
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলের পর চাঁদাবাজও বদল হয়েছে। তবে চাঁদাবাজি বদলায়নি। নতুন মুখ গজিয়ে পাল্টেছে ধরন। মাদক কারবারেও তাই। গত এক বছরে কোনো মাদক কারবারি এ কারবার ছেড়ে দিয়েছে- এমন তথ্য নেই; বরং এ সেক্টরে পুরনোদের সঙ্গে নতুনদের সম্মিলন ঘটেছে। অথচ জন-আকাংক্ষা ছিল ক্যান্সারের মতো ভর করা এ দুই আপদ থেকে মুক্তির। সেই লক্ষণও কিছুটা দেখা দিয়েছিল চব্বিশের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সেনাসহ যৌথ বাহিনীর কর্মতৎপরতায়। দীর্ঘদিন ধরে জেঁকে বসা চাঁদাবাজরা হয় গা ঢাকা দিয়েছে, নয়তো এ কাজে দম ধরেছে। একইভাবে মাদক কারবারিরাও। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে নতুন ছন্দ। চাঁদাবাজির অভিযোগ বাংলাদেশে নতুন নয়। তবে গতবছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অনেকে ভেবেছিলেন, এই চক্রের যবনিকা ঘটবে। বাস্তবে তা হলো না। চাঁদাবাজির ধরন বলতে চাঁদাবাজির নতুন নতুন পদ্ধতি বা কৌশলগুলোকে বোঝায়, যা অপরাধীরা ব্যবহার করে। আগে যেখানে সরাসরি শারীরিক হুমকি বা ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হতো, এখন সেখানে অনলাইনে প্রতারণা, সাইবার ক্রাইম বা অন্যান্য সূক্ষ্ম কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। সরকারের চেষ্টা বা আন্তরিকতায় কমতি আছে, তা বলা যাবে না। চেষ্টায় কুলাচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরলে দেখা যায়, এখনো পরিবহনে চাঁদাবাজি হচ্ছে। চাঁদাবাজি হচ্ছে ফুটপাত থেকে। স্বৈারাচারের সময় যেমন চাঁদাবাজি হত এখনো সেই একই নিয়মে চাঁদাবাজি হচ্ছে। শুধু চাঁদাবাজদের হাত বদল হয়েছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মাদক ও চাঁদাবাজি দমন। রাষ্ট্র যদি আন্তরিকভাবে চায়, তবে এটি সম্ভব। শর্ত হলো- আইনের যথাযথ প্রয়োগ, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সমাজভিত্তিক আন্দোলন এবং মানবিক পুনর্বাসন কর্মসূচির সমন্বয়। ইতিহাস গড়ার মতো কাজ এখানেই সম্ভব, যদি নেতৃত্ব দৃঢ় হয় এবং আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা যায়। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, দরকার রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন। বাস্তবতার নিরিখে রাজনৈতিক দলগুলোকে এ সময়ে সেই সদিচ্ছার বাইরে থাকার সুযোগ নেই। বর্তমানে সেনাবাহিনী ম্যাজেস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে মাঠে আছে—এটিও চাঁদাবাজি-মাদক রোখার জন্য একটি আশীর্বাদ। অবশ্য উদ্দেশ্যবাদী মহল বরাবরই ছিল, থাকবেও। তারা জুলাইকে ‘মানি মেকিং মেশিনে’ পরিণত করেছে। আবার অ্যাকশন কড়া হলে হনুমানের লেজে আগুন লাগার মতো দম ধরা বা গাঢাকা দেওয়ার রেকর্ডও আছে। সেই দৃষ্টে শহর-গ্রামাঞ্চল, সর্বত্রই ক্রাশ প্রোগ্রাম নেওয়া যেতে পারে। শুধু আহবান বা পিঠ বোলানোতে এরা দমবে না, তা পরিষ্কার। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা-মাদকের ভয়াবহতা নতুন উদ্যমে বাড়ছে। হাত বাড়ালেই মাদক মিলছে। চাঁদাও আসছে। ইয়াবা, আইস, গাঁজা, ফেনসিডিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন কেমিক্যাল ড্রাগ যুবসমাজকে ক্রমে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। শুধু শহর নয়, গ্রাম পর্যন্ত এই সমস্যার বিস্তার ঘটেছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বেড়ে ওঠা মাদক সিন্ডিকেট, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর জন্যও এক বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে চাঁদাবাজি আজ ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় এক অনিবার্য আতঙ্ক। ছোট দোকানদার থেকে শুরু করে বড় শিল্পপতি, সবাই কোনো না কোনোভাবে চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন। এগুলো শুধু অপরাধ নয়, রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সরাসরি হুমকি। আমাদের সমাজ ও রাজনীতিতে এ দুটি সমস্যা এমনভাবে গেঁথে গেছে, এটি একটি সমাজের জন্য নিঃসন্দেহে অশনিসংকেত। এর বিস্তার ঠেকানোর কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সুধি সমাজ মনে করেন, শুধু আইন করলেই হয় না, কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হয়। মাদক মামলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল কার্যকর করা যেতে পারে। একইভাবে চাঁদাবাজির মামলায় প্রমাণিত অপরাধীদের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রায় ঘোষণার ব্যবস্থা করা জরুরি। বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন অনেক পুরনো। নতুন যুগের মাদক, যেমন- আইস বা কেমিক্যাল ড্রাগের বিরুদ্ধে আলাদা ধারা যোগ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে ‘অবৈধ অর্থ লেনদেন’ প্রতিরোধে সাইবার নজরদারি বাড়াতে হবে। শুধু পুলিশি অভিযান দিয়ে মাদক দমন সম্ভব নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, সামাজিক সংগঠন, সবাইকে যুক্ত করে এক ধরনের সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশে মাদক আজ শুধু আইন-শৃঙ্খলার বিষয় নয়, এটি একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চক্রের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। ইয়াবার চালান সীমান্ত পেরিয়ে আসে, আবার দেশের ভেতরেও নানা স্তরে ‘সুরক্ষা জাল’ তৈরি হয়। চাঁদাবাজির ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যায়। ছোট থেকে বড়, অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল বানিয়ে এই অপরাধীরা কার্যত অপ্রতিরোধ্য। বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনকে যুগোপযোগী করতে হবে। আইস বা নতুন ধরনের সিন্থেটিক ড্রাগের জন্য আলাদা বিধান যোগ করতে হবে। চাঁদাবাজির ক্ষেত্রেও অর্থনৈতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শক্তিশালী করা জরুরি। দ্রুত বিচার আইনের আওতায় মাদক ও চাঁদাবাজির মামলার নিষ্পত্তি করা দরকার। দেরিতে বিচার মানেই অপরাধীদের সাহসী করে তোলা।
হাবিবুর রহমান বাদল বাংলাদেশের গনমাধ্যম এখন স্বাধীন হলেও জুলাই বিপ্লবের পর অনেক মিডিয়া হাউজের মালিকরা নিজেদের স্বার্থরক্ষায় পেশাদার সাংবাদিকদের নানা কায়দায় যন্ত্রনা দিয়ে চলেছে। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় মিডিয়া হাউজগুলির মালিকরা দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ দিচ্ছেন। বিভিন্ন অজুহাতে পেশাদার সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুত আবার কাউকে কাউকে অবসরে যেতে বাধ্য করছে। অতীতে যেসক পেশাদার সাংবাদিক পেশাদারিত্ব বজায় রেখে বছরের পর […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯