আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ১১:১৯

না’গঞ্জে ৩ বছরে গ্যাস বিস্ফোরণের ৮২জনের প্রাণহানী

ডান্ডিবার্তা | ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জে একের পর গ্যাস বিস্ফোরণে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বাড়ছে প্রাণহানি। পুলিশের তথ্য বলছে গেল তিন বছরে এ জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮২ জন। তবে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি সে তালিকায়। বেশির ভাগ ঘটনা তিতাসের পাইপ লিকেজ ও সিলিন্ডার থেকে হলেও তা নিরুপণের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। ঘটনার পর থানায় অপমৃত্যুর মামলা হলেও জোর দিয়ে তদন্ত না হওয়ায় দোষীদের শনাক্ত করা যায় না। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তল্লার মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণে ৩৭ জন নিহতের ঘটনা আজও ভুলতে পারেনি নিহতের স্বজনরা। গেল তিন বছরে প্রাণঘাতী গ্যাস বিস্ফোরণে এ জেলায় নারী শিশু সহ অন্তত ৮২ জন প্রাণ হারিয়েছে। দ্বগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও অনেকে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ১০৪টি গ্যাস বিস্ফোরণের অগ্নিকান্ড ঘটে। তার মধ্যে তিতাসের লাইনের ত্রুটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে ৬৯ টি। রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার, বয়লার ও এসি বিস্ফোরণ ঘটেছে ৩৪টি। এসব ঘটনায় নারীশিশু সহ প্রাণ হারিয়েছে ১৮ জন। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন। ২০২১ সালে ১১৪টি গ্যাস বিস্ফোরণের অগ্নিকান্ড ঘটে। তার মধ্যে তিতাসের লাইনের ত্রুটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে ৯৬টি। রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার, বয়লার ও এসি বিস্ফোরণ ঘটেছে ১৮টি। এসব ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন। দগ্ধ হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। ২০২০ সালে ১০৬টি গ্যাস বিস্ফোরণের অগ্নিকান্ড ঘটে। এর মধ্যে তিতাসের লাইনের ত্রুটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে ৭১টি। রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার, বয়লার ও এসি বিস্ফোরণ ঘটেছে ৪১টি। এসব ঘটনায় ৪৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ২৬ জনকে। এর মধ্যে তল্লায় মসজিদে এক বিস্ফোরণেই মৃত্যু হয় ৩৭ জনের। এসব তথ্য পুলিশ ফায়ার সার্ভিসের তালিকায় থাকলেও দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া অনেকের তথ্য তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, বাসা বাড়িতে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ তৎপরতা হলেও কয়েকদিনের মধ্যে এর অবসান ঘটে। গ্যাসের পাইপ লিকেজের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও সামাধান না হওয়ায় ঘটনা ঘটছেই চলছে। তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে স্থানীয়দের অসচেতনা ও তিতাস কর্তৃপক্ষের অবহেলা অনেক ঘটনার কারণ। এজন্য বসতিদের যেমনি সচেতন থাকতে হবে তেমনি সংশ্লিষ্টদের দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে। নয়তো বাসা বাড়িতে দরজা- জানালা বন্ধ থাকা অবস্থায় গ্যাস পাইপের লিকেজ থেকে রুমে গ্যাস জমাট হলেই বিপদ। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক ফখরু উদ্দিন বলেন, অনেক সময় চুলা বা সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক হলেও গ্রাহক তা জানে না। এইকটি ঘর ৪/৫ দিন বদ্ধ অবস্থায় থাকলে গ্যাস লিক হয়ে জমতে থাকে, এক পর্যায়ে সেটি ফ্লোরে পরে থাকে। যেটি ওই ঘরের মানুষ বুঝতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে দুর্ঘটনার খবর আসা পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির যথেষ্ট ক্ষতি হয়ে যায়। সবাইকে সতর্ক করার জন্যই বলবো, আপনারা সতর্ক থাকবেন আর খেয়াল রাখবেন যে আপনার গ্যাসের লাইন বা সিলিন্ডারে কোন লিক আছে কিনা। এর পরে আপনারা আপনাদের কাজ শুরু করবেন। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড এর উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশীদ বলেন, বিতরণ লাইনের দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু বাসার ভেতরের হাউজ লাইনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ঠ গ্রাহকের। এখন বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় বাসার হাউজ লাইন থেকে। অনেক সময় দেখা যায়, চুলা বন্ধ করে না অথবা চুলা অন করে রাখছে। পরে দেখা যায় চুলা জ্বালাতে গিয়ে এইসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে গ্রাহকের সচেতন থাকতে হবে। গ্যাস না থাকলে চুলা অন করে রাখা যাবে না এবং সব সময় সতর্ক রাখতে হবে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) চাইলাউ মারমা বলেন, আমরা অভিযোগ সাপেক্ষে বিভিন্ন মামলা নিয়ে থাকি। পরে আমরা তদন্ত করে যে বা যাদেরকে পাই তাদের নাম চার্জশিটে উল্লেখ করি, আদালতে দাখিল করি। গ্যাস বিস্ফোরণ রোধে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি নারায়ণগঞ্জবাসীর।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা