আ’লীগের চেয়ে এগিয়ে বিএনপি!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বরাবরের মতই উত্তপ্ততা বিরাজ করে থাকে। কিন্তু আলোচিত এই নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি চলছে কাগজে কলমে। সূত্রমতে, দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামীলীগ ও জাপা। ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশের রাজনীতির সর্ববৃহৎ দল তিনটি। আওয়ামীলীগ স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী। বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষকের প্রতিষ্ঠিত দল। প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি। কাগজে কলমে শক্তিশালী তিনটি দল। তবে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের ভাষ্য ভিন্ন। আওয়ামীলীগ ও বিএনপি আভ্যন্তরিন কোন্দল, নেতায় নেতায় বিভাজনসহ নানা কারণে দল দু’টির সাংগঠনিক অবস্থা নারায়ণগঞ্জে ক্রমশ দূর্বল হয়ে পরছে বলে মনে করেন দল দু’টির তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নারায়ণগঞ্জের চার বারের নির্বাচিত প্রয়াত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাসিম ওসমান থাকাকালীন সময়ে বেশ শক্ত অবস্থানে ছিলো জেলায় জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান। বর্তমানে দলটির দুই জন সংসদ সদস্য থাকলেও জাতীয় পার্টি রয়েছে কাগজে কলমে এমনটাই দাবি জাপার তৃনমূল নেতা কর্মীদের। এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগে বিভাজন এবং মামলা ও রাজপথে নিষ্প্রভ বিএনপি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বৃহৎ এই দল দু’টির বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা খুবই খারাপ অভিমত দল দু’টির তৃনমূল নেতাকর্মীদের। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জানান, দেড়যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আসীন আওয়ামীলীগ। এই নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের জন্ম। কিন্তু দীর্ঘদীন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক অবস্থা খুবই দুর্বল। জেলার ৫টি আসনে তিনটিতে আওয়ামীলীগ ও দুইটিতে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। এছাড়া জেলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নারায়ণগঞ্জ ৪ ও ৫ আসন এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকা। সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর সাথে শামীম ওসমানের দ্বন্ধ নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি অন্যতম একটি বিভাজনের উদাহরন। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের ঐতিহ্যবাহী দুই পরিবারের জন্য নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের রাজনীতি দীর্ঘ দিন ধরে উত্তর ও দক্ষিন মেরুর দুই ভাগে বিভক্ত। এরই রেশ ধরে জেলা ও মহানগরে বিভক্তি। এছাড়া মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন এবং সাধারন সম্পাদক এড. খোকন সাহার নেতৃত্বাধীন মহানগর আওয়ামীলীগ তাদের কার্যক্রম পালন করে উত্তর ও দক্ষিন মেরুর বলয়ের বাইরে। দীর্ঘ কয়েক বছর পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা হলেও সেখানেও শুরু থেকেই বিপত্তি। এখানেও বিভাজন। আওয়ামীলীগের তৃনমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের অভ্যন্তরীন কোন্দলে জন্মস্থানেই আওয়ামীলীগ কোনঠাসা। নেতা আছে কিন্তু নেই কর্মী বাহিনী। ঘুরে ফিরে পরিচিত কয়েকটা মুখ। এছাড়া দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামীলীগের কোন এমপি না থাকায় এখান আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক অবস্থা অনেকটাই নাজুক। অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি কোন্দলের পাহাড়ে অবস্থান করছেন। দলের দুঃসময় চললেও কেউ কাউকে সম্মান দিতে নারাজ। নেতায় নেতায় অনৈক্য। দলীয় কর্মসূচিতে লোকবল সংকট। রাজপথের থেকে ফেইসবুকে এক্টিভ বেশি নেতাকর্মীরা। ব্যানার নিয়ে লড়াই। পুলিশরে সাথে অনুনয় বিনয় করে দুই তিন মিনিটে কর্মসূচি পালন সব কিছু মিলিয়ে এই আছে এই নেই বিএনপি। তবে, সম্প্রতি পুরাতন অবস্থা থেতে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশের লাঠির ভয়ে অনেকটাই ঘরবন্দী অবস্থায় রয়েছে বিএনপির রাজনীতি। বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, বর্তমানে বেশির ভাগ নেতাই ওয়ান ম্যান শো রাজনীতি করছেন। কেউ কেউ ফেইসবুকে ঝড় তুলছেন। আবার কোন কোন নেতা সরকারি দলের সাথে আঁতাত করে রাজনীতি করছেন। আবার অনেকে রাজপথে নামছেন। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। পুলিশের সামান্য বাধাঁয় থমকে যায় তাদের কর্মসূচি। বিএনপির তৃনমূলের নেতাকর্মীদের মতে, নেতাদের সকলকে মান অভিমান ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। অন্যথায় এই জেলায় বিএনপি বলে কোন দল ছিল এ কথাও মানুষ বলবে না। অন্যদিকে, জেলায় জাতীয় পার্টির দুই জন সংসদ সদস্য থাকলেও সাংগঠনিক ভাবে কার্যক্রমে নেই। জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, দলীয় কার্যক্রম নেই। পার্টি থেকে দুইজন এমপি থাকার পরও সাংগঠনিক অবস্থা আগের মত নেই। প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমান থাকাকালীন জাতীয় পার্টির জৌলুস ছিল। বর্তমানে তা নেই বললেই চলে।
