কাদের প্রভাবে অবৈধ ইজিবাইক?
হাবিবুর রহমান বাদল কথিত সাংবাদিকদের পদতলে নিষ্পেষিত হতে হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিকদের। নামধারী কিছু পত্রিকার কার্ড ব্যবহার করে কতিপয় কথিত সাংবাদিকরা চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ব্ল্যাকমেইলিংসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে বদনাম হচ্ছে পেশাদার সাংবাদিকদের। দীর্ঘদীন ধরে কথিত সাংবাদিকদের প্রত্যক্ষ মদদে শহরব্যাপি ব্যাপক হারে অটো রিকশার প্লেট বানিজ্যসহ কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছে আন্ডারগ্রাউন্ড স্থানীয় পত্রিকার কথিত কয়েকজন সাংবাদিক। এদিকে, কথিত সাংবাদিকদের একের পর এক অপকর্মের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হলেও রহস্যজনক কারনে নিশ্চুপ রয়েছে দায়িত্বশীল কতৃপক্ষ। বিপদগামী কথিত সাংবাদিকদের অপকর্মের লাগাম টেনে না ধরা হলে দিনের পর দিন এর ভয়াবহতা ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করবে বলেও আশংকা করছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। তাই নারায়ণগঞ্জে কর্মরত পোশাদার সাংবাদিকদের সুনাম রক্ষার্থে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় পত্রিকার মালিকগণ ঐক্যবদ্ধভাবে কার্য্যকরী ভূমিকা পালন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি। সূত্রমতে, দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ নগরীতে অবৈধ ভাবে চলাচলরত অটো রিকাশা বানিজ্য করে যাচ্ছে কতিপয় লোকজন। কতিপয় পুলিশ সদস্য ও বিশেষ পেশার নামধারী এক চক্র গড়ে উঠেছে এ শহরে। অভিযোগ উঠেছে ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই আবুল বাশারের সাথে মাসোয়ারা ভিক্তিক চুক্তি করে অর্ধশত অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছে কথিত এক ক্যামেরাম্যান সাব্বির। তার বিরুদ্ধে রিকশা চালকদের ভয় দেখানো ও মারধরের অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, একটি বেসরকারি টেলিভিশনের নারায়গঞ্জের জেলা প্রতিনিধির ব্যক্তিগত ক্যামেরাম্যান হিসেবে কাজ করে সাব্বির। এর বাইরে তিনি নিজের পরিচয় ব্যবহার করেন ফালগুনি টিভির জেলা প্রতিনিধি হিসেবে। অথচ পঞ্চম শ্রেণীর গন্ডিও পার করেনি সাব্বির। আর ফালগুনি নামে দেশে কোন বেসরকারি টেলিভিশনও নেই। তাছাড়া স্থানীয় প্রথম সাঁড়ির একটি দৈনিক পত্রিকার রির্পোটার পরিচয়ও দিয়ে বেড়ায় এই যুবক। ট্রাফিক পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, টিএসআই আবুল বাসার ব্যাটারিচালিত অটো, রিকশা ও মিশুক নগরীতে অবৈধভাবে চালাতে কার্ড বাণিজ্য শুরু করেছেন বেশ আগে থেকে। আর কাজের জন্য প্রথমে সোর্স হিসেবে বেছে নেন সাব্বিরকে। এরপর থেকে তাদের সক্ষতা গড়ে উঠে। পরবর্তীতে এটিএসআই বাশারের সাথে মাসোয়ারা ভিক্তিতে চুক্তি করে সাব্বির। চুক্তির নিয়ম হলো সাব্বিরের বানানো ফালগুনি টিভির কার্ড দেখলে আটককৃত অটো রিকশা ও মিশুক গাড়ী ছেড়ে দিতে হবে। তাদের চুক্তিতে ৫০০ টির বেশির তিন চাকার যান রয়েছে। এ জন্য তারা প্রতিদিন সন্ধ্যার পর চাষাড়া ডাম্পিংয়ে বসে মিটিং করে তাদের এ কারবার আরও বাড়াতে। তাছাড়া সাব্বিরকে দিয়ে ডাম্পপিংয়ের ভেতরে রিকশা চালকদের মারধর করেন ট্রাফিক কর্মকর্তা বাসার। সাব্বিরের হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চান না রিকশা চালকরা। তবে একাধিক রিকশা চালক জানান, সাব্বির জোড় করে তার ভিজিডিং কার্ড দেয় চালকদের। বিনিময়ে মাসে নেন ১৫০০ টাকা করে। সাথে এক মাসের অগ্রিম। তার কার্ড নিতে না চাইলে গাড়ি ধরিয়ে দেয় ট্রাফিক পুলিশের কাছে। আর টাকা দিতে দেরি হলে চর থাপ্পর মারা নয়। তবে তার ভিজিডিং কার্ড দেখালে অটো ছেড়ে দেয় ট্রাফিক পুলিশের লোকজন। কারণ সবাই জানে সাব্বির হলো বাসার স্যারের লোক। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে এটিএসই বাশার অভিযোগটি অস্বিকার করেন। এরপর তিনি সাব্বিরকে ঢেকে আনলে সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ সময় সেখানে দেখা যায় এটিএসই বাশার ও সাব্বির নামের ওই যুবক একটি ঘরের ভেতরে যাচ্ছে। সেখানেই নাকি তাদের টাকার ভাগ বাটোয়ারা হয়। বিষয়টি নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ প্রশাসনের টি,আই (অ্যাডমিন) করিম শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শহরের এক তৃতীয় অংশ অবৈধ অটোতে স্টিকার লাগানো। আমরা প্রতিদিন এসব গাড়ি আটক করি, ব্যবস্থা নেই। তবে বাসারের সাথে সাব্বির নামে কারো চুক্তির বিষয়ে আমার জানা নেই। যদি এমনটা হয় তাহলে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ নিউজ পেপারর্স ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও ডান্ডিবার্তার সম্পাদক হাবিবুর রহমান বাদল বলেন, নামধারী কিছু সাংবাদিক পুলিশের সহায়তায় এ ধরনের অবৈধ অটোরিকশা গুলো চাঁদাবাজির মাধ্যমে চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আমি মনে করি, স্থানীয় জেলা পুলিশ প্রশাসন এ সকল নামধারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা করি। কথিত এসকল সাংবাদিকদের অব্যাহত অপকর্মের কারনে পেশাদার সাংবাদিকরা প্রায়শই বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই আমার প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ থাকবে, পেশাদার সাংবাদিকদের সুনাম রক্ষার্থে নামধারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা রাখি। নারায়ণগঞ্জ নিউজ পেপারর্স ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক রাজু আহাম্মেদ বলেন, অটোর সমস্যাটা শুধু নারায়ণগঞ্জ শহরেই নয় এটা পুরো জেলাতেই রয়েছে। কথিত সাংবাদিকরা চাঁদাবাজি যদি করে থাকে আর আমরা স্থানীয় পত্রিকার মালিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যদি চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয় তাহলে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে? এমন প্রশ্ন তিনি ছুড়ে দেন! তিনি আরো বলেন, অটো রিকশা চাঁদাবাজির সাথে কতিপয় রাজনীতিবীদ এবং পুলিশ সদস্য থেকে শুরু করে অনেকেই জড়িত রয়েছে। আর স্থায়ীভাবে অটো চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হলে নাসিকের হস্তক্ষেপ জরুরী। কারন, অটো রিকশা হচ্ছে অবৈধ আর অবৈধ অটোরিকশাগুলোকে যদি নাসিক কতৃপক্ষ তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেন তাহলে অটো চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।