কুতুবপুর আ’লীগের নেতৃত্ব পরিবর্তনের দবি তৃণমূলের

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট কুতুবপুর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব বয়সের ভারে নূজ্য প্রায়। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির চেয়ে শ্রমিক লীগের কর্মকান্ডেই বেশী সময় ব্যয় করার অভিযোগ দলীয় কর্মীদের। এছাড়া তার বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দলীয় কোন কর্মকান্ডে নেতাকর্মীদের সমবেত করে তার একক নেতৃত্বে কোন মিছিল যোগদান যেন বিরল একটি বিষয়। জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা কাউছার আহমেদ পলাশের জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করেই জসিম উদ্দিন তার রাজনৈতিক অস্থিত্ব টিকিয়ে রেখেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দলের মধ্যে সুবিধা করতে না পেরে এক সময় পদ থেকে পদত্যাগ করে শ্রমিক লীগের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকার ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি। কুতুবপুরের রাজনীতিতে নানা বিরোধের পেছনে তার হাত রয়েছে বলেও স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ। আর এসব অভিযোগের কারনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিলও করেছে বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানাগেছে। যে কারনে তার নেতৃত্ব এখন স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্ন বিদ্ধ। অন্যদিকে, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মানিক চাঁন দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্কীয় হলেও সম্প্রতি সময়ে বিএনপি-জামাতের সরকার বিরোধী আন্দোলনের নামে নাশকতার বিরুদ্ধে তার সরব উপস্থিতি অনেকটা প্রশংসার দাবি রাখে। প্রায় প্রতিদিন দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে নেমে নানা ধরনের কর্মকান্ড করতে দেখা গেছে তাকে। তবে জসিম উদ্দিন ও মানিক চাঁনের রাজনৈতিক দক্ষতার অভাবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চলছে রাজনৈতিক কর্মকান্ড। দলের মধ্যকার এ বিভাজন দূর করতে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না তারা। স্থানীয় কর্মীদের মতে, নেতৃত্বে পরিবর্তন ঘটিয়ে যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টি করে কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি নতুন করে গঠন করা প্রয়োজন। অন্যথায় কুতুবপুর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনে বিরোধ আরো বৃদ্ধি পাবে। এ ব্যাপারে সাংসদ শামীম ওসমানের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনে বিরোধ তীব্র হচ্ছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অনেক নেতা। বিশেষ করে জসিম উদ্দিনের নেতৃত্ব নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিএনপি-জামাত চক্র মাদক বিরোধী কমিটির মাধ্যমে কুতুবপুর আওয়ামী লীগকে যখন ধ্বংসের চেষ্টা করা হচ্ছিল তখনও জসিম উদ্দিনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দলের অনেক নেতা। মাদক নিধনের নামে মাদক বিরোধী কমিটির নেতারা আওয়ামী লীগ নিধনে নেমে দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে একের পর হামলা দিয়ে হয়রানী করাসহ এলাকা ছাড়া করছিল তখনো জসিম উদ্দিন নিরবতা পালন করেছে। কর্মীদের অভিযোগ, কথিত মাদক বিরোধী কমিটির নেতাদের সাথে জসিমের সম্পর্ক থাকায় তিনি নিরবতা পালন করে চলছে। যে কারনে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধ মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোন প্রতিবাদ করেননি তিনি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় দলের অন্যান্য নেতাকর্র্মীদের দেখা গেলেও জসিম উদ্দিনকে দেখা যায়নি। তার বিরুদ্ধে দলের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির অভিযোগ দলীয় কর্মীদের। তাছাড়া কুতুবপুরে বর্তমানে ক্ষমতাসীনদলের রাজনীতি  নিয়ে যখন স্থানীয় আওয়ামী লীগে চরম বিরোধ বিরাজ করছিল তখন জসিম উদ্দিন এ নিয়ে কোন ভূমিকা না রাখলেও তিনি উভয় অনুষ্ঠানে যোগদান করে নেতাকর্মীদের মন রক্ষা করেছে। এ নিয়ে পুরো কুতুবপুর জুড়ে তাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এছাড়া কুতুবপুরের সন্ত্রাসী পরিবার হিসেবে পরিচিত তোফাজ্জলের ভাই সাবেক চেয়ারচেয়ারম্যান গোলাম রসুলকে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করতে উঠে পরে লেগেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে। জসিম উদ্দিনের কোন কর্মী না থাকলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মানিক চাঁনের অবস্থা বিপরীত মুখী। তিনি দীর্ঘদিন রাজনীতিতে তেমন সরব না থাকলে সম্প্রতি তিনি রাজনীতিতে সরব হয়ে উঠেছে। বিএনপি-জামাতের সরকার বিরোধী আন্দোলনে জসিম উদ্দিন বিএনপি-জামাত বিরোধী কোন কর্মকান্ডে ধারাবাহিক ভাবে মাঠে থাকেনি বলে স্থানীয় কর্মীদের অভিযোগ। তবে কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পরিবর্তন করা না হলে কুতুবপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি সাংগঠনিক ভাবে ঘুরে দাড়াতে পারবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষক মহল। জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগের ব্যাপারে জসিম উদ্দিনের সাথে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।