বেকায়দায় সাখাওয়াত টিপুর কমিটি

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দিন দিন ছোট হয়ে আসছে সাখাওয়াত-টিপুর নেতৃত্বাধীন মহানগর বিএনপি। আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি থেকে একে একে সকল নেতারাই তাদের বলয় ছেড়ে দিয়ে অন্য বলয়ে ভিড়ছেন। মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মধ্যে মাত্র ২০ জন নেতা তাদের সাথে এখন রয়েছেন। আরো অনেকে চলে যাবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। আর বাকি ২১ জনই তাদের বিপরীতে রয়েছেন। সেই সাথে এই সংখ্যাটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলীয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে যেন আর বিএনপির নেতারা মেনে নিতে পারছেন না। দলীয় সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিয়ে প্রথমদিকে তাদের নেতৃত্বে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিলেও এবার আর পারছেন না তাঁরা। তাদের ব্যবহারে মহানগর বিএনপির নেতারা ত্যক্তবিরক্ত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে তাদের ব্যবহারে মহানগর বিএনপির সকল নেতাই অসন্তুষ্ট। সর্বশেষ সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুর বলয় ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্ববায়ক আনোয়ার হোসেন অনু। তিনি আর তাদের সাথে কোনো কর্মসূচি পালন করবেন না। সেই সাথে মহানগর বিএনপির সদস্য ডা. মজিবর রহমানও তাদের সাথে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। কারণ তাঁরা সাখাওয়াত ও টিপুর একতরফা আচরণ মেনে নিতে পারছেন না। তার আগে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এমএইচ মামুন সাখাওয়াত ও টিপুর বলয় ছেড়ে অন্য বলয়ে ভিড় করেছেন। সেই সাথে এমএইচ মামুন তাদের সকল কর্মকান্ড সম্পর্কে বিএনপির নেতাকর্মীদেরও অবগত করছেন। দলীয় সূত্র বলছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পরেছেন। একটি অংশের নেতাকর্মীরা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। কমিটি গঠনের নানা বিতর্কিত ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি থেকে ১৫ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। পদত্যাগকারী নেতারা হলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা আব্দুস সবুর খান সেন্টু, হাজী নুরুদ্দিন, বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল ও সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা। সেই সাথে সদস্য পদে থাকা পদত্যাগকারী নেতারা হলেন আওলাদ হোসেন, হান্নান সরকার অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, মনোয়ার হোসেন শোখন, আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, শহীদুল ইসলাম রিপন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, আমিনুর ইসলাম মিঠু, ফারুক হোসেন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, মো. ফারুক হোসেন। এসকল পদত্যাগকারী নেতারা আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। সেই সাথে এসকল পদত্যাগকারী নেতাদের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে একটি বলয় গড়ে উঠেছে। দলীয় প্রত্যেক কর্মসূচিতেই তাঁরা আলাদাভাবে অংশগ্রহণ করে আসছেন। সেই সাথে তাদের বলয়টি দিন দিন বড় হয়ে আসছে। জানা যায়, কমিটি ঘোষণার পর যুগ্ম আহবায়ক পদে থাকা অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন প্রথম দিকে দূরে থাকলেও পরে তিনিও পদত্যাগকারী নেতাদের সাথে মিশে কর্মসূচি পালন করছেন। প্রায় প্রত্যেক কর্মসূচিতেই অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন মহানগর বিএনপির আলাদা ব্যানারে গিয়ে উপস্থিত হয়ে থাকেন। তিনি সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুর আচরণে বিরক্ত। বিশেষ করে টিপু যেন কাউকেই সহ্য করতে পারেন না। এরপর একে একে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন অনু, যুগ্ম আহ্বায়ক এমএইচ মামুন ও সদস্য ডা. মজিবর রহমান সাখাওয়াত-টিপুর বলয় ছাড়েন। সেই সাথে মহানগর বিএনপির সদস্য শওকত হোসেন সকু, সদস্য হাসান আহম্মদ, সদস্য মাহাবুব উল্লাহ তপন নীরব ভূমিকায় রয়েছে। তাঁরা কোনো কর্মসূচিতেই অংশগ্রহণ করেন না। তবে তাঁরা সখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সাথে নেই এটা নিশ্চিত। কারণ তাঁরাও সাখাওয়াত-টিপুকে মেনে নিতে পারছেন না বলেই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকছেন না বলে গুঞ্জন শুনা যায়। সেই সাথে তাদের একক সিদ্ধান্তও মেনে নিতে পারছেন না।