আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৬:২৯

বিএনপি নেতারা ক্ষুব্ধ

ডান্ডিবার্তা | ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট শামীম ওসমানের বক্তব্যে বিএনপি নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিএনপি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম উর্ধ্বগতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারা ১০ দফা দাবি জানিয়েছে সেই দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই বিএনপি এখন আন্দোলনমুখি অবস্থায় রয়েছে। যার কারণে নানা সময় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাংসদ সদস্য শামীম ওসমান বার বারই তার বিভিন্ন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে তাদের নিয়ে বেফাঁস বক্তব্যে দিয়ে থাকেন। অপর দিকে গত শনিবার বিএনপির কেন্দ্র্র থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই সাথে একই দিকে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে আওয়ালীগের সকল ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই প্রেক্ষিতে গত শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশীপুর এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, সারাদেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য ও অগ্নি সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এই শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। বিএনপির ভাই কিংবা অন্য যারা আছে দলে সবাইকে বলবো মারামারি কাটাকাটি আমার দরকার নেই। আসেন সবাই মিলে কাজ করি। নারায়ণগঞ্জটাকে সুন্দর করি। নারায়ণগঞ্জের উন্নতি করি। আর যদি মারামারি করেন আমরাও তো মানুষ। আমাদের যদি একবার অতীতের কথা মনে পড়ে যায় যেভাবে আমাদের ঘরে ঘরে ঢুকে মারছেন বাড়িঘরে হামলা করছেন আবার এখন এত বাড়াবাড়ি করে কথা বলছেন একবার যদি মনে পড়ে যায় তাহলে পুলিশ-পালিশ বাদ দেন সব আমি জানি আমার কতটুকু ক্ষমতা। যদি একবার বলি ধর তাহলে আপনাদের চৌদ্ধ গোষ্ঠী কেউ থাকতে পারবে না এ দেশে। আমি জানি কিন্তু বয়স হয়েছে ধৈর্য বাড়ছে আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি বিচার করার মালিক আল্লাহ। তিনি আরো বলেন, আমার কোনো মাস্তান দরকার নেই। দোকানদার দোকান আর এখানে গিয়ে চাঁদাবাজি করবে আমার দরকার নাই। আমি আমার গাড়ির আগে মোটরসাইকেল চলতে দেই না। আমি জানি আমি যাবো মোটরসাইকেল দিয়ে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে যাবে পরে গিয়ে দোকানদারকে থাপ্পড় দিবে। কষ্ট করবো আমি থাপ্পড় দিয়ে সব শেষ করে দিবো। আর আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি শেখ হাসিনাই এই দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবে ইনশাআল্লাহ। আর এই ধরনের বক্তব্যকে রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে মানতে নারাজ বিএনপির নেতাকর্মীরা। যার কারণে শামীম ওসমানের এই ধরনের বেফাঁস বক্তব্যকে উদ্দেশ্য করে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান যুগের চিন্তাকে বলেন, উনার এ ধরনের বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশে উনাকে নিয়ে একটি বিশেষ বক্তব্য আছে যে তাকে নারায়ণগঞ্জের গডফাদার বলা হয়। আমার মনে হচ্ছে উনি উনার এই নামটাকে পছন্দ করে। আর আজকে উনি যে বলেছে ধর বললে দেশে খাকতে পারবে না। এটি একটি স্বৈরাচারি বক্তব্য। এটার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে উনি উনার নামটাকে বজায় রাখতে চায়। তিনি বলেন, বিরোধী দল বিরোধী দলের প্রোগ্রাম করবে এখানে যদি এই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়, ধর পাক্কর এটা কোন গণতান্ত্রিক বিষয় না। আর উনি আজকে যে বক্তব্যগুলো দিয়েছে একজন জনপ্রতিনিধির এই ধরনের বক্তব্য হতে পারে না। তারা চাচ্ছে বিরোধী দলকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য। তার মুখে এই ধরনের বক্তব্য সোভা পায় না। তার বক্তব্যের ধরন আরো শালিন হওয়া উচিত। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন বলেন, এটা উনার রাজনৈতিক ভাষা, রাজনৈতিক শিক্ষা, রাজনৈতিক  শিষ্টাচার। বিএনপিতো ধরাধরির রাজনীতি করে না। আমরা সাংগঠনিক রাজনীতি করি, জনগণের জন্য রাজনীতি করি। জনগণকে বিএনপির নেতাকর্মীরা কখনো ধর বলবে না। জনগণকে যারা ধরবে আমরা সেখান থেকে জনগণকে বাঁচিয়ে আনার চেষ্টা করবো। আমরা ১০দফা দাবি বাস্তবায়নে আমরা যে সমাবেশ করছি সেটিকি শান্তিপূর্ন সমাবেশ না। তিনি আরো বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় কালকে রাত্রে পুলিশ আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আর আপনারা অবগত আছেন আজকে আড়াইহাজারে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ হামলা করেছে ও সেখানে ২০ থেকে ২২জন গুলিবৃদ্ধ হয়েছে। অনেক নেতাকর্মীকে আবার গ্রেফতার ও করেছে আর এছাড়া ও মুড়াপাড়াতে যে সাধারণ লোকজন কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। তাদের চাকুরি থেকে বেড় করে দেওয়া হয়েছে। আর তারা বলে সরকার শান্তি সমাবেশ করছে শান্তি সমাবেশ আমরা করেছি। আমরা এখন রাজপথে আছি যে পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়িত না হবে। আমাদের দমানো যাবে না। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, শামীম ওসমান সাহেব আজকে যে বক্তব্য দিয়েছেন এটি কোন বক্তব্য হলো না। আমি বুঝি না উনি কি উদ্দেশ্য করে এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। যার কারণে এই দেশের মানুষের প্রত্যেকেরই নানা অধিকার রয়েছে। তাদের কাছে তাদের অধিকার ও দেশে গণতন্ত্র পূর্ণ বহালের জন্য আমরা বর্তমানে আন্দোলন সংগ্রামে রয়েছি। তাই যে যাই বলুক না কেন আমাদের দমানো এখন আর সম্ভব নয়। মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমএইচ মামুন বলেন, এই সরকারের এমপি, মন্ত্রীরা যেভাবে দাম্ভিকতার সাথে কথা বলতেছে। আর তারা যে ভাষা ব্যবহার করছে। আমি একটি কথা জানতে চাই তারা যদি এই ভাষায় কথা বলে থাকে তাহলে আগামী প্রজন্ম তাদের কাছ থেকে কি শিখবে। আর তারা আগামী প্রজন্মের জন্য কি রেখে যাচ্ছে। আর আগামী প্রজন্ম কিভাবে রাজনীতিতে আসবে কি দেখে উৎসাহ পাবে এটা আমার বুঝে আসে না। আমি এমপি মহোদয়ের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি যে রাজনৈতিক একটি ভাষা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বঝিয়ে রেখে উনার বক্তব্যে দেওয়া দরকার। কারণ ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী না। একদিন না একদিন এই সরকারের পতন হবে আর জনগণের সরকার প্রতষ্ঠিত হবে। জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, শামীম ওসমান আমাদের ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের এমপি উনি একজন সম্মানিত ব্যাক্তি। উনার মুখে রাজনীতি এই ধরনের ধর-পাক্করের ভাষা মানায় না। আর উনার বক্তব্যের মাধ্যমে উনি কী বুঝাতে চাচ্ছেন। উনি সন্ত্রাস বাহিনী লালন-পালন করে। নাকি সন্ত্রাসী সকল কর্মকান্ডের সাথে উনি ও লিপ্ত। সারা বাংলাদেশে যেভাবে ছাত্রদল, যুবদল ও বিভিন্ন নেতাকর্মীদের উপরে যে হামলা হচ্ছে তার কথার মাধ্যমে কি উনি বুঝাতে চাচ্ছেন এগুলো উনার কাজ। আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর রাজনীতির মাঠে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। ধর বললেই যদি আমরা পালিয়ে যেতাম। তাহলে আর আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রাখতাম না। বিভিন্নবার আমার উপরে হামলা-মামলা করে আমাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। আমরা তারেক রহমানের আদর্শের সৈনিক। আমরা তার নির্দেশে সকল কর্মসূচিতে আমাদের বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকি। আর উনি যে বক্তব্য দিয়েছেন আমি বলবো উনি যাতে উনার এই বক্তব্যেটাকে তুলে নেয়। উনি একজন সম্মানিত লোক। উনার মুখে এই বেফাঁস বক্তব্য মানায় না। কারণ উনি এখন জনপ্রতিনিধি উনি সবার। আর আমি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে শুধু বলবো উনি যদি আমাদের বিষয়ে এ ধরনের ধারনা করে থাকে তাহলে এটা সম্পূর্ন ভূল, তার ধারনা চেঞ্জ করা দরকার।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা