
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট জাতীয় নির্বাচনের সময় যতই এগিয়ে আসে রাজনৈতিক দলগুলো ততই ব্যস্ত সময় পার করে। সেই ধারাবাহিতায়ই ব্যস্ততা বেড়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর। সূত্রমতে চলতি বছরের শেষের দিকে কিংবা পরের বছরের শুরুতেই অনুষ্টিত হওয়ার কথা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ যেমন দলকে গুছিয়ে নিচ্ছে তেমনি দল গোছানোর কাজে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিও। দলটি নির্বাচনিক ইস্যুসহ দল গোছানো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতিষ্ঠা এবং বর্তমান চলমান বিভিন্ন ইস্যুসহ বিভিন্ন দাবিতে একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে। সেদিক দিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কমিটিগুলোও পিছিয়ে নেই। তবে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে থাকা এই দলটির এই চরম দুঃসময়ে যখন সর্বোচ্চ ঐক্য থাকার কথা তখনই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অন্যতম নীতিনির্ধারক সংগঠন হিসেবে পরিচিত মহানগর বিএনপির কমিটিতে দেখা দিয়েছে প্রকাশ্য বিরোধ। যা দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কাছে খুবই অপ্রত্যাশিত এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে দৃষ্টিকটু বলে মনে করা হচ্ছে। কমিটির মধ্যে দুটি গ্রুপ স্পষ্ট হওয়ার পর এখন দোষারোপ এবং পাল্টা দোষারোপ করা এবং কমিটি থেকে কে কাকে বাদ দিয়ে দিবে সে বিষয়ে দলীয় সর্বোচ্চ ফোরামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করায়ই ব্যস্ত হতে দেখা যাচ্ছে। অথচ সদ্য অনুষ্ঠিত দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে আলাদা বাস্তবায়ন করার পরও উভয় গ্রুপেরই ব্যাপক সমর্থকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি পদত্যাগকারী ১৪ জনের পদত্যাগ গ্রহণের জন্য দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিদের্শ দিয়েছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। সেসব সদস্যকে মহানগর বিএনপির কমিটি থেকে বাদ দিয়ে সেসব পদ পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়। অন্যদিকে এই কমিটি বিরোধীরাও বলেন, এই এই কমিটির বিষয়ে তাদের অভিযোগ তারা তারেক রহমানের কাছে তুলে ধরতে চান বলে দলীয় উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা ও পরামর্শ করেছেন। তাই কে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবেন বা তারা সেই পদত্যাগপত্র কোথা থেকে পাবেন সেই প্রশ্ন তাদের। অথচ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে দলীয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে সকল ভেদাভেদ ভুলে এই দুই গ্রুপ যদি একসাথে কর্মসূচী পালন করে তাহলে হয়তো আরও শক্তিশালী কর্মসূচীর আয়োজন করা সম্ভব হতো। যা দলীয় ভাবমূর্তি অনেক উপরে তুলতে সাহায্য করতো। এই মুহুর্তে দলটির জন্য যা খুবই প্রয়োজন। দলীয় ও বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যমতে, মহানগর বিএনপির কমিটিতে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে পূর্ব বিরোধ থাকলেও গত ১৩ সেপ্টেম্বর এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহবায়ক এবং আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠনের পর পরই সেই বিরোধ অনেকটা আগুনের ফুলকির মতো জ্বলে উঠে। প্রথমে বিএনপির সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালামের পুত্র এবং আহবায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে অন্তর্ভূক্তি হওয়া নাসিক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা এই কমিটিতে না থাকার ঘোষণা দেন। এর পর পরই আরেক যুগ্ম আহবায়ক ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলও কমিটিতে না থাকার ঘোষণা দেন। সর্বশেষ এই আহবায়ক কমিটিতে মোট ১৫ জন না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়। তবে বর্তমান আহবায়ক কমিটির সূত্রমতে নতুন কমিটির ১৪ জনের নামের তালিকা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন বলে জানানো হয়। এরই মধ্যে কমিটির পক্ষ ও বিপক্ষের নেতাদের মধ্য থেকে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের তীর ছুড়তে দেখা যায়। এরই মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচীগলোও মহানগর বিএনপির দুইটি গ্রুপকে একই দিনে আলাদা জায়গায় আলাদা আলাদা সমর্থকদের নিয়ে পালন করতে দেখা যায়। তবে তারা কর্মসূচী আলাদা করলেও তাদের উভয় গ্রুপেই ব্যাপক লোকের সমাগম করতেও দেখা যায়। যা এতদিন ঐক্যবদ্ধভাবেও সংগঠনটি করতে পারেনি বলে রাজনৈতিক বোদ্ধাদের অভিমত। তবে সম্প্রতি পদত্যাগকারীদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে বলে খবরটি প্রকাশ করা হলে বিষয়টি মহানগর বিএনপির জন্য বিভেদ বাড়াবে এবং এই মুহুর্তে রাজনৈতিক কর্মসূচীতে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন দলীয় নেতা-কর্মীগণ। এই বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, ‘যারা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে তাদের আর কমিটিতেই নেওয়া হবে না। বিষয়টি স্পষ্ট এবং তারেক রহমানের নির্দেশ। অর্থাৎ তারা পদত্যাগপত্র দিয়েছে এইজন্য তাদের আর কমিটিতে নেওয়া হবে না, এটাতো পদত্যাগপত্র গ্রহণ করাই হলো।’ এই বিষয় জানতে চাইলে আব্দুস সবুর খান সেন্টু জানান, ‘যারা বলছেন আমাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে, তাদের কাছে সেই পদত্যাগপত্রের ড্রাফ্ট কপি আছে কি না জিজ্ঞেস কইরেন। আপনারা এই বিষয়ে কেন্দ্রে থেকে পাঠানো কোন লিখিত কপি দেখেছেন কি না? তাছাড়া কমিটি বিরোধীরা এই কমিটির কর্মকা- থেকে দূরে আছেন, কিন্তু দলীয় কর্মকা- থেকে দূরে নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘পদত্যাগের বিষয়ে আমরা কেন্দ্রের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করেছি। আমি আমার নেতা আব্দুস সালামের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, ওনি আমাদের নেতা। এখন ঐক্যের প্রয়োজন, কে পদত্যাগ করলো কে পদত্যাগ করলো না, সেটা বিষয় না, সেটা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাইতেছি না। আমরা ১০ ডিসেম্বরের কেন্দ্রীয় মহাসমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত আছি, সেই সমাবেশ সফল করার জন্য কিভাবে লোক জমায়েত বাড়ানো যায় এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে কিভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বাধিক লোক কিভাবে নেওয়া সম্ভব হয় সেই আন্দোল সংগ্রামে আমরা ব্যস্ত আছি। আমরা দল করি, তাই দলের প্রতি আমাদের মান-অভিমান থাকতেই পারে। এরই মধ্যে আমরা মহাসম্মেলনের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন প্রস্তুতিসভাসহ বিভিন্ন কর্মকা- চলমান রেখেছি। এরই মধ্যে আমাদের বন্দরে কর্মসূচী করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছি।’ এই বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, ‘তাদের পদত্যাগপত্রের কপি আমাদের কাছে আছে। তিনি বলেন, এখানে ব্যক্তি থেকে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। আমাদের এই দল কোন নেতার উপর নির্ভরশীল না। আমাদের দল কর্মী এবং সমর্থকদের উপর নির্ভরশীল। এই দলের প্রাণ শক্তি হলো কর্মী সমর্থকরা। সুতরাং এখানে আমি আছি কি নাই, এটার উপর দল নির্ভর করে না। এখানে আমাদের নেতা কর্মীগণ ঐক্যবদ্ধ আছে। এই দলটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া। তাই জিয়াউর রহমানের আদর্শ ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে কর্মী সমর্থকগণ ঐক্যবদ্ধ আছে। এখানে কয়েকজন নেতা যদি আদর্শচ্যুত হয়, তাতে করে দলের কোন সমস্যা হবে না। তাছাড়া পদত্যাগকারী নেতৃবৃন্দ যারা আছেন তাদেরকে তো আর কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়নি। তারা যদি ইচ্ছে করে কমিটিতে থাকতে না চায়, তাদেরও ভাল ভাল পদ দেওয়া হয়েছে। পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা পদত্যাগ করেছেন কি না এই বিষয়টি মিডিয়াই ভাল জানেন। মিডিয়াই বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করা হয়েছে।’ এ সময় পদত্যাগকারী নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এর আগেতো নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির দায়িত্বে তারা ছিলেন। তারা কয়টি মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন!’
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯