আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৯:১৭

বন্দরে চাঙ্গা হচ্ছে আ’লীগের তৃনমূল

ডান্ডিবার্তা | ০৪ মার্চ, ২০২৩ | ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে সরকারবিরোধীদের আন্দোলন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে জোরালো হয়েছে। এতে করে চাঙা হয়ে উঠেছে রাজপথে সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি। এই আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে ডান-বামপন্থী মিলে একাধিক দলও যুক্ত হয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন সামলানো তাদের জন্য তেমন কঠিন কোনো কাজ নয়। আওয়ামী লীগের জন্য এই মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ কূটনৈতিক চাপ সামলানো। ক্ষমতা ধরে রাখতে আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিএনপির নেতৃত্বে যত সংগঠনই ঐক্যবদ্ধ হোক না কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হালে পানি পাবে না। আন্দোলন নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার কৌশল আওয়ামী লীগের জানা আছে। বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি এর উদাহরণ। আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনেও তারা ব্যর্থ হবে। বঙ্গবন্ধুর কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪র্থ বারের মত প্রধানমন্ত্রী হবে ইনশাআল্লাহ। ক্ষমতাসীন দলের বিদেশ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলের আন্দোলনে সরকার পতন হবে না; বরং তারা বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন বিদেশিদের দিক থেকে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চেয়ে প্রায়ই বিভিন্ন বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছে। এর সারমর্ম হলো, সরকারের ওপর একধরনের চাপ তৈরি করা। হঠাৎ কয়েকটি দেশ একত্রে বিবৃতি দিলে কিছুটা হলেও চাপ বোধ করে আওয়ামী লীগ ও সরকার। ‘রাতের ভোট’ ইস্যুতে কথা বলে জাপানও পরোক্ষভাবে সরকারকে খানিকটা চাপ দিতে চেষ্টা করেছে, যা একেবারেই অনাকাক্সিক্ষত ছিল সরকারের জন্য। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বক্তব্য-অবস্থান একটি পক্ষের দিকে। এখান থেকে বেরিয়ে আসাই এখন ক্ষমতাসীন দলের জন্য চ্যালেঞ্জ মনে করছেন নেতারা। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতি (বন্দর উপজেলা) ও চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম এ রশিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শিষ্টাচারবিবর্জিত কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ চায় না। আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্রনীতি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপিকেও বলব, দেশের স্বার্থ আগে দেখবেন। ক্ষমতার আশায় দেশের সম্মান নষ্ট করবেন না।’ সরকার ও দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করেন আওয়ামী লীগের এমন এক নেতা বলেন, বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র সুযোগ পেলেই কায়দা করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দাবি করে, দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্য অন্য রকম সংকেত মনে হচ্ছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে থাকা বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বে আন্দোলনে নামা দলগুলোর নেতারা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন। বিষয়টি আমলে নিয়েই বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলা করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার পথে হাঁটছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নেতা আরও বলেন, সরকারের ও দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কয়েকটি দেশের সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে সরাসরি এবং ই-মেইল যোগাযোগও করা হয়েছে। এ জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশ সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পথে হাঁটছে না এখন। ফলে আওয়ামী লীগ ও সরকার সেসব দেশের ওপর আস্থা রাখতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিরপেক্ষ করতে সরকার ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায় থেকে কাজ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে নমনীয় অবস্থান দেখিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দায়িত্বপূর্ণ কর্তা-ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা ও অনানুষ্ঠানিক চিঠি চালাচালিও অব্যাহত আছে। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করেন এমন একাধিক নেতা পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন ও সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদের বাসায় পিটার হাসকে ডিনারে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। সেখানে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও ছিলেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করেন আওয়ামী লীগের এমন একজন অনুসারী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পাওয়া না পাওয়ার হিসাব থেকে এই সরকারের ওপর ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাদের অনেকের অবস্থান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো বিচক্ষণ নেতা না থাকলে অনেক সুবিধা আদায় করা সম্ভব হতো। বিরোধিতার এটিও একটি দিক। তিনি বলেন, এই বিরোধিতার পরেও সরকারের জন্য এক ধরনের সুযোগও আছে। সেটা হলো সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকলেও বিদেশিদের কাছে এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের বিকল্পও অন্য কেউ নেই। সেদিক থেকে ঝুট-ঝামেলা থাকলেও সরকার অনেকটা নিরাপদ অবস্থায় রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী একাধিক সূত্র জানায়, তাদের কৌশলেও এখন পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিদেশিদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনা হচ্ছে। সম্ভব হলে সমাধানের পথে যাচ্ছে। সম্ভব না হলে নমনীয় থেকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে রাখার কৌশল নেওয়া হয়েছে; বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান নিরপেক্ষ করে রাখার লক্ষ্যে যা করার তার সবই করা হবে জানিয়ে সূত্রগুলো জানায়, মূল লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো পক্ষভুক্ত হতে না দেওয়া। দেশটির নিরপেক্ষ ভূমিকাই আওয়ামী লীগের জন্য উত্তম। আওয়ামী লীগ সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতা করতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া খ্যাতিমান অভিবাসী বাংলাদেশিদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নিরপেক্ষ অবস্থানে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের ওই সূত্রগুলো জানায়, বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রকে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে বিএনপি। সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে লবিংয়ের মাধ্যমে বিএনপি দেশটির কাছ থেকে কিছুটা সুবিধা নিতে পেরেছে। বিএনপি মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্ষমতার চেয়ারে বসিয়ে দেবে। তাই বিভিন্ন উপায়ে বিএনপির নেতারা অপপ্রচার-কুৎসা রটিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে দেশটিকে উসকে দিচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। এটা পরোক্ষভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া বোঝায়। আওয়ামী লীগের কেউ কেউ দাবি করছেন, এ ধরনের অবস্থান নেওয়ার জন্য পিটার হাস ‘মায়ের ডাক’ নামের একটি সংগঠনের একজনের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসায় যান। সেখানে ‘মায়ের কান্না’ নামের আরেকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা যান তাকে স্মারকলিপি দিতে। এ নিয়ে সেখানে হট্টগোল হয়েছে। এরপর পিটার হাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানান। আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করেন, বিএনপির এক নিখোঁজ নেতার বাসায় পিটার হাসের যাওয়া ছিল উদ্দেশ্যমূলক। তাকে বিএনপি ও দলটির সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা ‘কনভিন্স’ করেছেন। রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য এবং সেখানে তার উপস্থিতি দুটোই বিএনপির ষড়যন্ত্রের আয়োজন বলে দাবি আওয়ামী লীগের ওই মহলটির। এর আগে ২০১৮ সালে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় নিমন্ত্রণে গিয়ে হামলার শিকার হন যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। ওই ঘটনার পর মামলা হয়। মামলাটি এখনো বিচারাধীন। পিটার হাসের উদ্বেগ প্রকাশ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘পিটার হাসের এই মন্তব্য বিএনপির নানা কৌশলের সুফল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুধু বলতে চাই, কোনো রাষ্ট্রদূতই নিরাপত্তাহীনতায় নেই। নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব।’ ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফও বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ নতজানু রাজনীতি করে না। সবার সঙ্গে কূটনৈতিক সুসম্পর্কে বিশ্বাসী আমরা। এই কূটনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখার মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। সরকার প্রধান বা দলের নীতিনির্ধারকেরা কূটনীতিক বিষয়টি দেখছেন আর তৃনমূল চাঙ্গা করতে কাজ করছে সংগঠন। বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতিকে গতিশীল চাঙ্গা একটি সংগঠন হিসেবে পরিচিত হওয়ার জন্য কদজ করছে। বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের, সেচ্ছাসেবকলীগ কমিটি করা হয়েছে। বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের পর ইতিমধ্যে ১ টি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আওয়ামীলীগের, সেচ্ছাসেবকলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কমিটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই করা হবে বলে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম এ রশিদ। থানা যুবলীগ নেতা এসআই জুয়েল বলেন, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ রশিদ আমাদের অভিভাবক হয়ে বন্দরে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনকে সাজিয়ে রেখেছেন। আমরা আগামী যেক চ্যালেঞ্চ মোকাবেলায় প্রস্তুত আছি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা