কমিটি হারাচ্ছে সাখাওয়া-টিপু!

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির খসড়া কমিটি তৈরি করা হয়েছে। হয়তো আগামী দুই একদিনের মধ্যেই এই কমিটি ঘোষণা করা হবে। জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা, বন্দর থানা ও বন্দর উপজেলা এই তিনটি কমিটি ঘোষণা করা হবে। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে পাল্টা কমিটির খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপিতে আহবায়ক হিসেবে ফারুক হোসেন এবং সদস্য সচিব হিসেবে আওলাদ হোসেন, বন্দর থানা বিএনপির আহবায়ক হিসেবে সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু ও তাদের সাথে কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদও আলোচনায় রয়েছেন। সেই সাথে বন্দর উপজেলা আহবায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন ও সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা। তাদেরকে কেন্দ্র করেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অধীনে থাকা সদর থানা, বন্দর থানা ও বন্দর উপজেলা কমিটির তিনটি আলোচনায় রয়েছে। তবে কমিটি ঘোষণার আগ পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কারা এসকল কমিটি আসবেন। এর আগে এসকল কমিটিকে কেন্দ্র করে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে শহরের চাষাঢ়া এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে সাখাওয়াত টিপুর বিপরীতে থাকা নেতাকর্মীরা মিলিত হয়ে সভা করেন। সভায় সকলেই নিজেদের মতামত ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আ. সবুর খান সেন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী নুরুদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ আতাউর রহমান মুকুল, যুগ্ম আহ্বায়ক এমএইচ মামুন, সদস্য ফারুক হোসেন, আওলাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, মনোয়ার হোসেন শোখন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, আমিনুর ইসলাম মিঠু, অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম শিপলু, বিএনপি নেতা ইসমাইল, পারভেজ মল্লিক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। সভা শেষে উপস্থিত সকলের পক্ষে অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন বলেন, অচিরেই আমরা নারায়ণগঞ্জ মহানগরের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা, বন্দর থানা ও বন্দর উপজেলা এই তিনটি কমিটি ঘোষণা করা হবে। দুই একদিনের মধ্যেই সেই কমিটি হয়ে যাবে। আমরা আলোচনা করেছি সকলেই মতামত ব্যক্ত করেছেন এবং সকলেরই মতামত পজিটিভ হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তিনটি কমিটি উপহার দেয়া হবে। আমরা সকলেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। যারা রাজনীতি করে যারা আন্দোলন সংগ্রাম করে তাদের নিয়েই কমিটি হবে। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো.শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পরেছেন। একটি অংশের নেতাকর্মীরা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। কমিটি গঠনের নানা বিতর্কিত ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। এরই মধ্যে গত ২২ ফেব্রুয়ারি নুর মোহাম্মদ পনেছকে আহ্বায়ক ও নাজমুল হক রানাকে সদস্য সচিব করে বন্দর থানা বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির ঘোষণা দিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপু। বন্দর থানা বিএনপির এই কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন আসাদুজ্জামান বাদল, নাছির উল্লাহ্ টিপু, ইকবাল, কামরুল হাসান সাউদ চুন্নু, মো. সেলিম, সোহেল খান বাবু ও মাসুদ রানা। সেই সাথে তাদেরকে আগামী ৯০দিনের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে থানা সম্মেলনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই কমিটি ঘোষণার আগে আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর মহানগর বিএনপির অন্যান্য নেতাদের সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করেননি। আহবায়ক আর সদস্য সচিব ছাড়া আর কেউই এই কমিটি সম্পর্কে অবগত নয় বলে নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। যা নিয়ে মহানগর বিএনপির নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই কমিটি দেয়াকে কেন্দ্র করে অনেকেই সাখাওয়াত ও টিপুর বলয় ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সাথে আরও কয়েকজন তাদের বলয় ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একই সাথে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাসুদ রানাকে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট আনোয়ার প্রধানকে সদস্য সচিব করে ৫৭ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ সদর থানা কমিটির কমিটির অনুমোদন দেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন- বরকত উল্লাহ, হাবিবুর রহমান মিঠু, নজরুল ইসলাম সরদার, আলমগীর খান চঞ্চল, নাজমুল হক, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, লুৎফর রহমান মন্টু, কাজী জিয়াউর হাসান নাঈম, অ্যাডভোকেট নুরুল কাদির সোহাগ, শেখ সেলিম, মো. সাহেবউল্লাহ রোমান, আল আমিন প্রধান, মো. মহসিন উল্লাহ, মহসিন হোসেন ও মাহমুদুল হোসেন খান লিংকন। কিন্তু এই কমিটি ঘোষণার পরপরই বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ আবার পদত্যাগ করারও ঘোষণা দিয়েছেন।