
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বর্তমান দেশের প্রেক্ষাপটে মাদকের প্রবনতা এতটাই বেড়েছে যা বলে শেষ করার মত নয়। পরিবার, সমাজ কিংবা দেশ যেটাই বলেন না কেন, মাদকের কড়াল গ্রাসে নিমজ্জিত হয়ে ভুগছে আমাদের আগামী প্রজন্ম। জনপ্রতিনিধি কিংবা পুলিশ প্রশাসন তারা যতই মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেন না কেন তবে সেটা শুধুমাত্র মিডিয়ার প্রচারের জন্য। যদিও পুলিশ বলছে “মাদকের বিরুদ্ধে তারা সবসময় জিরো টলারেন্সে” কিন্তু বাস্তবত মাদকের মাত্রতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে দেশের আগামী প্রজন্মগুলো মেধা তালিকায় “জিরো”তে পরিনত হচ্ছে। এর ফলে মাদকের নেশা আমাদের সমাজকে জোঁকের মতো আকড়ে ধরে রেখেছে। এদের দমনে আইন থাকলেও আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে এসে পুনরায় তারা আগের চেয়ে বেশি দাপটে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের ব্যবসা। বিভিন্ন সময় অভিযানে মাদক স¤্রাট-স¤্রাজ্ঞীদের ধরলেও সব সময়ই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকছে মাদকের গডফাদাররা। আর তাইতো মাদকের স¤্রাট/স¤্রাজ্ঞীদের ধরা হচ্ছে আবার ছেড়েও দেওয়া হচ্ছে। কেন ধরছি কেন ছাড়ছি তা জানি না। তাই ক্রমেই মাদক সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ ও প্রশাসনসহ সমগ্র জাতি। আর এসব কাজে সহযোগিতা করছে অর্থাৎ মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টারদাতা হিসেবে আছেন সমাজের বড় বড় রাগব বোয়ালরা। এমনকি তাদের কাছ থেকে মাসোহারা নিয়ে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে পুলিশ প্রশাসনও সহযোগিতা করে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়। নারায়ণগঞ্জের ৭টি থানা এলাকার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা নারায়ণগঞ্জ সদও মডেল থানা,ফতুল্লা থানা এবং সোনারগাঁ থানাধীন এলাকাগুলো। এ খানে হাত বাড়ালে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ ফার্মেসীগুলোতে পাওয়া না গেলেও জীবন ধ্বংসকারী মাদকদ্রব্যগুলো প্রতিটি পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে ভরপুর। তেমনি সদর উপজেলার ফতুল্লার দাপা-রেলস্টেশন এলাকার এলাকাবাসীর নিকট প্রধান সমস্যার নাম মাদক। পেশাদার মাদক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভিন্ন ভিন্ন পেশার আদলে অনেকেই নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছেন মাদক ব্যবসা। সকল শ্রেনীর পেশাজীবী মহল থেকে শুরু করে জন প্রতিনিধি সহ প্রশাসনের প্রতিটি বিভাগের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তারা দাপা ইদ্রাকপুর-রেলস্টেশনসহ আশপাশ এলাকার মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত থাকলে ও রহস্যজনক কারণে মাদক নির্মূলে পরিকল্পিত ভাবে তারা নিচ্ছেনা কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদক প্রশাসনের নির্লিপ্ততার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা কোন প্রকার রাখ-ঢাক না রেখেই প্রকাশ্যে বিক্রি করছে সকল প্রকার মাদক। মাদক ব্যবসায়ীরা এতোটাই বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে যে মাদক ব্যবসার আধিপত্য বা প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় জড়িয়ে পড়ছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। ডাকাত আজমির গ্রুপ, আলামিন গ্রুপ, ডাকাত শাহিন গ্রুপ, ভাতিজা আলামীন গ্রুপ, সেরু বাবু গ্রুপ, সোর্স পান্না গ্রুপ সহ আরো একাধিক গ্রুপ মাদক ব্যবসা নিয়ে প্রায় সময় জন্ম দেয় সহিংসতার ঘটনা। কয়েকমাস পুর্বে ডাকাত শাহিন গ্রুপ সোর্স পান্না গ্রুপের প্রধান সোর্স পান্নাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে পা। আলামিন গ্রুপ ও ডাকাত আজমির গ্রুপ কয়েক দিনের ব্যবধানে বেশ কয়েক বার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায়। পরে উভয় গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয় ফতুল্লা মডেল থানায়। রেলস্টেশন এলাকায় চার-পাঁচজনের বোবাদের একটি গ্রুপ রয়েছে যাদের নিয়ন্ত্রণে গাঁজার স্পট পরিচালিত হয়ে থাকে। এরা প্রকাশ্যে বিক্রি করছে গাঁজা। শেরু বাবু মুদি দোকানের আড়ালে পাইকারী ভাবে বিক্রি করছে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজা। তার ব্যবসায়ীক অংশিদার সাজ্জাদ বেশ কয়েকদিন পূর্বে ফেনসিডিল ও গাজাঁ সহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। বর্তমানে শেরু বাবু একাই নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের মাদক ব্যবসা। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত বোমা লিপুর ভাই ডাকাত শাহিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে রেল স্টেশন-জোড়পুল এলাকার হেরোইন বাজার। ছোট শাকিল, রাজিব, পিচ্চি সোহেলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে হেরোইনের বিশাল বাজার। ভাতিজা আলামীন নিয়ন্ত্রণ করছে ইয়াবা ট্যাবেলটের বাজার। স্থানীয়বাসীর দাবী, সরকার দলীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, বিশেষ পেশায় জড়িত থাকা ব্যক্তিদ্বয়, প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তা এবং স্থানীয় মাদকাসক্ত পাতি নেতা ও হোমড়া-চোমরাদের যোগসাজশে দাপা ইদ্রাকপুর-রেলস্টেশন এলাকায় গড়ে উঠেছে মাদকের বিশাল সিন্ডিকেট। মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে জেলার আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, মাদক সেবনকারীদের প্রায় ৮৫ শতাংশের বয়স ১২ থেকে ৩৫ বছর। তাদের একটি বিশাল অংশই মাদকদ্রব্য কেনার জন্য টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। ডাকাতি, খুন, ছিনতাইসহ দেশে প্রতিনিয়ত যেসব অপরাধ ঘটে চলছে সেসবের একটি বড় অংশের পেছনেই রয়েছে মাদক। সুধী মহলের অভিযোগ, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতিশ্রুতি নিয়ে যতটা প্রচার করি তার শতকরা দশভাগও যদি বাস্তবে প্রয়োগ করি তাহলে নারায়ণগঞ্জে মাদকের বিস্তার রোধ করা অসম্ভব কিছু না। বিগত প্রায় ৩ বছর পুর্বের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায়,বর্তমানে মাদক নির্মূলে পুলিশের ভুমিকা একেবারেই রহস্যজনক। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পুলিশ কর্তৃক যতটুকু মাদক উদ্ধার করা হয় তার প্রয়ে ৯৯ ভাগ বেশী মাদক উদ্ধার করলে এলিট ফোর্স র্যাব। বিগত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ থাকাকালীন একমাসে যে পরিমানে মাদক উদ্ধার করা হয়েছিলো তা গত তিন বছরে ( এসপি জায়েদুল আলম ও বর্তমান এসপি জিএম রাসেল) সে পরিমানে মাদক উদ্ধার সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ঘুরে দেখা যায়,বর্তমানে মাদক ব্যবসা এতটাই ওপেন সিক্রেট হয়ে দাড়িয়েছে যা কল্পনাতীত। আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা মাদক উদ্ধার কিংবা মাদক বিক্রেতাদের গ্রেফতারের পরিবর্তে উল্টো তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলায় ভাবিয়ে তুলেছে অভিভাবক সমাজকে। তবে অনেকের দাবী যদিও মাঝে-মধ্যে পুলিশ ২/১জন মাদক বিক্রেতাকে আটক করছে সেটাও একটা আইওয়াশ মাত্র। সচেতন মহলের দাবী, পাড়া-মহল্লাগুলো মাদকের প্রবনতা এতটাই বেড়েছে যে, হাত বাড়ালেই সকল প্রকারের মাদক পাওয়া যায় প্রতিটি অলিগলিতে। এক সময় যারা নুন আনতে পান্তা ফুড়ানো তারা এখন ওপেন মাদক বিক্রি করে অট্রালিকা গড়ার পাশাপাশি প্রচুর টাকারও মালিক বনে গেছেন। তাই আমরা আমাদের আগামী প্রজন্মকে রক্ষার জন্য মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের সার্বিক হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯