মদনপুর আ’লীগের পদ বাগাতে ৫ জন মাঠে
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নির্দেশে বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নসহ সিটিথর ওয়ার্ডগুলো গুছাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে জেলা ও মহানগরসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবন্দ। তারই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ২৭নং ওয়ার্ড হতে শুরু করে ২২নং ওয়ার্ড পর্যন্ত ওয়ার্ডভিত্তিক ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন করেছে। ১০ ফেব্রুয়ারী হবে অবশিষ্ট ১৯, ২০ ও ২১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল। সদ্য অনুষ্ঠিত সম্মেলনগুলোতে কোন ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা না হলেও সম্মেলন শেষ করে কেন্দ্রীয় নেতাদের সহযোগিতায় তা সম্পন্ন করা হবে। অন্যদিকে উপজেলার ইউনিয়নগুলোতেও কমিটি গঠন প্রক্রিয়া অচিরেই শুরু করবে দলটি। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে কাউন্সিলরদের তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয়ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্তরা। ৪ ফেব্রুয়ারী কলাগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে ঘিরে দুথদিন আগেই কাউন্সিলরদের তালিকা তৈরির কাজও শেষ করেছে তারা। নতুন তালিকায় কিছু সংখ্যক ত্যাগী এবং প্রবীণ নেতা বাদ পড়ে যাওয়ায় তৃনমূলে নানা আপত্তি-বিপত্তি এবং ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে প্রবীণ নেতারা গত বুধবার বিকেলে প্রতিবাদ সভাও করেছে। এদিকে ধামগড়,মুছাপুর ও বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে ঘিরে পদ প্রত্যাশীদের মত বিরোধের খবর মিডিয়ায় প্রকাশ না পেলেও মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নিয়ে সম্ভাব্য ভাইটাল পদ প্রত্যাশীরা খুব জোড়ে শোরেই মাঠে নেমেছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আলহাজ্ব আক্তার হোসেন ও নাজিম উদ্দিন আহাম্মদের কথা শোনা যাচ্ছে। মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওর্য়াড সদস্য আলহাজ্ব আক্তার হোসেন মোল্লা। ১৯৯৩- ১৯৯৭ সালে ৩নং ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ছিলেন। মৃত লোকমান হোসেন মোল্লার ছেলে আক্তার হোসেন। ১৯৯৮- ২০০১ সাল পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের জয়েন্ট সেক্রেটারি ছিলেন। তার বড় ভাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য ও ওর্য়াড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পারিবারিক ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানের একজন কর্মী হিসেবে ছাত্র জীবন হতে রাজনীতিতে সক্রিয়। অপরজন মদনপুর ইউনিয়নের ২নং ওর্য়াড এলাকার নাজিম উদ্দিন। বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হলেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে রাজপথে থাকলেও রয়েছে গ্রুপিংয়ের অভিযোগ। জেলা আওয়ামীলীগের নেতা আরজু রহমান ভূইয়ার অনুগামী একজন নেতা হিসেবে পরিচিত। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদের অধিকারী হয়েও দল ও সংগঠনের প্রয়োজনে তৈরি করতে পারেনি কর্মী বাহিনী। যার ফলসূর্তিতে ২নং ওর্য়াডে মেম্বার পদে পরাজয় বরন করতে হয়েছে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েও একটি ওর্য়াড নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়ে নিজেই জানান দেন তার সাংগঠনিক ভীত ও নিজ এলাকায় তার অবস্থান বা জনপ্রিয়তা কতটুকু। নাজিম উদ্দিনের ছেলে তরিকুল ইসলাম শাওনের বিরুদ্ধে রয়েছে নারী কেলেংকারী সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা। তরিকুল ইসলাম শাওনের নারী কেলেঙ্কারির এমন ঘটনার ভিডিও রয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এছাড়া এলাকায় একজন উচ্ছৃঙ্খল যুবক হিসেবে পরিচিত শাওন। নাজিম উদ্দিন রাজনীতিতে গ্রুপিংয়ের কাজে এতটাই ব্যাস্ত সময় পার করেছে যেখানে পরিবারের দেখভাল করতে অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে ফ্রন্টলাইনে নাম প্রকাশ পেয়েছে থানা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মহিদ ভূইয়া এবং দলের আরেকজন আব্দুল আজিজ দেওয়ান। দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক বিশ্লেষনে ওই ইউনিয়নের কতিপয় বোদ্ধাদের মতে,হাবিবুর রহমান হাবিব একজন শিক্ষিত, মার্জিত এবং পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ তাতে সন্দেহ নেই তবে মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের মতো একটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি কতটা দায়িত্ব পালণ করতে পারবেন কিংবা নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে সবদিক দিয়ে নিজেকে এডজাষ্ট করতে পারবেন কি না সে ব্যাপারে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। একজন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির ইকোনোমিক্যাল এভিলিটিও থাকা চাই বাধ্যতামূলক। কেননা সভাপতি কেবল সভার সভাপতিত্ব করবেন এতেই কিন্তু দায়িত্ব শেষ নয়। সভাপতির নেতৃত্বে জাতীয় দিবস পালণ, বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী, মৃত্যুবার্ষিকীসহ আওয়ামীলীগের সকল প্রকার দিবস ও কেন্দ্রের নির্দেশিত কর্মসূচী পালণে সচেষ্ট থাকতে হবে। সবকিছু মিলিয়ে একজন সভাপতি হিসেবে সেসব দায়িত্ব পালণে হাবিবুর রহমান হাবিব কতটুকু পালণ করতে পারবেন সেটাই দেখার বিষয়। অন্যদিকে অতি সম্প্রতি এ সংগঠনের(মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ)ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালণ করছেন মহিদ ভূইয়া তার গত কয়েকদিনের কর্মকান্ড পর্যালোচনায়ও অনেক কিছু পরিস্কার হয়ে উঠেছে। এ ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা তার উপরও নির্ভরশীল হতে পারছেননা এমন নিরব গুঞ্জনই শোনা যাচ্ছে সর্বত্রই। দীর্ঘ দিন ধরে আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন না হওয়ার কারণে কোন পদ পদব না পেলেও দলের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছেন আওয়ামীলীগ নেতা আজিজ দেওয়ান। আজিজ দেওয়ান হাস্যোজ্জল একজন মানুষ। শিক্ষা,মেধা-মননে অদ্বিতীয় প্রার্থী। পদের হিসেব মাথায় না রেখে আন্দোলন সংগ্রামে দলীয় যে কোন কর্মকান্ডে তার অগ্রণী ভূমিকা প্রতিনিয়তই পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে নীতি-নির্ধারকদের বিচার বিবেচনায় আজিজ দেওয়ানকে নেতৃত্বের দায়িত্বে দেয়া হলে মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগকে নিঃসন্দেহে তিনি মডেল সংগঠনে রূপান্তরিত করবেন বলে এমনটাই মনে করছে স্থানীয় কাউন্সিলরদের অনেকেই। মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কাউন্সিল নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে ভবিষ্যতে চরম মাশুল গুনতে হবে। মদনপুর ইউনিয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক এ ইউনিয়ন পরিষদের উপর দিয়ে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সাংগঠনিক গতিশীল করার মন-মানসিকতা থেকে। মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কাউন্সিলের দিকে এখন সকলের দৃষ্টি।