আজ শুক্রবার | ৩০ মে ২০২৫ | ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ২ জিলহজ ১৪৪৬ | দুপুর ১২:২১
শিরোনাম:
খুনি হাসিনার বিচার বাংলার মাটিতেই করতে হবে: মাওলানা মঈনুদ্দিন    ♦     মর্গ্যান স্কুলে দুর্নীতির তদন্তে বাঁধার মুখে ম্যাজিস্ট্রেট    ♦     সুরুচি অয়েল মিলে জোরপূবর্ক গরুর হাট বসানোর চেষ্টা    ♦     মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ আশ্রয় তারাবো    ♦     সোনারগাঁয়ে ছাত্রদলের নামে চাঁদাবাজি    ♦     বৈরী আবহাওয়ায় না’গঞ্জে লঞ্চ চলাচল বন্ধ    ♦     সোনারগাঁয়ে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত    ♦     না’গঞ্জকে বাসযোগ্য করতে চাই    ♦     ওসমানীয় ও শাহ নিজামের দোসর খোকনের ভূমিদস্যুতায় অতীষ্ঠ সাধারণ মানুষ    ♦     না’গঞ্জের নদী খাদকের তালিকায় আ’লীগ    ♦    

আজমেরী ওসমানের ক্যাডাররা প্রকাশ্যে

ডান্ডিবার্তা | ২৯ মে, ২০২৫ | ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দীরে ধীবে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে আজমেরী ওসমানের ক্যাডারা। ৯ মাস পালিয়ে থাকলেও তারা এখন এলাকায় ফিরছে। এতে করে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কারণ তাদের কাছে রয়েছে অবৈধ অস্ত্র। তারা যে কোন সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটাতে পারে। গত বছরের ৫ আগষ্টের আগে নারায়ণগঞ্জে এককভাবে সন্ত্রাসী, ভুমিদস্যুতা, মাদককারবারি সহ সকল ধরনের অপরাধ জগত চালিয়েছে ওসমানীয় সম্রাজ্য তথা ওসমান পরিবার। পুরো শহরে জুড়ে আজমেরী ওসমান ছিলেন সন্ত্রাসীদের গডফাদার। যদিও গডফাদার হিসেবে তারই চাচা শামীম ওসমান সারাদেশে পরিচিতি রয়েছে। এর সাথে তিনিও পিছিয়ে নেই। কিন্তু আজমেরী ওসমান পরিবারের অবৈধ টাকা পয়সা কাকে দিয়ে লেনদেন করতেন কিংবা তাদের ক্যাশিয়ার কে ছিলেন তাকে নিয়ে কোন আলোচনা না থাকলেও স¤প্রতি তাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কেননা আজমেরী ওসমানের পরিবারের ক্যাশিয়ার ছিলেন তারই বাড়ির কাজের বুয়ার ছেলে চাদাঁবাজ রাজু। তার নামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার উপর হামলার কারনে হত্যা মামলা রয়েছে। গত বছরের ৫ আগষ্টে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সদস্য সহ তাদের সম্রাজ্যের সদস্যরা পালিয়ে রয়েছে। তার মাঝে প্রয়াত নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমান পালিয়ে ভারতের কলকাতায় রয়েছে। ইতোমধ্যে তার মদ খাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তবে তার সাথে পারভীন ওসমান নেই বলে জানান একাধিক সুত্র। তবে তিনি ঢাকাতে রয়েছেন বলে জানান বিশ্বস্ত সুত্র। এদিকে অনুসন্ধানে আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পূর্ব গোপালনগরের হাবিবের ছেলে রাজু ছিলেন আজমেরী ও পারভীন ওসমানের ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। সেই সাথে তাদের বাজার সদাই করে দিতেন। যা রাজু নিজেই জানিয়েছেন। তাছাড়া রাজুর মা ছিলেন আজমেরী ওসমান পরিবারের কাজের বুয়া। তাই রাজু সহ তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলে আজমেরী ওসমান পরিবারের অনেক গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে। কিন্তু গত বছরের ৫ আগষ্টের পরে এই রাজু দেশের বাইরে গিয়ে নেপালে অনেক দিন অবস্থান করেন। তবে স¤প্রতি সময়ে তাকে ফতুল্লার যাত্রার মাঠ ইমোজি ফ্যাশনের পাশে শহিদ সাবের বাড়িতে রাজুকে দেখা গেছে বলে জানান একাধিক ব্যক্তি। সেখানে তার বোন ফাতেমা, তার ভাই সালাউদ্দিন, ফাতেমার স্বামী আশরাফ সহ তাদের পুরো পরিবার বসবাস করছে বলে জানান স্থানীয়রা। তবে ২০২৪ সনের ২৩ আগষ্ট কামাল হোসেন বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় শামীম ওসমান, শেখ হাসিনাকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার মো. রাজুকে ৫৪ নং আসামী করে অভিযুক্ত করা হয়। অনুসন্ধানে জানাযায়, আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার রাজুুর মা শিরিন বেগম প্রায় স্বাধীনতার পরেই তাদের পরিবারের সাথে রয়েছেন। বছর দশেক খানিক আগে থেকে পারভীন ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে কাজ নেন। সেই সুবাদে তার ছেলে রাজু, রাজুর ভাই সালাউদ্দিন, মেয়ে ফাতেমার অবাধ চলাচল ছিল আজমেরী ওসমানের বাড়ীতে। একই সাথে আজমেরী ওসমানের নাম ব্যবহার অন্দর মহলে ব্যাপক অপকর্ম চালিয়ে অবৈধ ভাবে টাকা কামিয়ে বিত্তশালী বনে যান। ওসমান সম্রাজ্যের অন্দর মহলের কাছের লোক হওয়ায় বক্তাবলী গোপাল নগর এলাকায় জায়গার ব্যবসার নামে মানুষের জায়গা পছন্দ হলে জোর করে দখল করে নিত এই ভুমিদস্যু রাজু। পারভীন ওসমানের ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত হওয়ায় এই রাজু এলাকায় গড়ে তুলেছিলো ত্রাসের রাজত্ব। সে বক্তাবলীর দুনীতিতে অভিযুক্ত শওকত চেয়ারম্যানকে নিয়ে জায়গা জমিনের বিচার শালিস করতেন। পারভীন ওসমান আজমেরী ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় বালু ব্যবসা, চাদাবাজী, লুটতরাজ চালিয়ে রাতারাতি বিপুল সম্পদের মালিক বনে যায় এই রাজু। একাধিক ব্যক্তি জানান, বিগত সময়ে বিভিন্ন দপ্তরে আজমেরী ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে তদ্বির বানিজ্য চালিয়েছে। মাদক, ভুমিদস্যুতা, চাদাঁবাজি, তদ্বির বানিজ্য রছিল তার টাকার উৎস। তাছাড়া বিভিন্ন শিল্পপতিদের থেকে তার মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করতেন আজমেরী ওসমান। মানুষের জায়গা জোর করে দখল করে রেখে তাদেরকে নামকা ওয়াস্তে অল্প টাকা দিয়ে লিখে নিত। টাকা নিতে না চাইলে ভুক্তভোগিকে ভয় দেখিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হতো। যার জন্য অনেকে বাধ্য হয়ে জায়গা লিখে দিতেন। অনুসন্ধানে আরো জানাযায়, ২০১৩ সনে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বির ছেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে হত্যার পর যখন আজমেরী ওসমানের প্রশাসন অভিযান চালায়। তখন পরের দিন তাদের বাড়ির কাজের বুয়া শিরিন বেগমের বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়। ওসময় শিরিন বেগম ফতুল্লার কাইয়ুমপুর এলাকার মিঠু ভবনের পাশে পুলিশের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাছাড়া তখন প্রশাসনের অভিযানের সময় রাজুর বোন ফাতেমা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রাজুর আপন ভাই সালাউদ্দিন ঝুটের ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যান। কেননা ঝুট ব্যবসার আড়ালে তার মুল কাজ ছিল চাদাঁবাজির রাজত্ব গড়ে তোলা। আমন্ত্রণ কনভেনশনের পিছনে তার রাজুর ভাইয়ের ঝুটের গোডাউন রয়েছে। জানা যায়, ২০২২ সনে পর থেকে রাজুর রাজত্ব বড় পরিসরে গড়ে তোলেন। ২০২১ সনে ফতুল্লায় রাজু সাকসেস গার্মেন্টস নাম দিয়ে ২২ টি মেশিন নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। তখন একটি ফ্লোর ছিল তার। স¤প্রতি বছর খানিক আগে একই ফ্যাক্টরী তার বোন ফাতেমার নামে দিয়ে জেএম ফ্যাশন নাম দিয়ে ১শ’৫০ টিরও বেশি মেশিন নিয়ে চলছে। কিন্তু তাদের ফ্যাক্টরীর নামে মাল শিপমেন্ট করার জন্য এলসি খোলা নেই। তাছাড়া ফ্যাক্টরীর কাগজপত্র বৈধতা নিয়ে রয়েছে ধোয়াশা। তবে বৈষম্য বিরোধীআন্দোলনের পর থেকে রাজুর বোন ফাতেমা ও তার স্বামী আশরাফ মিলে স্থানীয় এক বিএনপি নেতাদের মাসে ২ লাখ টাকা করে দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া রাজুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রয়েছে। অথচ তাদেরকে গ্রেপ্তার করলে ওসমান পরিবারের অনেক গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে। কাইয়ুমপুর এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, সপ্তাহ খানিক আগে রাজুর মা শিরিন বেগম এক লোক নিয়ে পারভীন ওসমানের কাছে গিয়ে দেখা করে আসেন। ওই লোকের পরিবার তাদের সাথে কাজ করতে চান না। অথচ তারা এখনো প্রকাশ্যে দাপটের সাথে চলাচল করে আসছেন। এছাড়া ২৫ মে ফতুল্লার যাত্রার মাঠ এলাকার শহিদ সাবের বাড়ির কেয়ারটেকার হাসমত জানান, রাজু গত রোজার ইদের পরে এই বাড়িতে এসে সপ্তাহ খানিক থেকে চলে যায়। কিন্তু আমাদের অনুসন্ধানে জানাযায়, রাজু ওই নি সেইবাড়িতে ছিলেন। আমাদের প্রতিবেদক চলে আসার পরে তার ৩০ মিনিটের মাঝে রাজু একটি গাড়ি দিয়ে চলে যায়। যার গাড়ি নং ৫৩৫৩, সিরিয়াল নং ১৯। এলাকবাসি জানান, অবৈধ ব্যবসা,লুটপাট করে এলাকায় বহুতল ভবনের মালিক হয়েছে এই আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার সন্ত্রাসী রাজু। এছাড়াও বসুন্ধরায় ৬ নম্বার সেক্টরের নিরাপদ ব্যালীর ৭ম তলায় রয়েছে তার দুটি ফ্ল্যাট। পূর্বাচলে প্রবাসী পল্লিতে ৫টি প্লট রয়েছে রাজুর নামে। একই সাথে পূর্বাঞ্চলের র্জাউকের লেকপাড়ের পাশে নিরপাদ ভ্যালিতে প্লট রয়েছে। তার তেমন কোন ব্যবসা বাণিজ্য নেই অথচ কোটি টাকার সম্পদ ঠিকই আছে। যা নিয়ে রীতিমত অবাক করার মত। অনুসন্ধানে জানাযায়, আজমেরী ওসমানের ক্যাশিয়ার রাজু ফতুল্লার শিবুমার্কেট যমুনা ব্যাংক শাখায় কোটি কোটি টাকা লেনদেন করতেন। কেননা এখানকার যমুনা ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মামুনের সাথে তারা দহরম মহরম সম্পর্ক ছিল। এছাড়া চাষাড়া মডার্ন ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের পাশে যমুনা ব্যাংক শাখাও ব্যাপকভাবে লেনদেন করতেন। এখানা অফিসার রনির কাছে রাজুর স্বাক্ষর করা ৫০ থেকে ১০০ পাতার চেক বই থাকত। সেখানে রনির কাছে গিয়ে বললেই হত রাজু ভাই পাঠিয়েছে তখন টাকা দিয়ে দেয়া হত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানায়, পারভীন ওসমান ও আওয়ামিলীগের প্রভাব দেখিয়ে চাদাবাজি, লুটপাট ও নানান ধরনের অবৈধ ব্যবসা চালাতেন তিনি। বিশেষ করে বক্তাবলী ঘাটে ছিল তার বালুর ব্যবসা, কাশিপুর নরসিংপুর, বক্তাবলী গোপালনগর এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীদের জায়গা জমিন জোর করে দখল করে রাখতেন। পরে ভুক্তভোগিকে তা বিক্রি করতে বাধ্য করতেন। রাজুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তাদের পরিবারের হয়ে বিভিন্ন কাজ করে দিতাম। তার মাঝে আমাকে দিয়ে তারা বিভিন্ন সময় ব্যাংকে টাকা জমা দিতে পাঠাতেন। এছাড়া আমি তাদের বাজার সদাই করে দিতাম। আমি জায়গা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় অনেকের জায়গা হয়তো নিয়েছি। কিন্তু লুটপাট করি নাই। রাজুর বোন ফাতেমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা