আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৯:৩৬

ক্ষমতায় থেকেও ব্যর্থ আ’লীগ!

ডান্ডিবার্তা | ০২ মার্চ, ২০২৩ | ১২:৪৭ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট টানা তিন মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থেকেও নারায়ণগঞ্জে পিছিয়ে রয়েছে আওয়ামী লীগ। বরাবরই তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির চেয়ে পিছিয়ে থাকেন। বিরোধী দলকে হুমকি আর হুঙ্কার দিয়ে তাদের কর্মসূচি শেষ। তবে তাঁরা ব্যক্তিগত শক্তি প্রদর্শনে ঠিকই আলোচনায় থাকেন। প্রায় সময় তাঁরা ব্যক্তিগত শক্তি প্রদর্শন করে থাকেন আর সেখানে তাদের ব্যাপক শোডাউন পরিলক্ষিত হয়। দলীয় সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি খাতসহ প্রতিটি স্তরে নজিরবিহীন নৈরাজ্য-লুটপাট, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে, বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠায় বিএনপির ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এদিন বিকেলে শহরের খানপুরে ৩০০ শয্যা হাসপাতালের সামনের সড়ক থেকে বের হওয়া ওই পদযাত্রা চাষাঢ়া ঘুরে লিংক রোড হয়ে রেললাইন এলাকাতে গিয়ে শেষ হয়। আর এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ শহর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে উঠে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নেতাকর্মীরা একের পর এক মিছিল নিয়ে খানপুর হাসপাতালের সামনে জড়ো হন। এভাবে একের পর এক মিছিলে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি ব্যাপক লোক সমাগম হয়। একই সময়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বিএনপির জামায়াতের সন্ত্রাস নৈরাজ্য ও সহিংসতার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের দুই নং রেলগেইট এলাকার আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেই সমাবেশে নেতাকর্মীদের তেমন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। অনেকটা এরকম যেন কর্মসূচি পালন করার দরকার তাই তাঁরা পালন করেছেন। এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বেশ চাপের মুখে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা। কয়েকদিনের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জের ৭টি থানায় তাদের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা দায়ের করা হয়। এসকল মামলায় আসামী করা হয় প্রায় সহ¯্রাধিক নেতাকর্মীদের। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয় প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করা হয়। তাদের পরিবারের সদস্যদেরও হয়রানি করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবির বাড়িতে গিয়ে রবিকে না পেয়ে তার ছেলেকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এভাবে টানা কয়েকদিন ধরেই বিএনপির নেতাকর্মীদের নানামুখী চাপের মুখে রাখা হয়। ঢাকামুখী সবগুলো পয়েন্টে বসানো হয়েছিল পুলিশের চেকপোস্ট। সাইনবোর্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ ও চাষাঢ়াতে চেকপোস্টে রীতিমত সকল গণপরিবহন ও প্রাইভেটকার তল্লাশি করা হয়েছিল। অনেক স্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়াকড়িতে দেখা দেয় আতঙ্ক। রাতভর বিএনপি নেতাদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি হয়েছে। সামগ্রিক দিক দিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের সামনে। তারপরেও ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের আটকিয়ে রাখা যায়নি। প্রতিবারের মতোই তাঁরা ঢাকার রাজপথে বিশাল শোডাউন করেছেন। প্রত্যেক নেতাই আলাদা আলাদাভাবে বিশাল শোডাউন করেছেন। তার আগে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে শোভাযাত্রা করতে গিয়ে শাওন নামে এক যুবদল কর্মী নিহত হয়েছিলেন। যে মৃত্যু সারাদেশব্যাপী আলোচনা সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু এই মৃত্যুও নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বরং তাঁরা আগের চেয়ে আরও বেশি সক্রিয়ভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। কিন্তু সেই তুলনায় নারাণগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবসময় পিছিয়ে থাকেন। কোনো কর্মসূচিতেই তাদের উল্লেখযোগ্য শোডাউন পরিলক্ষিত হয় না। তবে ব্যক্তিগত শোডাউনের ক্ষেত্রে তাঁরা আবার ব্যতিক্রম। এখানে ঠিকই তাঁরা নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়ে থাকেন। এদিকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট শহরের দুই নং রেলগেইট এলাকায় সমাবেশ করেছিলেন। আর এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে তিনি পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়ে প্রস্তুতি সভা করেন। সেই সাথে ২৭ আগস্ট তিনি বিপুল পরিমাণ জনসমাগমের মধ্য দিয়ে বিশাল সমাবেশ করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের এই সমাবেশকে ব্যক্তিগত সমাবেশ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। সমাবেশে শামীম ওসমানের বক্তব্য ছিল, বাংলাদেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনেই নারায়ণগঞ্জ প্রথমবার ঘণ্টা বাজিয়েছে। একাত্তরের ঘণ্টা নারায়ণগঞ্জ থেকে বেজেছে। ঊনসত্তরের ঘণ্টা বেজেছে। ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধুর ঘণ্টাও নারায়ণগঞ্জ থেকে বেজেছে। প্রয়োজনে আবারও নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘণ্টা বাজানো হবে। কথায় কথায় বলে রাজপথ দখল করবে। কিন্তু শামীম ওসমানের এই সমাবেশের পর নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক সমাবেশই করেছেন। বিএনপির প্রত্যেকটি সমাবেশই নেতাকর্মীদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে উঠে। এসকল সমাবেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও বক্তব্য রেখে যাচ্ছেন। সেই সাথে শামীম ওসমানের বক্তব্যের কাউন্টারও দিয়ে গিয়েছিলেন। শামীম ওসমানের এই ঘণ্টা বাজানোর ঘোষণা দেয়ার পরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সমাবেশ মিছিল মিটিং অব্যাহত রেখে গেছেন। শামীম ওসমানের সমাবেশের পর গত ২০ অক্টোবর বিকেলটা যেন নারায়ণগঞ্জ শহর যেন বিএনপির দখলে চলে গিয়েছিল। এদিন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা চারভাগে বিভক্ত হয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন। নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এদিন সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অংশ চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন। সেই সাথে বিকেল পর্যন্ত তাঁরা জড়ো হয়ে সমাবেশ করেন। আর এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ উপস্থিত হয়েছিলেন। সেই সাথে তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরকারকে উদ্দেশ্য করে অনেক কথাই বলেছিলেন। পাশাপাশি মহানগর বিএনপির নেতারাও শামীম ওসমান ও তাদের সরকারকে উদ্দেশ্য করে নানা বক্তব্য রেখেছিলেন। এদিকে একই সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহরের প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেই সাথে এই সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিশাল লোক নিয়ে সমবেত হন। তাদের সমবেত নেতাকর্মী সমর্থকদের উপস্থিতিতে পূর্ণ হয়ে উঠে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গন। আর এখানেও নেতারা বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তার সরকারকে উদ্দেশ্য করে নানা বিদ্রুপমূলক বক্তব্য রাখেন। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আরেকটি অংশের উদ্যোগে শহরের মন্ডলপাড়া এলাকায় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আর তাদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরের মন্ডলপাড়া এলাকায় লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। সেই সাথে তাঁরা সমাবেশ শেষে শহরে মিছিল বের করলে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে নারায়ণগঞ্জ শহর। একই সাথে শহরের ফায়ার সার্ভিস গেইটের সামনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের উদ্যোগে মিছিলের আয়োজন করা হয়। আর তাদের মিছিলকে কেন্দ্র করে সেখানকার এলাকা নেতাকর্মীদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে উঠেছিল। আর এভাবেই একের পর কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়ে যাচ্ছেন। সকল প্রতিকূলতা এড়িয়েও তাঁরা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের চেয়ে শক্তি প্রদর্শনে এগিয়েই থাকছেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা