আজ রবিবার | ২২ জুন ২০২৫ | ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | ২৫ জিলহজ ১৪৪৬ | সন্ধ্যা ৭:৫৮

বক্তব্যে উত্তাল না’গঞ্জ!

ডান্ডিবার্তা | ১০ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ততা বিরাজ করছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে। মাঠের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ক্ষমতাসীনদলের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যকে কাউন্টার দিয়ে পাল্টা বক্তব্য দিচ্ছে। অপরদিকে ক্ষমতায় থাকা জনপ্রতিনিধিরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আল্টিমেটাম দেয়াসহ সন্ত্রাসমুক্ত শান্ত নারায়ণগঞ্জ গঠনে হার্ডলাইনে রয়েছেন। অপরদিকে ক্ষতাসীনদলের মধ্যে দীর্ঘদীন ধরে চলে আসা দলীয় কোন্দলের বিষয়টিও প্রভাবশালী রাজনীতিবীদদের বক্তব্যে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। এদিকে রাজনীতিবীদদের মধ্যে চলমান উত্তপ্ত বক্তব্য প্রধানে একদিকে যেমন রাজনৈতিক ময়দান উত্তপ্ত হচ্ছে অপরদিকে ঝিমিয়ে থাকা নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিও প্রানচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। মূলত দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিবীদরা কৌশলে তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় সাংসদ শামীম ওসমান বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জটাকে সুন্দর করতে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য চাই, সাংবাদিকদের সাহায্য চাই, রাজনৈতিক অন্য দল গুলোর সাহায্য চাই, সবার সাহায্য চাই। আমি জানুয়ারী মাসের শেষ দিকে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে একসাথে ডাকবো সবাইকে। উদ্দেশ্য কি? মাদকসন্ত্রাসকে বন্ধ করতে হবে। ভুমিদস্যুতা বন্ধ করতে হবে। আমি এই কাজটা করতে চাই, আপনাদের কাছে হাত জোর করে এই অনুরোধটা করতে চাই। তিনি বিএনপির সমাবেশ নিয়ে বলেন, সেদিন খবর ছিলো আমার কাছে। ওই দিন যে মিছিলটা হবে, ওই মিছিলে এই এলাকারই এক সন্তান বিএনপি করে, তাকে টার্গেট করা হবে। বিএনপির ভেতর থেকেই করবে। এই খবর শুনে আমি নারায়ণগঞ্জ চলে আসছি।  বিএনপির মিছিলের পাশেই আমার গাড়ি নিয়ে বসে ছিলাম। আমাকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলো, আপনার উপর যদি হামলা হইতো? আমি বলছি, হইলে হইতো। আমাকে মাইরা যদি কেও খুশি হইতো, তাইলে হইতো। আমি যদি আগের শামীম ওসমান হই, তাহলে ওই দশ বিশ হাজার লোক আমার সামনে দাড়ানোর ক্ষমতা রাখে না। আমার কাজ ছিলো ওইটাকে ওয়াচ করা। ওনারাও দেখছে আমি বইসা আছি। ওনাদের মিছিল শান্তিপূর্ন ভাবে শেষ হয়েছে, ওনারা চলে গেছেন। আমি শুধু এতোটুকুই বলেছি, যে ভাষাটা একটু সুন্দর করেন। রাজনীতিবিদদের কথা হবে সুন্দর, আপনাদের এরকম কথা বাচ্চাদের উপর কিরকম প্রভাব ফেলবে? তিরি আরও বলেন, আপনার মনে করছেন আপনারা ক্ষমতায় আসবেন আসবেন ভাব, আমি মনে করি আপনারা ক্ষমতায় তো দুরের কথা ক্ষমতার চল্লিশ কিলোমিটারের ভেতরও আপনারা আইতে পারবেন না। এদিকে জেলা বিএনপির এক আলোচনা সভায় ক্ষমতাসীনদলের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানের বক্তব্যের পাল্টা কাউন্টার বক্তব্য প্রদান করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। গিয়াস উদ্দিন বলেন, জেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি হওয়ার পর এখন সরকারি দলের অনেক নেতা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। আমাদের ঐক্য দেখে আমাদের সংগ্রামী চেতনা দেখে তারা ভয় পাচ্ছে। কর্মসূচি গুলোতে আমাদের অংশগ্রহণ দেখে তারা এখন বিচলিত চিন্তিত। তিনি আরো বলেন, এখানকার যারা অনির্বাচিত সংসদ সদস্য এখন তারা পত্রিকার বিবৃতিতে কিছু কিছু কথা বলছেন। তারা বলছেন মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য বা নারায়ণগঞ্জে যাতে মাদক না থাকে সেজন্য তারা দিন তারিখ দিয়ে নামতে চায়। আমার প্রশ্ন থাকবে ১৪ বছর কারা মাদকের ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা সম্পদ আহরণ করে আমাদের সন্তানদেরকে নষ্ট করে আজকে কিসের দিন তারিখ দিয়ে আপনি নামবেন। ১৪ বছর ধরে কি প্রশাসনে বিএনপি ছিল। বিএনপি কি ব্যবসার সম্প্রাসারন ঘটিয়েছে? নারায়ণগঞ্জের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের স্টেডিয়াম অচল। অচল কি বিএনপি করেছে নাকি আপনারা ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে এটি অচল হয়েছে? এছাড়াও দ্বাদশ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে দেখা গেছে ক্ষমতাসীনদলকে। সদরবন্দর আসনের সংসদসদস্য ব্যবসায়ী নেতা একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, বন্দরে পুনরায় সন্ত্রাস বেড়ে উঠেছে। এমন কোনো মানুষ নেই যার কাছে চাঁদা দাবি করা হয় না। কোনো এক খান সাহেব এখানে লুটতরাজ চালাচ্ছেন। আমি কোনো দল বুঝি না। কোনো ভালোবাসা বুঝি না। ছোট ভাই বড় ভাই বুঝি না। বাপ বুঝি। আমি যদি জীবিত থাকি বন্দরের মানুষ গত বছরের যেমন নিশ্চিন্তে ছিল এখনো নিশ্চিন্ত থাকবে। সেলিম ওসমান আরো বলেন, আমি ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি হাম্বা গ্রুপ, ভাই সাহেব গ্রুপ, যদি আপনারা মনে করেন তারা ওসমান পরিবার; ওসমান পরিবারের হাতের পাঁচটা আঙুল সমান নয়। সুতরাং সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কোনো কাজ যদি কেউ করতে আসে আমার বন্দরে আমার নারায়ণগঞ্জে তাহলে সেলিম ওসমানের জীবন গেলেও যাবে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। অপরদিকে, ক্ষমতাসীনদলে দীর্ঘদীনের দ্বন্ধ আর কোন্দল কোনদিনও নিরসন হবে না। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে মেয়র আইভী তার বক্তব্যে ওসমান পরিবারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা আসলে প্রজা। আমরা রাজার রাজত্ব মেনে নিচ্ছি। নিরিহ প্রজা হয়ে সেই রাজত্বে আছি। মাঝে মাঝে মাথাচারা দিয়ে উঠে দুইএকটা কথা বলার চেষ্টা করি। ছোট ছোট দু: কষ্ট বিশাল আকাড় হয়ে গেলে প্রতিবাদ স্বরূপ অনেক কিছু বলে ফেলি। তাছাড়া আপনাদের নেতৃত্ব কর্তৃত্ব মেনে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের মানুষ চলে। ভবিষ্যতে এমনও হতে পারে নারায়ণগঞ্জের রাজধানী কুমিল্লা। নারায়ণগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে ওসমান নগরী। তিনি আরও বলেন, ‘এই যে এত অত্যাচার, অবিচার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আবার রুখে দাঁড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসী। বিভিন্ন ভাবে, কারণ দীর্দিন যাবত একজন রাজা অত্যাচারী হয়ে উঠে, তখন প্রজারা অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠে। সেই শক্তিশালী প্রজা এতোমধ্যেই দেখেছেন নারায়ণগঞ্জে। আজকেও দুএকজন কথা বলেছে। এদিকে নির্বাচনের আগ মুহুর্তে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে কোন্দলের বিষয়টি ভালভাবে নিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহল। দ্বাদশ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে ক্ষমতাসীনদলের মধ্যে কোন্দল নিরসন করা না গেলে এর প্রভাব তৃনমূল কর্মীদের উপর পড়বে এমনকি কোন্দলের কারনে ফায়দা হাছিল করা নিবে বিরোধীপক্ষ। তাই নির্বাচনের আগ মুহুর্তে দলীয় কোন্দল নিরসনে কেন্দ্র যুগোপযুগী পদক্ষেপ নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন তারা। এছাড়াও রাজনৈতিক সূতিকাঘার হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি দীর্ঘদীন ঝিমিয়ে থাকলেও সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন কর্মকান্ড আবারো প্রানচাঞ্চল্য ফিরে আসছে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে। 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা