ছন্নছাড়া মহানগর বিএনপি
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির চেইন অব কমান্ড নেই। তাই তারা রাজপথে নিজেদের তুলে ধরতে পারছে না। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে পিছিয়ে পরার আভাস। তাদের নিজস্ব কোন কর্মী সমর্থন না থাকায় তারা অঙ্গসংগঠনের উপরে ভর করে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। অপর দিকে তাদের মাঝে রয়েছে নানা অনঐক্য যার ফলে মহানগর বিএনপির তৃণমূল নেতাদের দাবি কিছু অভিযোগের কান্ডারীদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া মহানগর বিএনপি শৃঙ্খলা হীনতায় ভুগছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট মহানগর বিএনপির নবাগত কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। তার পর থেকেই কমিটিকে অযোগ্য বলে কমিটি থেকে ১৫ জন বিদ্রোহী নেতা পদত্যাগ করেন। তার পর থেকেই মহানগর বিএনপি দুইভাবে বিভক্ত হয়ে যায় এবং দুই পক্ষের ভিতরে পাল্টা কর্মসূচি ও আল্টিমেটামের ও দেখা মিলে। ভাঙ্গনের পর এই ৪ মাসে ও মহানগর বিএনপির দুই গ্রুপ একত্র হাতে পারেনি। তার মাঝে মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি হওয়ার পর থেকেই তাদের দলীয় সকল কর্মসূচিতে তারা কিছুদিন ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু এখন আবার দেখা মিলছে তাদের মাঝে অনঐক্যতার। অপর দিকে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গত বছরের ১৫ নভেম্বর গঠনের পর থেকেই তারা তাদের সকল অঙ্গসংগঠন ও সকল নেতাকর্মীদের একটি চেইন অব কমান্ডের নিয়মে অনেকটাই সুসংগঠিত এবং সকল প্রোগ্রামে বিগত দিন থেকে আরো ব্যাপক ভূমিকা পালন করছেন এবং দলকে আরো শক্তিশালী করার জন্য তারা নিয়মিত নানা আলোচনা করে যাচ্ছেন এবং তারা এ বছর চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই চালু করে দিয়েছে। কিন্তু মহানগর বিএনপি তারা হঠাৎ অগোছালো অবস্থায় চলে গিয়েছে। আগের মতো সকল কর্মসূচিতে তাদের কর্মদক্ষতা কমে গেছে। এবং তাদের নিজস্ব কোন কর্মীসমর্থন না থাকায় সাখাওয়াত ও টিপু মহানগর বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের ছত্র ছায়ায় পাড় হতে চাচ্ছেন। তবে তাদের থেকে বেরিয়ে গিয়ে বিদ্রোহীরা সুসগঠিত হয়ে রয়েছে। তারা দলীয় কর্মসূচি ঠিকমত পালন করে যাচ্ছে। তাদের দখলে ব্যাপক কর্মীবাহিনী দেখা যাচ্ছে। দলীয় সূত্রে আরো জানা যায়, তারা ধারনা করছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দলের উপরে ভর করেই ক্ষমতায় বহাল থাকবেন। অপর দিকে তাদের নিজস্ব কোন কর্মী সমর্থন না থাকায় তাদের প্রোগ্রামে দেখা মিলে নানা বিশৃঙ্খলার। আবার তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে স্কাইপিতে যে প্রোগ্রাম গুলো করছে সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের বর্তমান নেতৃত্বে থাকা কাউকে সেখানে অংশ গ্রহণ করতে বলা হচ্ছে না। তারা কেন্দ্র থেকে যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাদের নিয়ে তার সাথে কথা বলাচ্ছে বা পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া নতুন বছরে মহানগর বিএনপির ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা ও তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপলেখা নিয়ে ব্যাখা ও বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা সভা এ অনুষ্ঠানটি ছিল তাদের ব্যতিক্রম এক অনুষ্ঠান এই অনুষ্ঠানে ও দেখা দেয় নানা বিশৃঙ্খলার এ অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ কর্মী সমর্থন দ্বারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আলোচনা সভায় অংশ গ্রহণ করেন। আর সভায় যোগ দেওয়ার পরই পরছে টিপুর ধমকের সম্মূর্খে। এই সভায় সব থেকে বড় মিছিল আনা মহানগর যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফের সাথে খারাপ আচরণ করেন এই টিপু তখনই জোসেফ সহ তার সকল কর্মী সমর্থন সভাস্থল ত্যাগ করেন। তখনই দেখা দেয় শূণ্য চেয়ারের ছাড়াছড়ি। এ ছাড়া ও কিছু সংবাদকর্মীদের সাথে দফায় দফায় হট্টগোলের চিত্র দেখা যায় এ আলোচনা সভায়। এ ধরনের বিশৃঙ্খলাকে ঘৃনিত চোখে দেখছে দলের তৃণমূল নেতৃবৃন্দরা। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ভাবছে বর্তমানে দেশে সরকার পতনের জন্য নানা সময় মাসে কয়েকটা কর্মসূচির ঘোষণা দিচ্ছে কেন্দ্র। যার ফলে বেশি প্রোগ্রামের কারণে থিতু হয়ে গেছেন সাখাওয়াত ও টিপু। এ বছর আন্দোলন সংগ্রামের চূড়ান্ত বছর। কিন্তু এ বছরেই তারা বিগত দিন থেকে অনেকটা ঝিমিয়ে পরছে এবং জেলা বিএনপি থেকে মহানগর বিএনপি অনেকটা পিছিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ও দলীয় সিনিয়র নেতাকর্মীর ধারনা সখাওয়াত ও টিপুতে ধ্বংস হচ্ছে মহানগর বিএনপি। এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী নেতা আতাউর রহমান মুকুল বলেন, মহানগর বিএনপির নতুন কমিটিতে যাদের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে তারা অযোগ্য তাদের কোন নিজস্ব নেতাকর্মী নেই তাই তারা অঙ্গ সংগঠনের উপরে ভর দিয়ে রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার পায়তারা করছে। আর আমরা তাদের এ কমিটিকে কখনো গ্রহণযোগ্যতা মনে করি না। আর করবোও না তাই আমরা তাদের কমিটি থেকে পদত্যাগ করে দলকে ভালোবেসে আলাদাভাবে কেন্দ্রীয় ঘোষিত সকল প্রোগ্রাম পালন করে যাচ্ছি। আর মহানগর বিএনপির কিছু বিশৃঙ্খলার কারিদের কারণে দলের শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী নেতা সবুর খান সেন্টু বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নতুন কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কোন নিজস্বকর্মী নেই। আর এ কমিটিটা কোন গ্রহণযোগ্য হয়নি আর কারো সাথে আলাপ আলোচনা করেও দেওয়া হয়নি তাই আজ মহানগর বিএনপির এ অবস্থায় এ কমিটির দায়িত্বটা যদি বর্তমানে ৫ আসনে যাকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হবে এমন কারো হাতে তুলে দেওয়া হতো তাহলে মনে হয় আন্দোলন সংগ্রাম আরো ব্যাপকভাবে পালিত হতো। মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী নেতা হাজী নূরউদ্দিন বলেন, মহানগর বিএনপির যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে আর যাদের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে তারা কখনোই এ ধরনের কমিটি চালানোর যোগ্যতা রাখে না। আর এই কমিটি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব তাদের কোন নিজস্ব কর্মী নেই তারা কমিটি পাওয়ার পরেও অঙ্গ সংগঠনের উপরে ভর দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করছে এবং আগামীতেও করবে। আর তাদের কারণেই নষ্ট হচ্ছে মহানগর বিএনপি। এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী নেতা আব্দুল হামিদ ভাসানী বলেন, মহানগর বিএনপির যে নতুন কমিটি হয়েছে আহ্বায়ক সাখাওয়াত ও টিপু। এই কমিটি দেওয়ার পিছনে অনেক রহস্য আছে। পূর্বে যারা ২০টি ৩০টি মামলা খেয়েছে তাদের এ কমিটিতে রাখা হয়নি। এ কমিটির আহ্বায়ক সাখাওয়াত সাহেবের ১টি মামলা তাই তিনি বুঝে না কমিটি চালাতে কতটা সমস্যা আগে ৮ থেকে ১০টা মামলা খেলে বুঝতে পারবে। মাকসুদুল আলম খোরশেদ কমিশনার তার মামলা হলো ৩২টি। আমার ৯টি আবার ১টা নতুন হয়েছে মামলা আমার নামে। এখন কেন্দ্র তাদের দায়িত্ব দিয়েছে এ কারণে তারা কিছু মামলা খেয়ে পেটটা বরুক। আর মহানগরের সদস্য সচিব টিপু যেখানে যায় সেখানে লিয়াজু করে যায়। শুধু আমি না পুরো নারায়ণগঞ্জবাসী জানে টিপু লিয়াজু করে চলে। আর সাখাওয়াত ও টিপুর কোন নিজস্ব নেতা বা কর্মী নাই। এই টিপু বিএনএফ এর আহ্বায়ক ছিল ও ফ্রিডম পার্টির সদস্য সচিব ছিল। বিএনপি করে এ ধরনের ফাউন্ডেশনগুলোর সাথে থাকা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আর যদি এ মহানগরের কমিটিটা সাখাওয়াত ও খোরশেদকে দিয়ে গঠন করা হতো তাহলে সকল ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা আরো খুশি হতো। আর আন্দোলন সংগ্রাম আরো জোরদার হত। আমি মনে করি এই বছর ব্যাপক একটি আন্দোলন সংগ্রামের বছর আর এ কমিটি অচিরেই ভেঙ্গে নতুন করে কমিটি দেওয়া দরকার। মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী নেতা আবুল কাউসার আশা বলেন, মহানগর বিএনপির যে নতুন কমিটি হয়েছে এটা আমি আগেও বলেছি এখনও বলেছি এটার কোন গ্রহণ যোগ্যতা নেই। এই মহানগর বিএনপির কমিটি হওয়ার পর থেকেই তাদের কিছু কিছু অপরাজনীতি আছে। তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে স্কাইপিতে যে বৈঠক করে সেখানে তারা স্বেচ্ছসেবক দলের কাউকে বলা হয় না। আর যাকে কেন্দ্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাদের নিয়ে পরিচয় করে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও তাদের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা ও এই মহানগরে বিষয়ে কেন্দ্রে জানিয়েছি এবং অন্য আরো অঙ্গ সংগঠনের অনেকের অনেক অভিযোগ রয়েছে তারাও তাদের অভিযোগ কেন্দ্রে জানিয়েছে। আর তারা যেভাবে কমিটি নিয়ে এসেছেন এভাবে কমিটি হয় না। যার কারণে তারা কমিটি এনে বসে রয়েছে কিন্তু কোন কাজ করতে পারছে না।