আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ১১:০৪

সোনারগাঁ সাব রেজিষ্ট্রারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

ডান্ডিবার্তা | ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

সোনারগাঁ প্রতিনিধি সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো.আলী আজগরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত এক মাস ধরে এ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে যোগদানের পর থেকে তিনি এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলিল লিখকরা। তার অনিয়মের কারনে সরকারের শত শত কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে। তিনি সকল প্রকার দলিলে খাজনা, নামজারি, ডিসিআর ছাড়া দলিল নিবন্ধন করেন না। এছাড়াও তিনি সময় ক্ষেপন করে দলিল নিবন্ধন করায় বিকেল তিনটার পর প্রতি দলিলে অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা করে উৎকোচ নিয়ে থাকেন। এ অনিয়মের সহযোগিতা করেন সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের কেরানী সবিতা রানী দত্ত ও নকল নবিশ অজিত চন্দ্র দাস। সাব রেজিষ্ট্রারের এসব কর্মকান্ডে দলিল লিখক থেকে শুরু করে দলিল দাতা ও গ্রহিতারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিলের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। ফলে সরকার বিশাল অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছেন। জানা যায়, সোনারগাঁ সাব রেজিষ্টার আনম বজলুর রশিদ মন্ডল ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বদলি হওয়ার পর থেকে এ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে কোন সাব রেজিষ্ট্রারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে জমি কেনা বেচা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২২ ডিসেম্বর আড়াইহাজার সাব রেজিষ্ট্রার মো. আলী আজগরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে কয়েকদিনের দলিল জমে থাকার কারনে দলিল নিবন্ধন সংখ্যা দীর্ঘ হয়। তিনি সোনারগাঁ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের প্রথম দিনেই বিকেলে সোনারগাঁ থানা পুলিশের সহযোগিতায় দলিল নিবন্ধন করেন। বিশৃঙ্খলা এড়ানোর অজুহাত দেওয়া হলেও দলিল লিখকদের দাবি তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করার জন্য পুলিশের সহযোগিতা নিয়েছেন। তিনি তিনটার পর কোন দলিল না করার ভয় দেখান। তিনি তার সহকারী ওমেদার হাফেজুর রহমান হাফেজের মাধ্যমে প্রতি দলিলে ৩ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত আদায় করে রাত ১০টা পর্যন্ত দলিল নিবন্ধন করেন। সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ মোতাবেক আরএস রেকর্ড মূলে মালিক হলে দলিল নিবন্ধনে কোন খাজনা, নামজারি ও ডিসিআর লাগবে না। দলিল মূলে মালিক হলে শুধুমাত্র ডিসিআর ও নামজারি জমা ভাগ লাগবে। আমমোক্তার, বিনিময়, বন্টন, দানের ঘোষনা, হেবা ঘোষনা, বিলওয়াজ হেবা, অছিয়ত, ভুল সংশোধন, ঘোষনা পত্র, না দাবি ক্ষেত্রে খাজনা, নামজারি ও ডিসিআর লাগবে দলিল নিবন্ধনে এমন কোন অধ্যাদেশ জারি হয়নি। সাব রেজিষ্ট্রার মো. আলী আজগর অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি নিজের মনগড়া আইন তৈরি করে দলিল লিখক, দাতা ও গ্রহিতাকে চাপিয়ে দিয়েছেন। সাব রেজিষ্ট্রারের নিয়ম মতো কোন দলিল না হলেই তিনি দলিল নিবন্ধনে তালবাহানা শুরু করেন। তার দাবিকৃত টাকা কেরানী সবিতা রানী দত্ত ও নকল নবিশ অজিত চন্দ্র দাসের কাছে জমা করার পর পেন্সিলের মাধ্যমে নাম্বার সংকেত দিলেই তিনি দলিল নিবন্ধন করেন। এতে করে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে দলিল লিখক, দাতা ও গ্রহিতারা। আমির হোসেন নামের এক ব্যাক্তি জানান, ১৭ কোটি টাকার একটি বন্ধকী দলিল নিবন্ধন করতে সাব রেজিষ্ট্রার সরকারী ফি বাদে ওমেদার হাফেজুর রহমান হাফেজের মাধ্যমে অতিরিক্ত এক লাখ টাকা উৎকোচ নিয়েছেন। মানিক মিয়া নামের এক ব্যক্তির অভিযোগ, বায়নারত দলিল বাতিল করার জন্য এক সপ্তাহ ঘুরিয়ে অবশেষে ২৫ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে দলিল নিবন্ধন করেন সাব রেজিষ্ট্রার মো. আজগর আলী। দলিল লিখক আলী হায়দার বলেন, সাব রেজিষ্ট্রার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে এসে আরো বেশি হয়রানী হতে হচ্ছে। তার সংকেত ছাড়া কোন দলিল নিবন্ধন হয়না। সরকারী আইনের কোন তোয়াক্কা না করে তিনি তার মনগড়া আইন তৈরি করে করে হয়রানী করছেন। সোনারগাঁ দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদ সরকারের কাছে সাব রেজিষ্ট্রারের অনিয়ম ও উৎকোচের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, সাব রেজিষ্ট্রার সকল দলিলে এমন করেন না। তবে কিছু কিছু দলিলে এমন সমস্যা সৃষ্টি করেন। সোনারগাঁ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের কেরানী সবিতা রানী দত্ত বলেন, আমি শুধু সিরিয়াল নাম্বার দিয়ে স্যারের কাছে দলিল পাঠিয়ে দেই। ঘুষের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আলী আজগর অভিযোগ অস্বীকার করে বুধবার সকালে সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে সরাসরি কথা বলার জন্য আমন্ত্রণ জানান।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা