আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ১১:১৮

উত্তাল না’গঞ্জের রাজনীতি!

ডান্ডিবার্তা | ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট রাজনৈতিক সূতিকাঘার ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি ১ বছর। এরই মধ্যে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে রাজপথের মিছিল-সমাবেশ নিয়ে প্রায়ই সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটছে। গত বছরের জুলাইয়ের শেষভাগে পুলিশের গুলিতে শাওন নামে এক যুবদল কর্মী নিহত হয়েছে এবং আহতের সংখ্যা অনেক। এ অবস্থায় আবার দুই দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের পারস্পরিক হুমকি-ধমকিসহ উস্কানিমূলক বক্তৃতায় নাগরিক সমাজে উদ্বেগ ও শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। সূত্রমতে, বিএনপি সভা-মিছিল বের করলেই বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগ কর্মী ও পুলিশ হামলা চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। অনেকের নামে মামলা হয়। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ নেতারা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধ-কোন্দলের পাশাপাশি দলটি সরকারবিরোধী আন্দোলনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে বলে পুলিশ স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলার ব্যবস্থা নিচ্ছে শুধু। এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে বিএনপি নেতারা অবশেষে কর্মীদের ‘আত্মরক্ষার জন্য’ লাঠি নিয়ে মিছিলে নামতে আহ্বান জানান। এবং তা ঘটতে থাকায় উত্তেজনা ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি বাড়ে। সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থানে জুলাইয়ের শেষ থেকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছিল। ওই সময় থেকেই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিসহ জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে সরকারবিরোধী প্রধান দল বিএনপি ও তার মিত্ররা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারাও ‘আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না-এমন ঘোষণা দিয়ে এ আন্দোলনকে কঠোর হস্তে প্রতিহত করা হবে বলে জানিয়ে আসছিলেন। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ইস্যুতে জুলাই থেকে বিএনপি সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি। সরকারি দল ও পুলিশের অব্যাহত হামলা-মামলার মুখে কোণঠাসা হলেও বিএনপি নেতাদের পাল্টাপাল্টি হুংকার-হুঁশিয়ারিও থেমে নেই। জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পালনে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিলেও দলটির অন্যান্য পর্যায়ের নেতারা ‘হামলা হলে’ ‘পাল্টা প্রতিরোধ’-এর ঘোষণা দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের সাহস জোগাতে সরকারি দলের ‘খেলা হবে’ বক্তব্যের জবাবে ‘পাল্টা খেলা হবে’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন। নিজেদের নিরাপত্তায় ‘বাঁশের লাঠি’ হাতে নিতে বলেছেন কেউ কেউ। বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের খালি হাত, আপনারাও খালি হাতে আসেন। পুলিশ ছাড়া আসেন। দেখি, কার কত ক্ষমতা! আর যদি বলেন লগি-বৈঠা সেটাও সই। আমরা নিয়ে আসব।  মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.সাখাওয়াত হোসন খাঁন নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আন্দোলনের প্রস্তুতি ম্যাচ চলছে। ফাইনাল খেলা এখনও শুরু হয়নি। এর পর মোটা মোটা বাঁশের লাঠি নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। কাউকে আঘাত করার জন্য নয় বরং চলমান আন্দোলনে নেতাকর্মীদের আত্মরক্ষার জন্য রাখতে। আঘাত এলে তো পাল্টা আঘাত করতেই হবে। এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আঃ হাই বলেন, আওয়ামী লীগ তো কোথাও হামলা করছে না বরং বিএনপিই সারাদেশে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। তারা এমনকি পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়ে উস্কানিমূলক অপতৎপরতা চালাচ্ছে। প্রসঙ্গত, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এদিন মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশমুখে সমাবেশ ও পাড়া-মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। একইদিন দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এছাড়া দলগুলোর কেন্দ্রীয় নেতাদের পালটাপালটি বক্তব্য ঘিরেও জনমনে নানা উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল। এ কারণে ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সব্বের্চ্য সতর্কবস্থায় দেখা গেছে। মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় ঐ দিন পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।  বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যদি ঘটে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজনৈতিক দল এ ধরনের সমাবেশকে কেন্দ্র করে জনমনে ভীতি সৃষ্টি না করে সেই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে এর দায় নিতে হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেই ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে ছিল নারায়ণগঞ্জের আইনশৃংখলা বাহিনী।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা