
আমিনুল ইসলাম সুজন
‘নির্বাচনের ট্রেন চালু হয়ে গেছে’ – অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ ঘোষণা ১৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। তিনি উপলব্ধি করছেন – দেশের মঙ্গলের জন্য দ্রæত একটা রাজনৈতিক ও স্থিতিশীল সরকার দরকার। কারণ, মবাতঙ্ক, তৌহিদী জনতার নামে উগ্রতা, নারী নির্যাতন, ছিনতাই-ডাকাতি-রাহাজানির কারণে সম্পদ ও প্রাণহানি এবং প্রধান সড়কগুলোতে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীর দাবি আদায়ের আন্দোলনে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। এ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার জাতীয় নির্বাচন আয়োজন। কারণ, সাধারণ মানুষ বহু বছর ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত। আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে তত্ত¡াবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে, চাতুরির আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতা কুক্ষীগত ও জাতিকে বিভাজিত করে। ফলে, বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর বয়কটে ২০১৪ সালে বিনা ভোটে ১৫৩ জন এমপি নির্বাচিত হয়। বাকি ১৪৭ আসনের অধিকাংশে ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে। ২০১৮ সালে অধিকাংশ দল অংশ নিলেও বহুল আলোচিত রাতের ভোট হিসাবে চিহ্নিত হয়। ২০২৪ সালেও আওয়ামী লীগ নিজেরা-নিজেরা নির্বাচন করেছে। সরকার নির্বাচন কমিশন গঠনের পর কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করাসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছেন। কমিশনের প্রধান ও সদস্যগণ বিভিন্ন বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় ধরে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কাজ শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোও প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এছাড়া, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য গঠিত ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের নিকট প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে। বর্তমানে দেশের সবচাইতে বড় দল বিএনপি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবে – এটা অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করে। বিএনপি অতীতে একাধিকবার সরকার পরিচালনা করছে, অতীতের ভুলত্রæটি থেকে তারা শিখেছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। যে কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতেই সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাক্রমে বিএনপি যে ৩১-দফা সংস্কার প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছে তা বাস্তবায়িত হলে দেশে ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। মনে করা হয়, ২৭ ফেব্রæয়ারি বর্ধিত সভার মাধ্যমে বিএনপি নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু করেছে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রæত নির্বাচন আয়োজনের কথা উল্লেখ করেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় ঐক্য সুদৃঢ় রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ইতিবাচক বার্তা প্রদান করেছেন। ফ্যাসিবাদী সময় হতে শুরু করে ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপি’র ইতিবাচক রাজনীতি দলটিকে মানুষের আরও কাছে নিয়ে গেছে। এটা ঠিক, অনেক স্থানে দলের স্থানীয় কর্মীদের চাঁদাবাজি-মারামারি খবর দলটির অস্বস্তি বাড়িয়েছে। তবে শীর্ষ নেতৃত্ব তাৎক্ষণিকভাবে দায়ীদের বহিস্কার করছে, অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে– যা দলটির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছে। রাজনীতির বাইরে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো নিয়ে বিএনপির ইতিবাচক ভূমিকা সাধারণ ভোটারদের আকর্ষণ করেছে। বিশেষ করে, উত্তরবঙ্গের অন্যতম সমস্যা তিস্তা নদীর পানিসঙ্কট নিয়ে পাঁচটি জেলায় দু’দিনব্যাপী বিশাল কর্মসূচি সারাদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। দল হিসাবে জামায়াত সংগঠিত হলেও ভোটের মাঠে বিএনপির চাইতে অনেক দুর্বল। তাছাড়া, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার বিপক্ষে ভূমিকাসহ অতীত কর্মকান্ডের জন্য জামায়াত ক্ষমা চায়নি। দলটি আগে সংস্কার পরে নির্বাচন বললেও তারাই সবার আগে নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। গোলাম আজমের নাগরিকত্ব দেয়াসহ বাংলাদেশে জামাতকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে বিএনপি। সেই বিএনপি’র বিরুদ্ধে গিয়ে জামায়াত শেখ হাসিনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ১৯৮৬ সালে এরশাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, যা তাদের আদর্শবিচ্যুত ও মোনাফেক হিসাবে পরিগণিত করে। ৯৪-সালের পর জামায়াত আবারও আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে বিএনপির বিরুদ্ধে যায়। এটা জামায়াতের আরেক ঐতিহাসিক ভুল, যা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে টার্নিং পয়েন্ট এবং এর উপর ভিত্তি করে ২১-বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (জানাপা) নতুন দল হিসাবে ২৮ ফেব্রæয়ারি তারিখে আত্মপ্রকাশ করে। জানাপা কাউন্সিল করেনি, প্রকাশ্য বা গোপন ভোটের ব্যবস্থা করেনি – কিন্তু নেতৃত্ব নির্বাচন করেছে। নতুন ধারার রাজনীতির আহবান জানিয়ে দলটি পুরনো ধারায় নেতৃত্বে নির্বাচন করেছে। গণমাধ্যমে খবর এসেছে, দর কষাকষির মাধ্যমে ঠিক হয়েছে। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ ¯েøাগান ব্যবহার করা হয়েছে। ভাষার মাসে নিজস্ব ভাষায় তারা কোনও ¯েøাগান পায়নি! তাছাড়া, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত ব্যয়বহুল আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান কোনও রাজনৈতিক দল করেনি। অতীতে কোনও রাজনৈতিক দল সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এ ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য বাসও পায়নি। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব দায় এড়িয়ে বক্তব্য দিলেও তা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বরং যে জেলা প্রশাসন এ অনৈতিক কাজ করেছে সে ডিসিকে তাৎক্ষনিকভাবে বরখাস্ত করা প্রয়োজন ছিল। তাহলে বোঝা যেতো, সরকার এ অনৈতিক কাজকে সমর্থন করেনি। এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এক বিবৃতি দিয়েছে যে, সরকার এ ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না। তাছাড়া, তাদের দু’জন প্রাক্তন সহকর্মী সরকারে রয়েছেন, যারা বিভিন্নভাবে নীতিনির্ধারণীতে প্রভাব বিস্তার করে সুবিধা দিতে পারে। যেমন: উপদেষ্টা আসিফ আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চেয়েছেন – যা প্রকারান্তরে জানাপা’র দাবি। এ দাবির মাধ্যমে দেশের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন পেছানোই মূল উদ্দেশ্য বলে মনে করা হয়। জুলাইয়ে গণআন্দোলনে যারা সহযোগিতা ও সমর্থন জুগিয়েছে – তাদেরকে দলটি দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। মুনতাসির নামের একজনকে নিয়ে জানাপা-র অবস্থান দুর্বল করেছে। একটি ডানপন্থার দল হিসাবে জানাপা নিজেদের তুলে ধরেছে – এতে জামায়াত ও ধর্মভিত্তিক দলগুলোর কিছু ভোট তারা পাবে। কিন্তু তাদের নিয়ে যে আশার সঞ্চার হয়েছিলো, সাম্য, ন্যায্যতা ও প্রগতিশীলতা – তা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে। তাছাড়া, যে আন্দোলনের ছাত্রদের একাংশ জানাপা করল, তাদের আরেক অংশ ছাত্র সংগঠন করেছে। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডেকে এনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেরেছেন। বিভিন্ন জেলায় জানাক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন, পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, পদত্যাগের ঘটনা ঘটছে। এসব কারণে জানাক ও বৈবিছাআ’র তুমুল জনপ্রিয়তায় ধ্স নেমেছে। তার উপর, যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবির আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে – তাদের অনেকে পরে বৈবিছাএ বা শিবিরের পদ পেয়েছে, যা তাদের নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে এদের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নুরুল হক নুরের অধীনে রাজনীতি করেছে, নুরের কাছ থেকে রাজনীতি শিখেছে। নুর ও তার দল গণঅধিকার পরিষদও আন্দোলনে সামর্থানুযায়ী সক্রিয় ছিল। তাছাড়া, ২০১৮ সাল হতে ২০২৪- এ ছয় বছরে ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রলীগ-যুবলীগের মা’র সবচেয়ে বেশি খেয়েছে নুর। কিন্তু নুরের এক সময়ের অনুসারী ছাত্ররা জানাপা গঠনের সময় নুর ও তার দল গণঅধিকার পরিষদেরই ক্ষতি করেছে। নুরের দল থেকে বেশ কয়েকজন নতুন দলে যোগ দিয়েছে, কেউ কেউ আবার ফিরেও গিয়েছে। জানাপা’কে যারা অর্থ দিচ্ছে, তাদের নাম প্রকাশে বিরত থেকেছেন নাহিদ। মানুষের আস্থা অর্জনের সুযোগ হারাল জানাপা ও নাহিদ। তাহলে বিএনপি-জামাত-জাতিয় পার্টি বা পতিত আওয়ামী লীগের সঙ্গে পার্থক্য কী থাকল? সকল দলের জন্যই রাজনৈতিক দলে অর্থ দাতাদের তালিকা প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। কে কত টাকা দিচ্ছে, নগদ অর্থের বাইরে কী সুবিধা দিচ্ছে, তা প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া ইতিবাচক ও আদর্শিক রাজনীতি করছে জোনায়েদ সাকির গণসংহতি। নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনসহ দেশের প্রগতিশীল সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে দল হিসাবে গণসংহতির সক্রিয় অবস্থান রয়েছে। জানাপা যেভাবে প্রশাসন ও গোপনে ব্যবসায়ীদের সহায়তা পেয়েছে বা পাচ্ছে – এমন সহায়তা পেলে বা নিলে সাকি বা নুর-এর দলগুলো আরো শক্তিশালী হবে, সন্দেহ নাই। ইসলাম ধর্ম নিয়ে বেশ কয়েকটি ধারায় রাজনীতি হচ্ছে। জামায়াতের পর ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন অতীতের বেশ কয়েকটি নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়েছে। এছাড়া খেলাফত মজলিশ, বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত ইসলামী ঐক্যজোট প্রভৃতি দল আছে। এসব দলের অরাজনৈতিক প্ল্যাটফরম হেফাজতে ইসলাম আছে। ফ্যাসিস্ট সময়ে হামলা-মামলার পরও বিএনপির সঙ্গে বেশ কয়েকটি ইসলামী দল ঐক্যবদ্ধ ছিল। ২০১৩ সালে হেফাজতের সমাবেশে আক্রমণের পর নেতারা ব্যাপক হামলা-মামলার শিকার হন। এরপর মামলার ভয় বা অন্য কোনও সুবিধার কারণে অনেকটা প্রকাশ্য সরকারের সঙ্গে আপসে চলে যায় হেফাজত। শেখ হাসিনাকে কওমী জননী উপাধি দেওয়া হয়। গত ৪০ বছর জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামী দল পরস্পরবিরোধী রাজনীতি করেছে। সা¤প্রতিক সময়ে জামায়াত অন্যান্য ইসলামী দলের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করছে। জামাতের অবস্থান কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে – তা বুঝতে আরও সময় লাগবে।
বাংলাদেশে বাম দলগুলো বহুভাগে বিভক্ত এবং এ কারণে সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে বামদলগুলোর মতো মানুষ গ্রহণ করেনি। রাশিয়ায় কমিউনিস্ট পার্টির পতনের পর এ দেশের বাম দলগুলো দুর্বল হয়েছে। অন্যদিকে চীনপন্থী বামদলগুলো বড় দলের সঙ্গে জোট করে বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতার অংশীদার হলেও জনভিত্তি পায়নি। জাতীয় পার্টি নিয়ে কী হচ্ছে – পরিষ্কার নয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর অজুহাতে ছাত্ররা মবের মাধ্যমে জাপা’র অফিসে আক্রমণ করে জ্বালিয়ে দেয়। গোল্ডফিশ জাতি ভুলে যায়। ছাত্ররা শিশু ছিল বলে তাদের মনে নাই। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এরশাদ, জিএম কাদেরসহ দলের মূল ও বড় অংশ নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে অনড় ছিল। কিন্তু বাইরের শক্তির ইন্ধনে দেয়াল ভেঙ্গে এরশাদকে অপহরণ করে সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তার বহুল আলোচিত স্ত্রী রওশন এরশাদকে দিয়ে তখন জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে রাখা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচন রাতের ভোট হলেও সে নির্বাচনে অন্যান্য দল অংশ নিয়েছে – তাই জাপাকে এজন্য দোষারোপ করা যায় না। আর ২০২৪ সালেও জাপাকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে – নইলে ২০১৪ সালের মতোই রওশন-কে দিয়ে অপর অংশকে নির্বাচনে নিয়ে যেতো। দলের ভাঙন রোধ করতে জিএম কাদের বাধ্য হয়েই এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দলের চেয়ারম্যান হিসাবে জিএম কাদের দলের ভাঙন রোধের চেষ্টা করেছেন মাত্র – এটাই এখন ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এছাড়া, যারা ১৪ দলীয় জোটে ছিল, তাদের মধ্যে জাসদের হাসানুল হক ইনু ও ওয়ার্কাস পার্টির রাশেদ খান মেনন কারাগারে। এসব দলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরবে কবে, কিভাবে ফিরবে – এটা এখনই মন্তব্য করা দুরূহ। গত চার দশকে দলটির প্রাণভোমরা শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ নেতৃত্বের বড় অংশ পলাতক ও কয়েকজন কারাগারে আটক অবস্থায় মামলায় জর্জরিত। গত সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুন-দুর্নীতি-অপশাসনসহ বিধ্বংসী রাজনীতি তাদেরকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছে। তবে, তাদের প্রায় ৩ কোটির মতো ভোটার রয়েছে। অন্তত, এর অর্ধেক অর্থাৎ দেড় কোটি একনিষ্ঠ ভোটার। গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় একচেটিয়া ভোট রয়েছে। সরকার আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিলে আওয়ামীলীগের অনেক স্থানীয় নেতা জিতে যাবে, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। জাতীয় পার্টির মতো আওয়ামী লীগ নিয়েও সরকার কি চায় – তার পরিষ্কার নয়। অন্তর্বতী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত রাজনীতিতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। কোনও দলই, তা বড় বা ছোট, নতুন বা পুরাতন, জবাবদিহিতার উর্ধ্বে যেন না থাকে। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত যারা তারা যেন কোনোভাবেই সরকারে না থাকে, এটাও স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার জন্য নিশ্চিত করা জরুরি। সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। ছাত্রদের সহযোগীরা সরকারে থেকে গেলে তারা বাড়তি সুযোগ পাবে, যা ইতোমধ্যে তারা পেয়েছে। এ অবস্থায় দ্রæততম সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সবার জন্য সমান ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দ্রত জাতীয় নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়াই হবে সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
লেখক: বিশ্লেষক ও সাংবাদিক
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সাথে সাথে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তার দোসররা কেউবা পালিয়েছে আবার কেউ আত্মগোপনে রয়েছে। বিগত পতিত সরকারের আমলে পেশাদার সাংবাদিকরা সব কিছু দেখলেও কোন কিছুই লিখতে পারতনা। আকাঁরে ইঙ্গিতে কোন কিছু লিখলেই সেইসব সাংবাদিকের উপর খর্গ নেমে […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯