আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ১১:২৭

চেইন অব কমান্ড নেই যুবদলে

ডান্ডিবার্তা | ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলে নেই চেইন অব কমান্ড। গত বছরের মে মাস থেকে শুরু হওয়া একের পর এক অভিযোগ আর বিতর্কের জালে আটকে ছিল মহানগর যুবদলের শীর্ষ দুই নেতার নাম। অভিযোগ ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছেছে খোদ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে। তবুও নানান কায়দা কসরত করে এখনও সেই কলঙ্কের বোঝা নিয়েই টেনে হিঁচড়ে চালানো হচ্ছে মহানগর যুবদল। গত বছরের মে মাসেই অভিযোগ উঠে টাকার বিনিময়ে পদ দেয়ার কথা। অনেকটা টাকা দেন, পদ নেন এমন চুক্তিতে পদের লেনদেন শুরু হয়। একই নেতা বা কর্মীর কাছে একাধিকবার টাকা চাওয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়া নিষ্ক্রিয়দের পদায়ন করারও অভিযোগ উঠে শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে। এসব নিয়ে স্থানীয় নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে কমিটি গঠনের পরপরেই চৌরাঙ্গি পার্কে ইফতার আয়োজনকে ঘিরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা এবং নেতাদের আনা নেয়া বাবদ চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে। সেই বছরের ২৮ জুন সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টার মধ্যে কেন্দ্রীয় যুবদল নেতৃবৃন্দের হাতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য ৮১ সদস্য বিশিষ্ট প্রস্তাবিত কমিটির খসড়া তুলে দেয়া হয়। এখান থেকেই কমিটি যাচাই বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হবে। তবে গোপনে কমিটি দাখিল করায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বাকি ৩ যুগ্ম আহবায়কের মাঝে। তাঁরা বলছেন, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যেই নিয়ম মানার কথা ছিল তা মানা হয়নি। সেসময় মহানগর যুবদলের সদস্য বা পদে আসীন করার প্রতি পদে ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকারও বেশি লেনদেন করার অভিযোগ উঠে। আর এতে নেতৃত্ব দেন আহবায়ক ও সদস্য সচিব। দলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছিলেন, কমিটিতে পদ দেয়ার জন্য বাসায় বাজার করে দেয়া, খাসি কেনার টাকা, নেতাকে ভাড়া করে আনার টাকা, হাত খরচ, যাতায়াত খরচসহ নানান উপায়ে টাকা নিয়েছেন দুই নেতা। ফোনের উপর ফোন দিয়ে কমিটিতে পদ চায় কিনা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগ্রহ প্রকাশ করলেই তাকে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে সেই পদের মূল্য। এরপর ধরাধরি করে পদে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাকে। এই ঘটনা প্রকাশ পাবার পরে বেশ কিছুদিন দৌড়ঝাঁপ চলে আহবায়ক ও সদস্য সচিবের। তবুও কমেনি বাণিজ্য। উল্টো বাণিজ্যকে আড়াল করে নিষ্ক্রিয়দের ত্যাগী বানাতে অলিগলিতে কর্মসূচি ও ফটোসেশন করে যুবদলের নেতারা। এর কিছুদিন পরে ৮১ সদস্যের কমিটি বাতিল করে পুনরায় ৭১ সদস্যের কমিটি প্রস্তুত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। সেবারও যুগ্ম আহবায়কদের উপেক্ষা করে কমিটি জমা দেয়ার চেষ্টা চলে। যুগ্ম আহবায়কদের সাথে সমন্বয় না করা এবং তাদের আড়াল করে একাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালাতে থাকে আহবায়ক ও সদস্য সচিব। বছরের অক্টোবর মাসে ৮১ এবং ৭১ সদস্য বিশিষ্ট থেকে কমিয়ে ৩১ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিলে আকাশ ভেঙ্গে পড়ে আহবায়ক ও সদস্য সচিবের। যেসব নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেয়া হয়েছে তাদের অন্তর্ভুক্তি করতে না পেরে মাথায় হাত পড়ে তাদের। বিষয়টি নজর এড়ায়নি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নারও। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, স্বেচ্ছাচারী কায়দায় কোন কমিটি করতে দেয়া হবে না। একই সময়ে আহবায়ক মন্তু ও সদস্য সচিব সজলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আপত্তি প্রকাশ করার স্ক্রিনশট প্রকাশ পায় গণমাধ্যমে। সেখানেও উঠে আসা যদু মদুকে কমিটিতে ঢোকানোর চেষ্টা এবং পদ পদবী নিয়ে ধান্ধাবাজি করা। সর্বশেষ নভেম্বর মাসে মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মুছা কেন্দ্রীয় যুবদলে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেন। সেখানে পদ বিক্রি, বাণিজ্য এবং স্বৈরাচারী কায়দায় দল চালানোর অভিযোগ আনেন মন্তু ও সজলের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করতে পারেনি মন্তু ও সজল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই মুহূর্তে কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে আহবায়ক কমিটি গঠন করাই সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। প্রায় প্রতিটি কমিটি গঠনের পূর্বেই বিতর্কে জড়িয়েছে আহবায়ক ও সদস্য সচিব। যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাঁরাও বিতর্কিত। ফলে তাদের দ্বারা কোন কমিটি দেয়া হলে তা প্রশ্ন তৈরি করে যাবে। ফলে যেকোন উপায়ে এই কমিটি বাতিল করে যোগ্যদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেয়াই হবে সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা