, দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম নান্নু, এনায়েতনগর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খাইরুল আলম জসিম, এনায়েতনগর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমীন খোকন, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাধারণত সম্পাদক -আরিফুর রহমান মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খোকা, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আকরাম, ৩নংওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জহির, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম ফারুক, সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ার সহ আরো অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।