আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৬:১৮

দুই মেরুর বিরোধে বেকায়দায় যুবলীগ

ডান্ডিবার্তা | ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগের কমিটি গঠনে আটকে আছে প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান ও প্রভাবশালী মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর দ্বন্দ্বের কারণে। এ কারণে কেন্দ্রীয় কমিটিও ১৮ বছরের পরেও নতুন কমিটি দিতে পারছে না। আওয়ামী যুবলীগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব অঙ্গসংগঠন। এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি। ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসে চেয়ারম্যান পদে শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক পদে মাঈনুল হোসেন খান নিখিল নির্বাচিত হন। তাদের চার বছরের বেশি সময় হলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগের কমিটি দিতে পারেনি। নতুন নেতৃত্ব বা নতুন কমিটি দিতে না পারাকে নারায়ণগঞ্জ দুই মেরু দ্বন্দ্বকে ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জেলা ও মহানগর যুবলীগের কমিটি দেয়া চেষ্টা করা হবে তারা জানান। দলীয় তথ্যমতে, ২০০৫ সালে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগার মিলনায়তনে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে তৎকালীন পৌরসভার চেয়ারম্যান ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বোন জামাতা আব্দুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক পদে তৎকালীন বিদেশের মাটিতে থাকা সাবেক এমপি শামীম ওসমানের আস্থাভাজন অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল নির্বাচিত হন। তখন থেকে তারা দুইজনই এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এর মাঝে ২০১৬ সালের অক্টোবরে জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো: বাদল। এর থেকে ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের নভেম্বরে জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি হন জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির। তারা এ সময়েও জেলা যুবলীগের দুই শীর্ষ পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেননি। বরং জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি মেয়াদও শেষ করে নতুনভাবে আবারো দায়িত্ব নিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি কেন্দ্রীয় যুবলীগের কর্মসূচীতে আব্দুর কাদির ও ভিপি বাদলকে দেখা গেছে। তাদের এমন কান্ডে জেলা যুবলীগ অধিনস্থ থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে আছে। ওদিকে ২০০৪ সালে শহর যুবলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বে সৃষ্টি হয়েছিলো। কাউন্সিলরদের ভোটে শহর যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয় তৎকালীন বিদেশের মাটিতে থাকা সাবেক এমপি শামীম ওসমানের আস্থাভাজন গোলাম সারোয়ারের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন ভূইয়া সাজনু ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তৎকালীন পৌরসভার চেয়ারম্যান ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ছোট ভাই আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল। তাদের এই জুটি এখনো শক্ত ও মজবুত হলেও এখনো শহর যুবলীগকে মহানগর যুবলীগ রূপান্ত করেনি কেন্দ্রীয় কমিটি। ১৯ বছর শহর যুবলীগটি এখনো দুর্বল হয়ে রয়েছে সাংগঠনিকভাবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচীতে সভাপতি সাজনু ও সেক্রেটারী উজ্জল পাল্টাপাল্টি মিছিল হলেও তাদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব দেখা দেয়নি। দুই মেরু দুইজন হলেও তাদের মধ্যে পাল্টা বক্তব্যে কখনো মিডিয়া প্রকাশ পায়নি। এই কমিটি থাকতে তিনটি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হলেও মহানগর কমিটি ঘোষণা না করায় নেতাকর্মীরা হতাশ প্রকাশ করেছেন। এর ফলে নতুন নেতৃত্বে থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে যুবলীগ। অন্যদিকে বন্দর থানা যুবলীগের কোন হদিস নাই। এই থানা আহবায়ক কমিটি হলেও তাদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। জেলা ও মহানগর যুবলীগের একাধিক নেতা জানিয়েছে, ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর জেলা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটি দেয়া জন্য নেতাদের ডাকা হয়েছিলো। কিন্তু তাদের দুই মেরু ও আহবায়ক কমিটির যুক্তির কারণে আহবায়ক কমিটি থেকে পিছু নেয় কেন্দ্রীয় নেতারা। এর মধ্যে এমপি শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী পন্থী হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতারা রয়েছে গভীর চিন্তিত। তারা আরও জানান, যুবলীগের যে কোন কমিটি পূর্বে সেই কমিটি একটি খসড়া দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রেরণ করা হয়। এবং ওখানে ওই সব নেতাদের জীবন বৃক্তান্ত সহ বিভিন্ন পয়েন্ট তুলে ধরা হয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের সকল অঙ্গসংগঠনের পিছনে শামীম ওসমান ও ডা. আইভী আস্থাভাজনদের বেশি সুযোগ দেয়া হয়। ২০০৪ ও ২০০৫ সালে শহর ও জেলা যুবলীগের বর্তমান অবস্থা কারণে জেলা মহানগর ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতারা এখনো পদবিহীন হয়ে পড়ে আছে। ছাত্রলীগের এহসানুল হাসান ও জিএম আরাফাত, সাফায়েত আলম সানি ও প্রয়াত মিজানুর রহমান সুজন,  আজিজ-রাফেল ও রিয়াদ-বিন্দু ছাত্রলীগের কমিটি নেতারা এখনো যুবলীগের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে নাই। তাদের মধ্যে জিএম আরাফাত ইতোমধ্যে যুবলীগ বদলে মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও এহসানুল হক নিপু মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যকরি সদস্য হয়ে রয়েছেন। শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল জানিয়েছেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পর আমাদেরকে কেন্দ্রীয় নেতারা ডেকে নিয়েছিলো। সেখানে আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় প্রস্তাব তুলে ধরেছিলাম। তারা শুনে আমাদের বর্তমান কমিটিতে বহাল রাখার ইঙ্গিত দিয়ে ছিলো। কেন্দ্রীয় কমিটি নেতারা হয় তো নারায়ণগঞ্জ দুইটি গ্রুপে নেতা অধিনে যুবলীগ কমিটি পরিচালনা হয়। সে কারণে সম্ভব কমিটি দিতে পারছে না। শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূইয়া সাজনু জানান, শহর যুবলীগকে মহানগর যুবলীগ মৌখিকভাবে বলেছিলো কেন্দ্রীয় কমিটি। নাসিক নির্বাচনে পর আমাদের নতুন কমিটি দেয়া কথা ছিলো, কিন্তু এখনো দেয়নি। হয় তো বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে মহানগর যুবলীগের কমিটি দিতে পারে কেন্দ্রীয় কমিটি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা