আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ১১:১৯

অস্তিত্ব সংকটে না’গঞ্জের রাজনীতি!

ডান্ডিবার্তা | ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট কাগজে কলমে চলছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি। দীর্ঘদীন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামীলীগ ও জাতিয় পার্টির দায়িত্বশীল পদ পদবী দখলে থাকা অনেক নেতৃবৃন্দই দলের নাম ব্যবহার করে অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে আখের গুছানোর ফলে দল কিংবা দলের তৃনমূলের এখন আর কোন খবর রাখছেন না তারা। মাঝে মাঝে দলের চাপে পড়ে নাম সর্বস্ব সক্রিয় থাকার ভান করে দলীয় কর্মসূচী পালন করে আসছেন সুবিধাবাদীরা। এর ফলে এক সময়ে আওয়ামীলীগের ঘাটিঁ হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জে দলের অস্তিত্ব অনেকটাই হুমকির মুখে। আর এর প্রভাব ঘনিয়ে আসা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে পড়ার শংকা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহল। সূত্রমতে, টানা তৃতীয় বার ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামীলীগ ও জাপা। ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৯০ এর পর থেকে যারাই ক্ষমতায় এসেছে সব ক’টি দলের সাথে ছিল। বাংলাদেশের রাজনীতির সর্ববৃহৎ দল তিনটি। আওয়ামীলীগ স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী। বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষকের প্রতিষ্ঠিত দল। প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি। কাগজে কলমে শক্তিশালী তিনটি দল। তবে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের ভাষ্য ভিন্ন। আওয়ামীলীগ ও বিএনপি আভ্যন্তরিন কোন্দল, দলীয় নেতায় নেতায় বিভাজনসহ নানা কারণে দল দু’টির সাংগঠনিক অবস্থা নারায়ণগঞ্জে ক্রমশ দূর্বল হয়ে পরছে বলে মনে করেন দল দু’টির তৃনমুলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নারায়ণগঞ্জের চার বারের নির্বাচিত প্রয়াত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাসিম ওসমান থাকাকালীন বেশ শক্ত অবস্থানে ছিলো জেলায় জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান। বর্তমানে দলটির দুই জন সংসদ সদস্য থাকলেও পূর্বের ন্যায় সাংগঠনিক তৎপরতা চোখে না পড়লেও মাঠের প্রধান বিরোধীদল বিএনপির পরের অবস্থানেই আলোচনায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জাতীয় পার্টির রাজনীতি। জাপা’র সাংসদ সেলিম ওসমান এবং লিয়াকত হোসেন খোঁকার সাংগঠনিক তৎপরতায় কোন্দলহীন জাপার রাজনীতি আওয়ামীলীগের চেয়েও অনেকটাই শক্তিশালী বলেও জেলা জাপার নেতৃবৃন্দের অভিমত। এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগে বিভাজন এবং মামলা ও রাজপথে নিষ্প্রভ বিএনপি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বৃহৎ এই দল দু’টির বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা খুবই খারাপ অভিমত দল দু’টির তৃনমূল নেতাকর্মীদের। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জানান, গত তিন বারের টানা ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ। এই নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের জন্ম। কিন্তু টানা দতিন বার আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক অবস্থা খুবই দূর্বল। জেলার ৫টি আসনে তিনটিতে আওয়ামীলীগ ও দুইটিতে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। এছাড়া জেলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ ও সদর-বন্দর আসন এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকা। সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর সাথে শামীম ওসমানের দ্বন্ধ নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি অন্যতম একটি বিভাজনের উদাহরন। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের ঐতিহ্যবাহী দুই পরিবারের জন্য নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের রাজনীতি দীর্ঘ দিন ধরে উত্তর ও দক্ষিন মেরুর দুই ভাগে বিভক্ত। এরই রেশ ধরে জেলা ও মহানগরে বিভক্তি। এছাড়া মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন এবং সাধারন সম্পাদক এড. খোকন সাহার নেতৃত্বাধীনন মহানগর আওয়ামীলীগ তাদের কার্যক্রম পালন করে উত্তর ও দক্ষিন মেরুর বলয়ের বাইরে। গত বছরের শেষের দিকে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্বের সভাপতি আঃ হাই এবং আবু হাসনাত বাদলকে সাধারন সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়। তবে নির্বাচনের আগেই জেলা আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন। এদিকে মেয়াদর্ত্তীন অবস্থার মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছে মহানগর আওয়ামীলীগ। জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের পর পরই মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলন করার কথা থাকলেও আবহওয়ার অনুকুল পরিস্থিতির কারনে মহানগর সম্মেলন আর অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে, দলীয় কোন্দল আর বিভাজনের কারনেই আবহাওয়ার অনুকুল পরিস্থিতির বরাত দিয়ে মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে বলেও তৃনমূল আওয়ামীলীগের সূত্রে জানা গেছে। তবে, দ্বাদশ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে যোগ্য নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হবে বলেও বিভিন্নসূত্রে জানা গেছে। আওয়ামীলীগের তৃনমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের আভ্যন্তরীন কোন্দলে জন্মস্থানেই আওয়ামীলীগ কোনঠাসা। নেতা আছে নেই কর্মী বাহিনী। ঘুরে ফিরে পরিচিত কয়েকটামুখ। এছাড়া দীর্ঘদিন সদর-বন্দর আসনে আওয়ামীলীগের কোন এমপি না থাকায় এখান আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল। অন্যদিকে, বিলুপ্তি হওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি কোন্দলের পাহাড়ে অবস্থান করছেন। দলের দুঃসময় চললে কেউ কাউকে মানতে নারাজ। নেতায় নেতায় অনৈক্য। দলীয় কর্মসূচিতে লোকবল সংকট। রাজপথের থেকে বেশি ফেইসবুকে এক্টিভ বেশি নেতাকর্মীরা। ব্যানার নিয়ে লড়াই। পুলিশরে সাথে অনুনয় বিনয় করে দুই তিন মিনিটে কর্মসূচি পালন সব কিছু মিলিয়ে এই আছে এই নেই বিএনপি। বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, বর্তমানে বেশির ভাগ নেতাই ওয়ান ম্যান শো রাজনীতি করছেন। কেউ কেউ ফেইসবুকে ঝড় তুলছেন। আবার কোন কোন নেতা সরকারি দলের সাথে আঁতাত করে রাজনীতি করছেন। আবার অনেকে রাজপথে নামছেন। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। পুলিশের সামান্য বাধাঁয় থমকে যায় তাদের কর্মসূচি। বিএনপির তৃনমূলের নেতাকর্মীদের মতে, নেতাদের সকলকে মান অভিমান ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। অন্যথায় এই জেলায় বিএনপি বলে কোন দল ছিল এ কথাও মানুষ বলবে না। অন্যদিকে, জেলায় জাতীয় পার্টির দুজন জন সংসদ সদস্য থাকলেও সাংগঠনিক ভাবে তেমন একটা আলোচনায় না থাকলেও ক্ষমতাসীনদল আওয়ামীলীগের মত দলীয় কোন্দল নেই। জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, অলোচনার মত দলীয় কার্যক্রম নেই। পার্টি থেকে দুইজন এমপি থাকার পরও সাংগঠনিক অবস্থা আগের মত নেই। প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমান মারা যাওয়ার পর জাপা’র অস্তিত্ব নড়বড়ে অবস্থায় চলে গেলেও জাপা’র বর্তমান সাংসদ সেলিম ওসমান এবং লিয়াকত হোসেন খোকা জাপা’র রাজনীতিকে আবারো সেই পুরানো জৌলুসে ফিরে এসেছে। আর আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির রাজনীতি চলছে দলীয় কোন্দলের মধ্য দিয়ে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা