কমিটির অপেক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক দল

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বর্তমান কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে বেশ কিছুদিন পূর্বে। সেই সূত্র ধরে এবার নতুন কমিটি আনার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের প্রার্থী ও নব্য নেতারা চেষ্টা করছেন নতুন কমিটিতে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করতে। তারই ধারাবাহিকতায় সাবেক ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা জোর লবিং শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমান কমিটি সভাপতি আবুল কাউসার আশা ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে চলছে। দুই প্রান্তে রয়েছেন বিএনপির সাবেক এমপি আবুল কালামের পুত্র তথা কালাম বলয়, অন্যপ্রান্তে রয়েছে জাকির খানের অনুগামী তথা জাকির বলয়। মহানগর বিএনপির জন্য প্রভাবশালী দুইটি বলয়ের নেতৃত্ব বিরাজ করছে এই কমিটি জুড়ে। তবে নতুন কমিটিতে এবার উঠে আসতে চাচ্ছে নতুন নেতারা। একই পদে রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। বর্তমান মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি পুরোটাই রয়েছে বিদ্রোহী মহানগর বিএনপির সাথে। সাখাওয়াত ও টিপুকে উপেক্ষা করে বিদ্রোহী গ্রুপে যোগদান করে চাঙ্গা রেখেছে আন্দোলন সংগ্রাম। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় দলচ্যুত হবার ভয়ও নেই এই কমিটির। একই সাথে নতুন কমিটি গ্রহণ করে নেয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন তাঁরা। ফলে যেকোন সময় নতুন কমিটি গঠন হতে পারে এমন মানসিকতা নিয়েই চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্রোহী বলয়ের রাজনীতি। বিপরীতে নতুন কমিটির জন্য বেশ কয়েকজন নেতা জোরালো লবিং চালাচ্ছেন। আগ্রহী প্রার্থীরা মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটির সাথে মিলে নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সাখাওয়াত ও টিপুর সুপারিশ নিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে। সেখানকার শীর্ষ নেতাদের কাছে নিজেদের সিভি এবং যোগ্যতা তুলে ধরছেন। গুঞ্জন রয়েছে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি খসড়া আহবায়ক কমিটি জমা পড়েছে কেন্দ্রে। কোন কোন নেতারা দ্রুতই কমিটি দেই, দিচ্ছি বলে বার বার আশ্বাস দিয়ে রাখছেন আগ্রহীদের কাছে। জানা যায়, নতুন কমিটিতে স্থান পেতে আগ্রহী তালিকায় আছেন বেশ কয়েকজন। সভাপতি কিংবা আহবায়ক পদে আগ্রহী রয়েছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুজ্জামান ছক্কু প্রমুখ। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক বা সদস্য সচিব পদের জন্য আগ্রহী রয়েছেন মহানগর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি কামাল উদ্দিন জনিসহ বেশ কয়েকজন। প্রার্থীদের বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘চলতি মাস বা আগামী মাসের মধ্যেই কমিটি প্রদান করা হবে এমন আশ্বাস আসছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে। মহানগর বিএনপি নেতারাও এর জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁরাও চাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবক দল তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলে দিনশেষে লাভবান হবে তাঁরাই। সেজন্য নিয়মিত বিরতিতে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।’ স্বেচ্ছাসেবল দলের কমিটি নিয়ে কতটা আগ্রহী মহানগর বিএনপি তা বোঝাতে দলের এক যুগ্ম আহবায়ক বলেন, ‘সাখাওয়াত ইসলাম রানা তার নিজের একটি প্রাইভেটকার সাখাওয়াত হোসেন খানের কাছে দিয়েছেন। স্থায়ীভাবে না দিলেও সাংগঠনিক যাবতীয় কাজে যেন ব্যবহার করতে পারেন সেই সুযোগ করে দিয়েছেন। বিনিময়ে যেকোন উপায়ে যাচ্ছেন মহানগর স্বেচ্ছাসবক দলের আহবায়ক বা সভাপতি হতে।’ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান কমিটি প্রদান করা হবে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে। নির্বাচনী বছর হিসেবে পরিচিত ২০২৩ সালে যেই কমিটিই দেয়া হোক না কেন তা হতে হবে মান সম্মত এবং সক্রিয়। অন্যথায় নিজেদের পায়েই কুড়াল মারবে নেতাকর্মীরা। যেকোন মূল্যে বিএনপিকে সক্রিয় রাখতে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি হতে হবে শক্তিশালী। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলে এর ব্যতিক্রম চিত্র পরিলক্ষিত হলে তা দলের জন্যেই ক্ষতি ডেকে আনবে।