আজ সোমবার | ১৯ মে ২০২৫ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ২০ জিলকদ ১৪৪৬ | রাত ১২:০৭

রাজনীতির গ্যাঁড়াকলে না’গঞ্জ বিএনপি

ডান্ডিবার্তা | ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১:২৪ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট কখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি, কখনো আংশিক কমিটি, কখনো আহবায়ক কমিটি গঠন করে দেয়া হচ্ছে কেন্দ্র থেকে। কিন্তু সম্মেলন আর হয় না। এভাবে কেটে গেছে ১৪ বছর। ফলে জেলা বিএনপির সম্মেলন না হওয়ায় দলের সাংগঠনিক ভীত নড়বড়ে হয়ে আছে। তারউপর রয়েছে শীর্ষনেতাদের মধ্যে মতবিরোধ ও আভ্যন্তরীণ কোন্দল। যেন কেউ কাউকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে নারাজ। এই বিরোধ চরমভাবে প্রভাব ফেলেছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দলের নেতাদের মধ্যে এই বিরোধ চলমান থাকলে ক্ষমতাসীন দলের রোষানল ও গায়েবী মামলায় জর্জরিত হয়ে যাবে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এতে করে সরকার বিরোধী আন্দোলন ও নির্বাচনী প্রস্তুতি মুখ থুবড়ে পড়বে, এমনটাই মনে করছেন বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। দলীয় তথ্যমতে, ২০০৩ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তৈমুর আলম খন্দকার। ওয়ানইলেভেনের সময় সংস্কারবাদী হিসেবে অধ্যাপক রেজাউল করিমের নাম আলোচনায় থাকায় ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর শহরের আলী আহমেদ চুনকা পৌর মিলনায়তনে জেলা বিএনপির সবশেষ সম্মেলনে তাকে বাদ দেয়া হয়। সেই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রয়াত কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। ওই সম্মেলনে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়। ভেঙ্গে ফেলা হয় একটি তোরণ। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং পুনরায় সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে তৈমূর আলম খন্দকার সভাপতি ও কাজী মনিরুজ্জামান নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছরেও তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি। ফলে ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামানকে সভাপতি ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্র থেকে পুনরায় এড. তৈমুর আলম খন্দকারকে আহ্বায়ক ও পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। এবং নির্দেশনা ছিল ৩ মাসের মধ্যে থানা-উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে হবে। এরপর সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা কমিটি গঠনের মধ্যদিয়ে আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব শেষ হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও এই আহবায়ক কমিটি সবগুলো ইউনিট কমিটি গঠনের কাজ শেষ করতে পারেনি। পছন্দের লোককে কমিটিতে স্থান দিতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিংয়ে জড়িয়েছে শীর্ষ নেতারা। এরমধ্যে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মেয়র নির্বাচন করায় তৈমূর আলমকে আহবায়কের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক করা হয় মনিরুল ইসলাম রবিকে। দুই বছরের মাথায় একই বছরের ১৫ নভেম্বর মনিরুল ইসলাম রবি ও মামুন মাহমুদের আহবায়ক কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে কেন্দ্র থেকে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের আহবায়ক গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু জেলা বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষণায় চাপা ক্ষোভ রয়েছে গত ১৩ বছর ধরে যারা আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে নেমে ক্ষমতাসীন দলের হামলা-মামলার শিকার হয়ে কারাভোগ করেছেন। এবং পুলিশের গায়েবী মামলায় জর্জরিত। তাদের শঙ্কা পূর্নাঙ্গ কমিটিতে সুবিধাবাদীরা গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিবে। এছাড়া যারা গা-বাঁচিয়ে আওয়ামীলীগের সঙ্গে আতাঁত করে নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্য ঠিক রেখেছেন তাদের আধিক্য দেখা যাবে আগামী কমিটিতে। যা নিয়ে ক্ষোভ বিরাজমান ত্যাগি নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাছাড়া দুই মাস পেরিয়ে গেলেও জেলা বিএনপির সম্মেলনের কোন আলামত দেখতে পাচ্ছে না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারউপর জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের সিংগভাগ কমিটির সম্মেলন হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।  ফলে নতুন নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি না হওয়ায় সাংগঠনিক অবস্থা নড়বড়ে হয়ে আছে। তারউপর রয়েছে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অনৈক্য। তবে মানঅভিমান ও ভেদাভেদ ভুলে নেতাকর্মীরা ঐক্যবব্ধ হলে আগামী দিনে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল এবং সরকার বিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা হবে। এমনটাই মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির ১নং যুগ্ম আহবায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, নতুন আহবায়ক কমিটির হওয়ার আগে আমরা জেলার ১০টি ইউনিট কমিটির মধ্যে ৫টির সম্মেলন সম্পন্ন করতে পেরেছি। বাকী ৫টির সম্মেলন হওয়ার পর জেলা কমিটির সম্মেলন হবে। জেলা বিএনপির সম্মেলন করার বিষয়ে গত ২ মাসে আহবায়ক কমিটির অগ্রগতি তেমন একটা হয়নি বলে তিনি স্বীকার করে বলেন, আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা বিএনপির সম্মেলন হবে এবং ত্যাগি নেতাকর্মীরা মূল্যায়িত হবে। কারণ সামনে একদিকে আন্দোলন সংগ্রাম অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচন। তাই যতদ্রুত সম্ভব ৫টি ইউনিট কমিটির সম্মেলন শেষ করে জেলা বিএনপির সম্মেলন শেষ করতে হবে। নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হলে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা